মেঘফুল - পর্ব ০৬ - মিশু মনি - ধারাবাহিক গল্প


ভায়োলেট একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে জাহ্নবীর দিকে। অপ্রস্তুত ভঙ্গীতে জাহ্নবী পায়চারি করছে। কিছু একটা বলবে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে বলবে সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে না। ভায়োলেট বিষয়টাকে সহজ করার জন্য নিজে থেকেই বলল, 'আপু, কী হয়েছে?'

জাহ্নবী মুখ কাচুমাচু করে বলল, 'তেমন কিছু না। তুই মোবাইল দেখেছিস?'
'না তো। কেন? কী হয়েছে?'
'শোন, তুই আর লাইব্রেরিতে যাবি না।'
'আমি নিজেও ভেবেছি অনেকদিন আর যাবো না। কেন বলোতো আপু?'
জাহ্নবী মনেমনে স্বস্তিবোধ করল। ওর এখনো সংকোচ লাগছে কথাটা বলতে। ভায়োলেটের উত্তর শুনে হঠাৎ কথার মোড় ঘুরিয়ে ফেলল জাহ্নবী। বলল, ' কাল রাতে একজন কল দিয়েছিল। যার সাথে তোর লাইব্রেরিতে দেখা হয়েছে।'
'মানে! সে আমার নাম্বার কোথ থেকে পেলো?' অবাক হয়ে জানতে চাইলো ভায়োলেট। 

জাহ্নবী উত্তর দিলো, 'ছেলেটাকে তুই নাকি কী বলেছিস? কম্পিউটারে সবার তথ্য ছিল। সেখান থেকে জোগাড় করে ফোন দিয়েছে।'
'অদ্ভুত ব্যাপার। ওখানকার সবাই আমাকে চেনে। ছেলেটা বলতেই তারা আমার নাম্বার দিয়ে দিলো? ইচ্ছে করছে গিয়ে সবগুলোকে ঝাড়ি দিয়ে আসি।'

জাহ্নবী খানিকটা চমকালেও সঙ্গে সঙ্গে বলল, 'না না। তোর আর ওখানে যাওয়ার দরকার নেই। ছেলেটা সরি বলতে ফোন করেছে। কিন্তু ওর কথাবার্তার ধরণ আমার ভালো লাগে নি। মনে হচ্ছে লোকটা তোকে বিরক্ত করবে।'
'আমারও ওনার চাহনি ভালো লাগে নি। আমার নাম্বার সংগ্রহ করে ফেলেছে, ছি ছি।'

জাহ্নবী বলল, 'হুম। ছেলেটার মতলব ভালো না। তোকে বিরক্ত করতে বারবার ফোন করবে। আমার মোটেও ভালো লাগে নি কথা বলে।'
'আচ্ছা আপু। আমি ওর নাম্বারটা ব্লক করে দিচ্ছি। তুমি এটা নিয়েই টেনশন করছো? আহারে আমার আপুরে, এসব ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে এত ভাবতে হবেনা।'
জাহ্নবী চুপ করে রইল। ভায়োলেট জড়িয়ে ধরে রইল ওকে৷ খানিকটা সময় এভাবেই কেটে যায়। সামার দরজা খুলে উঁকি দিয়ে বলল, 'এখানে কী হচ্ছে? আমার হিংসে হচ্ছে কিন্তু।'

জাহ্নবী হেসে বলল, 'আয়, তুইও এসে আমাকে ধর। এমনভাবে বলছিস যেন আমরা হাতিঘোড়া খাচ্ছি?'
সামার হাসতে হাসতে বলল, 'হাতিঘোড়া খায় নাকি মানুষ? তোমরা কী নিয়ে শলাপরামর্শ করছো আমাকেও বলো?'

ভায়োলেট বলল, 'খুবই সিরিয়াস বিষয়। আপুকে বুদ্ধি দিচ্ছিলাম দ্রুত একটা চাকরি জোগাড় করে এই বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য।'
'কেন?'
ভায়োলেট বিছানার ওপর শুয়ে পড়ল। এক হাত মাথায় হেলান দিয়ে বলল, 'আমি জানি কীভাবে সুখী হতে হয়।'
ভায়োলেট অন্যমনস্ক হয়ে পড়ল। জাহ্নবী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল ওর দিকে। সামারও ভায়োলেটের পাশে শুয়ে পড়ল। বলল, 'কীভাবে সুখী হতে হয়? বল না আমাকে?'
'নিজেকে ভাবতে হবে অনেক সুখী। সব দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। তারপর চোখ বন্ধ করে একটা সুন্দর কল্পনায় হারিয়ে যেতে হবে। যেমন জীবন তুমি চাও, সেরকম জীবন কল্পনা করবে। অনেক্ষণ পর চোখ খুলে বাস্তবে ফিরে আসবে। এরপর দেখবে বাস্তব তোমার স্বপ্নের জীবনের মতো নয়। কিন্তু কেন নয়? কারণ স্বপ্নের জীবনটা পাওয়ার জন্য আমাকে অভাবনীয় কিছু কাজ করতে হবে, যেটা আমি করিনি। তাই আমি এই জীবনে আছি। তখন তুমি বুঝতে পারবে, আসলেই তোমার কী করা উচিৎ। যেটা করলে তুমি ওই স্বপ্নের মতো জীবন পাবে।'

ভায়োলেট সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলে গেল। জাহ্নবী মুগ্ধ হয়ে ওর কথা শুনছিল। সামারের পলক পড়ছে না। ভায়োলেট মাঝেমাঝে কী সব কঠিন কঠিন কথা বলে, ওর মাথাতেই ঢোকে না। 
সামার বলল, 'আমি তো অনেক সুখী। আমার তো মনেহয় যেমন জীবন আমি চেয়েছিলাম, আমি ঠিক তেমন একটা জীবনই পেয়েছি।'

ভায়োলেট এই কথার উত্তরে কোনো জবাব দিলো না। সে এখনো সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। জাহ্নবী লক্ষ করছে ভায়োলেটকে। 

সামার বলল, 'আমি এরচেয়ে সুখী হতে চাই না। একটা ভালো চাকরি করবো, তারপর পাখির মতো স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবো। যখন যা মন চায়, তাই করবো। যা পরতে ইচ্ছে করবে, পরবো। যা খেতে ইচ্ছে করবে, খাবো। উড়ে বেড়াবো, আজ এখানে, কাল ওখানে। আজ এর বাসায় পার্টি হবে, কাল ওর বাসায় পার্টি হবে। তারপর দু চার বছর এভাবে এনজয় করার পর আমার মতো স্বাধীনচেতা একটা ছেলেকে বিয়ে করবো। দুজন মিলে রাত বিরেতে চা খেতে বের হবো। মুভি দেখতে সিনেমাহলে যাবো, বন্ধুবান্ধব নিয়ে হৈ চৈ করবো। ব্যস, বিন্দাস লাইফ। এরচেয়ে সুন্দর জীবন কে কখন কল্পনা করেছে? হা হা হা।'

জাহ্নবীও হেসে উঠলো। ভায়োলেটের মুখে মুচকি হাসি। সামার জাহ্নবীকে বলল, 'এই আপু, তুমি কেমন লাইফ চাও?'

চমকে উঠলো জাহ্নবী। একটা গভীর নিশ্বাস নিয়ে উত্তর দিলো, 'আমি এমন একটা জীবন চাই, যেখানে...' আর কিছু বলতে পারল না জাহ্নবী। কারণ সে কেমন জীবন চায়, জানে না। সে শুধু জানে, তার জীবন থেকে যেন দুঃখ আর একাকীত্ব চিরতরে ঘুচে যায়। যেন কেউ একজন তার জীবনে আসে, তাকে ভালবেসে অনেক সুখী রাখে। তার জীবনে খুব বেশী চাওয়া পাওয়া নেই। একটা মানুষই তো। তারা এমন একটা বাড়িতে থাকবে, যেই বাড়ির দোতলায় খুব সুন্দর একটা খোলা বারান্দা থাকবে। বারান্দায় একটা ইজি চেয়ার, যার হাতলে রাখা থাকবে এক কাপ চা। পাঞ্জাবী পরা প্রিয় মানুষটাকে নিয়ে জাহ্নবী ওই বারান্দায় বসে চা খাবে। ঝুম বৃষ্টি নামলে দুহাত মেলে বৃষ্টিতে ভিজবে। জীবনে এতটুকুই তো ওর স্বপ্ন। এর বাইরে আর কোনো স্বপ্ন আছে কীনা, জানেনা জাহ্নবী। 

সামার বলল, 'কী ভাবছো আপু? কেমন জীবন চাও?'
'জানিনা।' একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল জাহ্নবী। 
সামার বলল, 'ধুর। এজন্যই তোমার ওপর রাগ লাগে জানো? বেঁচে আছো কেন তুমি? কীভাবে বাঁচতে চাও সেটাই যদি না জানো তাহলে মরে যাওয়াই ভালো না?'
ভায়োলেট সামারের হাত চেপে ধরল। চোখ ভিজে উঠলো জাহ্নবীর। বলল, 'মরেই তো গেছি। আমি বেঁচে আছি কে বললো তোদের।' 

অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো জাহ্নবী। সামার জাহ্নবীর হাত ধরে বলল, 'আমার লক্ষী আপু, রাগ কোরো না প্লিজ। আমি তোমাকে হার্ট করতে চাইনি। সরি আপু। আসলে আমি জাস্ট বলতে চাইছি, তুমি একটু জেগে ওঠো। এভাবে আর কতদিন?' 

জাহ্নবী চোখ মুছল। ভায়োলেট বলল, 'আপু, আমি তোমাকে বলেছিলাম একটা চাকরি নাও তারপর এই বাসা থেকে বের হও। তুমি কি ভাবছো বিয়ে করতে বলেছি?'
জাহ্নবী ভায়োলেটের দিকে তাকাল। ভায়োলেট বলল, 'শোনো আপু। আমি ও মেজোপু তোমার ভালোর জন্যই এগুলো বলছি। মন খারাপ কোরো না। আমরা বুঝতে শেখার পর থেকেই দেখছি তুমি একা সব কাজ করো। কখনো আমাদেরকেও কাজে হাত লাগাতে দাওনি। এমনভাবে সবকিছু সামলাও যেন এই সংসারটা তোমার। মা এজন্যই তোমাকে পছন্দ করে না। তুমি কী সেটা জানো?' 

জাহ্নবী মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, 'হ্যাঁ। আমি জানি। মা আমাকে একটু পছন্দ করে না।'
সামার বলল, 'মা আসলে রেগে গেছে। আমরা পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াবো বলে কখনো আমাদের ওপর বিয়ের চাপ দেয়নি। কিন্তু তাই বলে এই না যে, তুমি বিয়ে করবে না অথচ মা সেটা সহ্য করতে পারবে।'
জাহ্নবী বলল, 'আমি কী করবো বল? আমার বিয়ে না হলে আমার কি করার আছে?' 
'অনেক কিছুই করার ছিল আপু। তুমি কখনো কোনো ছেলেকে তোমার কাছে ঘেঁষতে দাও নি। কখনো কোনো বিয়ের প্রস্তাব এলে সোজা না করে দিয়েছ, তোমার নাকি বিয়েশাদির ব্যাপারে আগ্রহ নেই। এখন যখন বয়স অনেক হয়ে গেছে, নিঃসঙ্গ জীবন ভালো লাগছে না, নিশ্চয় তুমিও চাও তোমার বিয়ে হোক?'

ভায়োলেট রেগে বলল, 'তুই বড্ড বেশি কথা বলিস মেজোপু। একটা মানুষের জীবনে বিয়েটাই সবকিছু না। বিয়ে করে আজীবন গাধার মতো খাটবে, নিজের শখ কিংবা ইচ্ছে কোনোটাই পূরণ করবে না, সেটাও তো জীবনে আসল সুখ নয়। আপু যেটাতে সুখী হবে, সেটাই করুক না।'
সামার নিজেও পালটা জবাব দিলো, 'আপু কী চায় সেটা তো নিজেই জানেনা। বিয়ে ভালো না লাগলে লাইফে অন্যকিছু থাকুক ভাললাগার মতো। আপু তো সারাক্ষণ রান্নাঘর, রুটি, ভাত, তরকারি, থালাবাসন নিয়েই পড়ে থাকে। সে অনেক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিল। একটা ভালো ক্যারিয়ার বেছে নিয়ে নিজের খেয়াল খুশিমত জীবনযাপন করতে পারতো। যা যা করতে ইচ্ছে করতো, সেটাই করে নিজের মতো লাইফ লিড করতে পারতো। সে বিয়েও করলো না, কোনো ক্যারিয়ারও বেছে নিলো না। এভাবে ঘরে বসে বসে ডিপ্রেসড থাকার কোনো মানে হয়?' 

জাহ্নবী মাথা নিচু করে আছে। ভীষণ মন খারাপ হয়েছে ওর। ছোট বোনদের সঙ্গে কখনো হাসি আড্ডায় যোগ দেয়নি সে। কারণ কীভাবে আড্ডা দিতে হয়, জাহ্নবী সেটাই জানেনা। সে সবসময় এ বাড়িতে থেকেছে ঠিকই, কিন্তু সবার থেকে দূরে, সবার থেকে আলাদা হয়ে। আজ যখন তিনবোন মিলে একসঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে, তখন তার দোষ ত্রুটি গুলোই যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হচ্ছে। 

ভায়োলেট জাহ্নবীকে জড়িয়ে ধরে বলল, 'আপু তুমি কষ্ট পেও না। মেজোপুর মাথা গরম, উলটা পালটা কথা বলে। মেজোপু, তুমি না বাইরে যাবে? এখন যাও তো। আমি আপুর সঙ্গে কথা বলি।'
জাহ্নবী বলল, 'না, তোরা থাক। আমি যাই, রান্না বসাতে হবে।'

ভায়োলেট জাহ্নবীর হাত টেনে ধরে বলল, 'কোথাও যাবে না তুমি। এখানে বসো। আমরা তোমার সাথে বড় হওয়ার সুযোগ পাইনি ঠিকই কিন্তু তোমাকে অনেক ভালবাসি আপু।'
জাহ্নবী কেঁদে ফেলল। মুখ তুলে তাকাতে পারল না সে। ভায়োলেট বলল, 'আপু, আমাদের জীবনটা ছোট এটা সবাই বলে। কিন্তু তুমি নিশ্চয়ই জানো, এই জীবনটা আসলে ছোট না। ৩৬৫ দিনের একেকটা বছর মোটেও কম নয়। আমরা চাইলেই জীবনকে খেয়াল খুশিমতো ছেড়ে দিতে পারিনা আপু। আমাদের এটাকে গুছিয়ে নেয়া উচিত।'

জাহ্নবীর চোখ মুছে দিয়ে সামার বলল, 'সে এখন মোটিভেশন দিবে। আমি যাই, বের হবো। থাকো আপু, রাগ করে থেকো না।' 
জাহ্নবীর গালে একটা চুমু দিয়ে সামার বেরিয়ে গেল। ভায়োলেট জাহ্নবীর মুখখানা ধরে বলল, 'আপু। দেখি আমার দিকে তাকাও। মন খারাপ করছো কেন? হাসো তো দেখি। আমার সুন্দর আপু।'

জাহ্নবী মাথা তুলে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করল। ভায়োলেট বলল, 'তুমি তোমার জগতটাকে অনেক ছোট করে ফেলেছ আপু। এই ছোট্ট গণ্ডি থেকে বের হও। একটা চাকরি হলে আলাদা বাসা নিয়ে থাকো। জীবনকে দেখো, একটা অন্যরকম জীবন উপভোগ করো। মা'র চিল্লাচিল্লি নেই, সবার জন্য রান্না করার প্রেশার নেই, থালাবাসন ধোয়ার পেরেশানি নেই। শুধু খাবে, ঘুমাবে, বই পড়বে, অফিস করবে আর নিজের মতো জীবনকে উপভোগ করবে। বিশ্বাস করো, তুমি এই হতাশার জীবন থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। আমার কথাটা একবার শুনে দেখো।'

জাহ্নবী ভায়োলেটের হাত মুঠো করে ধরে বলল, 'হুম। দোয়া কর যেন একটা চাকরি পেয়ে যাই।'
'অবশ্যই। তুমি অনেক মেধাবী। প্রস্তুতি নাও শুধু।'
'হ্যাঁ, আজ থেকে প্রস্তুতি নিবো। আমি যাই, কাজগুলো শেষ করে আসি।'
ভায়োলেট বলল, 'উহু, তুমি এখানেই থাকো। কাজের জন্য আমি আছি, মা আছে, বুয়া আসবে। তোমার এত মাথাব্যথা নিতে হবে না। তুমি পড়াশোনা করো আর সুন্দর একটা চাকরি পেয়ে আমাকে ভালো একটা রেস্টুরেন্টে খাওয়াও '

জাহ্নবীর বুক ফেটে কান্না আসতে চাইছে। ভায়োলেটকে জড়িয়ে ধরল জাহ্নবী। ওর হঠাৎ মুক্তির স্বাদ অনুভূত হচ্ছে। যেন এত বছর ধরে নিজেই নিজের তৈরিকৃত খাঁচায় আবদ্ধ ছিল সে। আজ যেন তার ঘুম ভেঙেছে। উত্তেজনায় কাঁপছে পুরো শরীর। 

ভায়োলেট যখন ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হলো, জাহ্নবী ভায়োলেটের ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বলল, ওই নাম্বারটা ব্লক করে দিস। আমি সরি যে, তোর কলটা আমি রিসিভ করেছিলাম। 

ভায়োলেট মুচকি হেসে বলল, 'কোনো সমস্যা নেই আপু। আমি নাম্বারটা এক্ষুণি ব্লক করে দিবো।'

ভায়োলেট ঘর হতে বের হওয়ামাত্রই দেখল পারভীন খাবার টেবিলে গম্ভীরমুখে বসে আছেন। ভায়োলেট বলল, 'মা, কী হয়েছে?'
'কিছু না। জাহ্নবীকে বলতো মাছটা কেটে ধুয়ে নিতে। ইলিশ মাছ আনছে। তোর বাপকে জিজ্ঞেস কর ইলিশ পোলাও খাবে নাকি সরষে ইলিশ করতে বলে।'

ভায়োলেট বলল, 'কোনোটাই না। সাদা ভাত দিয়ে মচমচে মাছ ভাজি, আর বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছের তরকারি। তুমি খুব সুন্দর করে এটা রান্না করতে। অনেকদিন খাইনা। আজকে তুমি রান্না করো মা।'

পারভীন নিরুত্তর মুখে ভায়োলেটের দিকে তাকিয়ে রইলেন। এমন সময় ঘর থেকে বের হল জাহ্নবী। ভায়োলেটের কাছে এসে দাঁড়াতেই ভায়োলেট বলল, 'আপু, তোমাকে কী বলেছি?'
জাহ্নবী মৃদু স্বরে বলল, 'আমি রান্নাঘরে যাবো না। তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে এসেছি।'
'কী কথা বলো?'

জাহ্নবী গলার স্বর আরও নীচু করে বলল, 'তুই কেমন জীবন চাস এটা শোনা হয় নি।'
ভায়োলেট মুচকি হেসে বলল, 'পরে বলবো।'
.
.
.
চলবে.........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp