মেঘফুল - পর্ব ৩৫ - মিশু মনি - ধারাবাহিক গল্প


নাদিরের পার্টিতে এসে বেশ জড়োসড়ো হয়েই একদিকে দাঁড়িয়ে আছে জাহ্নবী। পরিচিত কোনো মুখ দেখতে না পেয়ে তার অস্বস্তি হচ্ছে। পান্নাবাহার আদৌ আসবে কী না, সেই ভাবনাও আন্দোলিত করছে তাকে। 

হঠাৎ তন্বীর গলা শুনতে পেলো জাহ্নবী 'হ্যালো আপু!'
জাহ্নবী মিষ্টি হেসে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো তন্বীকে। তন্বী বলল, 'আমাদের পার্টি দোতলায় হচ্ছে আপু। আসুন আমার সঙ্গে।'

তন্বীর পরনে রাজকীয় একটা পোষাক। তার মাথায় মুকুট বসিয়ে দিলেই পুরোদস্তুর রাজকন্যা মনে হবে তাকে। এই জমকালো পরিবেশে জাহ্নবী'র আজ নিজেকে নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। জীবনে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই মেয়েটা নিজের নিয়ে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগতো। আজ তার এই অভাববোধ নেই। এইমুহুর্তে জাহ্নবীর মনে হচ্ছে, একটা মেয়ে সুন্দর জামাকাপড় পরে সুন্দরভাবে সাজগোজ করলেও তার আত্মবিশ্বাসে দারুণ প্রভাব পড়ে।

নাদির পায়ে হেঁটে এগিয়ে এল জাহ্নবী'র কাছে। জাহ্নবী উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল, 'স্যার আপনাকে দেখে আমার কী যে