মেঘফুল - পর্ব ২৭ - মিশু মনি - ধারাবাহিক গল্প


ভায়োলেট জাহ্নবীর কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, "প্রেম বড় আজব জিনিস রে আপু। যখন আসে, সমস্ত সত্তা কাঁপিয়ে দিয়ে আসে। আর যখন চলে যায়, সবকিছু ভেঙে চুরমার করে দিয়ে চলে যায়।"

ভায়োলেটের কথা শেষ হতেই জাহ্নবী ওকে জড়িয়ে ধরলো। অনেক ব্যকুল হয়ে জানতে চাইলো, 'তোরা আলাদা হয়ে গেলি কিভাবে?'
'সেটা আমি আজও বুঝতে পারিনি। হয়তো কখনো পারবো ও না।'

ভায়োলেটের দীর্ঘশ্বাসের শব্দে ভয় পেয়ে গেল জাহ্নবী। যে সম্পর্কের সূচনা এত সুন্দর ছিল, তার পরিণতি কতটা ভয়ংকরভাবে সমাপ্ত হয়েছে, ভেবেই শিউরে উঠল সে। কিন্তু ভায়োলেটকে আর কোনো প্রশ্ন করার সাহস না পেয়ে বিছানা থেকে উঠে বারান্দার পাশে এসে বসল জাহ্নবী। প্রকৃতির অদ্ভুত সব নিয়ম ওকে সবসময়ই আঘাত দেয়। মিনিট দশেক স্থবির হয়ে বসে থাকার পর জাহ্নবী বিছানায় এসে দেখল, বালিশ বুকে জড়িয়ে নিষ্পাপ ভঙ্গীতে ঘুমিয়ে পড়েছে ভায়োলেট। মেয়েটাকে আর জাগাতে ইচ্ছে করল না। ওর পাশে নিঃশব্দে শুয়ে পড়ল সে। অনেক রাত অবধি এপাশ ওপাশ করেও চোখে ঘুম নামাতে পারলো না। ভোরবেলা ক্লান্ত চোখে অবসন্ন ঘুম নেমে এলো। কৃতজ্ঞতা অভিমানী ঘুমের প্রতি।

আজ জাহ্নবীর জীবনে অন্যতম আনন্দের দিন। চাকরির প্রথম মাসের বেতন হাতে পেয়েছে সে। টাকাটা ভায়োলেটকে দিতে হবে। সেদিনের পর ভায়োলেটের সঙ্গে আর কথাই হল না। মেয়েটাকে বাসায় আসতে বলতে হবে। রুশোর বাকি গল্পটা শুনতে হবে।

জাহ্নবী ভায়োলেটকে ফোন করে চায়ের দোকানে চলে আসতে বলল। 'when tea meet toast' এর ভেতরে গিয়ে বসল জাহ্নবী। ভেতরে দুজন ছেলেমেয়ে বসে চা খাচ্ছে। পুরো দোকান ফাঁকা। পান্নাবাহারের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আর এখানে আসেনি জাহ্নবী। আজকে চা খেতেই আসা। পান্নাবাহারের সঙ্গে দেখা হওয়াটা নিতান্তই ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছে সে৷ যদিও প্রায়ই বেলকনিতে দাঁড়ালে অজান্তেই চোখ চলে যায় এই দোকানের দিকে। আজ অবচেতন মনে সে বারবার পান্নাবাহারকেই খুঁজছিল। সচেতন মনে নিজেকে বলল, 'আমি কাউকে খুঁজছি না। আমি চা খেয়েই চলে যাবো।'

ভায়োলেট ব্যস্ত ভঙ্গীতে এসে জাহ্নবীকে জড়িয়ে ধরে বলল, 'আপু! অনেক্ষণ অপেক্ষা করলে না?'
'আরে ধুর। তুই ঠাণ্ডা হয়ে বস। আমি দুইটা চা অর্ডার দিয়েছি।'
'আমার একটা ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাচ্ছি খাওয়া দরকার।'

জাহ্নবী ওয়েটারকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো এখানে লাচ্চি পাওয়া যাবে কী না। ওয়েটার উত্তর দিলো, 'এটা শুধুই চায়ের দোকান। তবে কোল্ড কফির ব্যবস্থা করা যাবে।'
অবশেষে তাই সই। কোল্ড কফি-ই দিতে বলা হল। 
জাহ্নবী ভায়োলেটের হাত ধরে খুশি খুশি গলায় বলল, 'পেয়ে গেছি।'
'কী!'
'স্যালারি।' ফিসফিস করে উত্তর দিলো জাহ্নবী।
ভায়োলেট হেসে বলল, 'তাই এত খুশি?'
'হুম। তোর পুরো টাকার ব্যবস্থা হয়ে গেছে। নিয়ে যাস।'
'আপু! থ্যাংক ইউ আপু।'

ভায়োলেট উঠে এসে জাহ্নবীকে জড়িয়ে ধরল। জাহ্নবী ভায়োলেটের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, 'আমার মিষ্টি বোনটা। এত হন্তদন্ত হয়ে কোথা থেকে আসলি?'
'একটা কাজে গিয়েছিলাম' উত্তর দেয় ভায়োলেট।

জাহ্নবীর চা চলে এলো। কফি আসার অপেক্ষায় বসে রইল সে। ভায়োলেটকে আজ ভীষণ ব্যস্ত দেখাচ্ছে। ছিমছাম গড়নের ভায়োলেটকে দেখলে জাহ্নবী প্রায়ই মনেমনে ভাবে, 'ও নায়িকা হতে পারতো।'

কোল্ড কফি চলে এলো। কফি খেতে খেতে ভায়োলেট বলল, 'তুমি জানতে চেয়েছিলে না আমার স্বপ্ন কি? আমি কেমন জীবন চাই?'
'হুম হুম।'
'বলবো। আর একটু অপেক্ষা করতে হবে।'
'আজকেই বলবি?'
ঝলমল করে উঠল জাহ্নবীর গলা। ভায়োলেট মাথা নেড়ে বলল, 'উহু। আজকে না। আর কিছুদিন সময় লাগবে।'
'কিছু দিন! কিছু ক্ষণ কেন নয়?'
'হা হা হা। হুম। ভালো কিছু শোনার জন্য একটু অপেক্ষা তো করতেই হবে আপুমনি।'
'তা বটে, তা বটে।'

দুইবোন উচ্চশব্দে হেসে উঠল। চা ও কফি খাওয়া শেষ হতেই ভায়োলেট বলল, 'আপু শোনো। আজকে আমি তোমার এখানে থাকতে পারবো না। আমাকে বাসায় যেতে হবে। কাজ আছে।'
'কী কাজ?'
'আছে। পরে বলবো তোমাকে।'
'তুই অনেক রহস্যময়ী রে ভায়োলেট।'

ভায়োলেট হেসে উত্তর দিলো, 'আজকে বাসায় যাই। কাল অথবা পরশু আসবো। রাতে থাকবো, অনেক গল্প করবো। বৃহস্পতিবার রাতে আসলে বেশী ভালো হয়। শুক্রবার তোমার ছুটি। অনেক বেলা অবধি ঘুমাবে।'

ভায়োলেটকে আনন্দিত দেখাচ্ছে। জাহ্নবীর নিজেরও আজ মনে অনেক আনন্দ। ছোটবোনের বিপদে সহায়তা করতে পারছে সে। এরচেয়ে আনন্দের ব্যাপার তার জীবনে এখনো ঘটেনি। 
ভায়োলেট বলল, 'আপু, টাকাটা কী সঙ্গে আছে?'
'কেন রে? এখনই নিবি?'
'হুম। আমি চাইনা শামীমের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে। ওকে আজকেই টাকাটা দিয়ে দিতে চাই।'
জাহ্নবী বলল, 'টাকা তো সঙ্গে নেই, বাসায় আছে। চল উঠি। তুই ছেলেটাকে কল দিয়ে আসতে বল। আমরা বাসায় গিয়ে টাকাটা নিয়ে বের হই।'

ভায়োলেট উঠে দাঁড়াল। জাহ্নবী বিল পরিশোধ করে দিয়ে দোকান থেকে বের হয়েছে সবেমাত্র। ঠিক এমন সময় রিকশা থেকে নামল পান্নাবাহার। তাকে দেখে আচমকা স্তব্ধ হয়ে গেল জাহ্নবী। নিশ্বাস অব্দি বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। বুকে ধকধক আওয়াজ টের পেলো সে। ভায়োলেট বলল, 'আপু চলো।'

জাহ্নবী দাঁড়িয়ে রইল। পান্নাবাহার দোকানের ভেতরে প্রবেশ করেছে। জাহ্নবী কয়েক সেকেণ্ড সময় নিলো নিজেকে স্বাভাবিক করার জন্য। বলল, ' আচ্ছা শোন না। আমার না আরেক কাপ চা খেতে ইচ্ছে করছে।'
'তাহলে চলো টাকাটা নিয়ে এসে এখানে অপেক্ষা করি। আর শামীমকেও এখানে আসতে বলি।'
'তাই করবি? ঠিক আছে চল।'

দোকানের দিকে এক পলক তাকিয়ে বাসায় রওনা দিলো জাহ্নবী। ওর হৃদস্পন্দন দ্রুত বাড়ছে। নিজেকে দেখে অবাক লাগছে ওর। সে কখনো ছেলেদের প্রতি বিন্দুমাত্র আকর্ষণ অনুভব করতো না। কতগুলো বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে দিয়েছে সে। শুধুমাত্র ছেলেদের প্রতি, বিয়ে বা প্রেমের প্রতি আগ্রহ নেই বলে। কী অদ্ভুতভাবে এখন সে-ই একটা মানুষের প্রতি দুর্বলতাবোধ করছে। পান্নাবাহারকে দেখলেই ওর কেমন যেন লাগে। সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়।

ড্রয়ার থেকে টাকা বের করে ভায়োলেটের হাতে দিলো জাহ্নবী। বিছানার ওপর থ হয়ে বসে রইল সে। ভায়োলেট টাকা গুণে ব্যাগে রেখে বলল, 'আপু। চলো?'

জাহ্নবীর ভাবান্তর হল না। ভায়োলেট বলল, 'যাবে না?'
'তোর বন্ধু এসেছে?'
'পনের বিশ মিনিট লাগবে বললো।'
'ওহ আচ্ছা।'
'তুমি নাকি চা খাবে?'
'হুম।'

জাহ্নবী ধীরেধীরে উঠে দাঁড়াল। পান্নাবাহারকে দেখলেই ওর সবকিছু ওলট পালট হয়ে যাবে। কিন্তু তাকে দেখে যাওয়ার বাইরে আর কিছুই করতে পারবে না সে। হয়ত মানুষটা বিবাহিত, হয়তো তার প্রেমিকা আছে, হতে পারে সে জাহ্নবীকে পছন্দই করবে না। সেসব তো পরের কথা, জাহ্নবী তাকে মনের কথা জানাতেই পারবে না কখনো। অযথা তাকে দেখতে গিয়ে কী লাভ হবে তার?

জাহ্নবী বলল, 'আমরা আর কিছুক্ষণ পর যাই?'
'চা খাবে না?'

জাহ্নবী অসহায় ভঙ্গীমায় এদিক সেদিক তাকালো। ওর ভালো লাগছে না। তার মনের অনুভূতি আজীবন মনেই বসে লুকোচুরি খেলবে। অযথা তাকে জ্বালাতন করার মানে হয় না। তবুও কোনো এক অদৃশ্য স্রোত তাকে টেনে নিয়ে চললো বাসার নিচে। 'when tea meet toast' এর কাঁচের দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে জাহ্নবীর হৃদস্পন্দন বাড়তে লাগল। দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশের সময় হঠাৎ খুব বেশী স্পন্দন অনুভূত হতে লাগল তার। কিন্তু ভেতরে ঢুকেই সবকিছু স্তব্ধ হয়ে গেল। অদৃশ্য স্রোতটাও হারিয়ে গেল। পুরো দোকান ফাঁকা। কোথায় পান্নাবাহার?

সে চলে গেছে!  

জাহ্নবী অস্বস্তি নিয়ে চেয়ারে বসলো। চায়ের অর্ডার দেয়ার জন্য ভায়োলেট জানতে চাইলো, 'আপু, কোনটা খাবে?'
'চা খেতে ইচ্ছে করছে না।'
'তুমি না বললে খাবে?'

জাহ্নবীর মনোভাবের হুটহাট পরিবর্তন খেয়াল করছিল ভায়োলেট। বেশ বুঝতে পারল আপু কোনো সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা নিয়ে কথা বলা দরকার। 
চা দিতে বলল ভায়োলেট। তারপর জাহ্নবীর হাত ধরে মধুর গলায় জানতে চাইলো, 'আপু, তোমার কী হয়েছে আমাকে বলা যাবে?'

জাহ্নবী চমকে উঠলো। তার কী হয়েছে সেটা সে নিজেই জানে নাকি? সে ঘোরের ভেতর আছে। এই বয়সে এসে তার এমন ঘোরের কথা ভায়োলেটকে বলা যাবে না। অনেক লজ্জায় পড়ে যাবে সে।

জাহ্নবী হাসার চেষ্টা করে বলল, 'কিছু না তো।'
'এটাকে বলে মুড সুয়িং।'
'হ্যাঁ। মুড সুয়িং হচ্ছে।'
জাহ্নবী লজ্জা পেয়ে হাসল। ভায়োলেট তাকিয়ে রইল ওর দিকে। আপুর মুড সুয়িং ভালো করে দিতে মজার মজার গল্প বলতে আরম্ভ করল সে। জাহ্নবী চেষ্টা করলো হাসিমুখে বসে থাকতে। 

ভায়োলেট শামীমকে টাকা দিয়ে যখন বাসায় ফিরলো, তখন রাত নয়টা। ডাইনিং টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে বাবা, সামার ও অর্ণব। ভায়োলেটকে দেখে হাসিমুখে অর্ণব বলল, 'কেমন আছেন?'
'ভালো আছি ভাইয়া। আপনি?'
'অনেক ভালো। বসুন, আমাদের সঙ্গে খাবার খান।'

ভায়োলেট সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে ঘরে প্রবেশ করল। ড্রেসিং টেবিলের ওপর রাখা একটা গিফট বক্স। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে হাতমুখ ধুয়ে খেতে আসল ভায়োলেট। 
পারভীনকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি অনেক আনন্দে আছেন। মোরগ পোলাও রান্না করেছেন। নিজের হাতে খাবার খাওয়াচ্ছেন সবাইকে। ভায়োলেট নিঃশব্দে চেয়ার টেনে নিয়ে খেতে বসলো। 

পারভীন বললেন, 'অর্ণব কী পাগল বল। আজকে বেতন পেয়েছে। প্রথম বেতন পেয়েই দুই কেজি মিষ্টি, ইলিশ মাছ, তোর আব্বার জন্য পাঞ্জাবি, আমার শাড়ি, তোদের তিন বোনের জন্যও কী যেন এনেছে। কী দরকার ছিল এসবের। পাগল একটা ছেলে।'

পারভীন হাসি হাসি মুখে কথাগুলো বললেন ভায়োলেটকে। ভায়োলেট খাবার মুখে দিতে গিয়েও দিতে পারল না। ওর কেমন যেন মন খারাপ হয়ে গেল। আজকে বড় আপুও প্রথম বেতন পেয়েছে। আপুর ইচ্ছে ছিল সবার জন্য কত কী কিনে আনবে। কিন্তু আপু সেটা পারলো না। হয়তো আপুর এতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সেটা ভেবেই হয়তো আজকে টাকা দেয়ার পর আপুর মন খারাপ হয়ে গিয়েছে। এদিকে মা নিশ্চয়ই আপুর কাণ্ড দেখলে আরও অনেক খুশি হত! সব ভেস্তে গেল তার জন্য। 

জাভেদ আলী বললেন, 'কী রে মা, কিছু খাচ্ছিস না কেন?'
ভায়োলেট খেতে আরম্ভ করলো। কিন্তু বড় আপাকে ছাড়া খাবার ভেতরে যাচ্ছে না ওর। আপা ওর জন্য কীভাবে সব টাকা দিয়ে দিলেন! বাকি মাস কীভাবে চলবে সে। সব ভাবনায় বিষণ্ণ হয়ে রইল ভায়োলেট। 
খাওয়া শেষে অর্ণব একটা গিফট বক্স এগিয়ে দিলো ভায়োলেটকে। ধন্যবাদ জানিয়ে ঘরে চলে এলো ভায়োলেট। সামার ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত। ভায়োলেট ল্যাপটপ নিয়ে বসলো। কাজ আছে তার।
কিছুক্ষণ পর সামার এসে বলল, 'ভায়োলেট, একটা কথা ভাবছি।'
'হুম, বল।'
'ভাবছি অর্ণবকে আরজুর কথা বলবো। বাবা মা দুজনেই অর্ণবকে অনেক পছন্দ করে। অর্ণব যদি আমার রিলেশনের কথাটা ওদেরকে জানায়, আব্বু আম্মু কেউই আপত্তি করবে না। তারপর নাহয় আরজুর ফ্যামিলিকে আসতে বলবো। কী বলিস তুই?'

ভায়োলেট কিছুক্ষণ চুপ থেকে উত্তর দিলো, 'তাহলে আজকেই কথাটা বলে ফেল। দেরী করলে পরে পস্তাতে হবে।'
'কেন? পস্তাতে হবে কেন?'
'সেটা বলতে চাচ্ছি না। অর্ণব ভাইয়া চলে যাওয়ার আগেই তুমি যাও। ওকে আজকেই ভাইয়ার কথাটা জানাও।'

সামার উঠে দাঁড়াল। অর্ণব ভালো ছেলে। দিলখোলা স্বভাবের। তাকে ভালভাবে বুঝিয়ে বললে নিশ্চয়ই আরজু ও সামারের বিয়ের ব্যাপারে সহায়তা করবে সে।
.
.
.
চলবে........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp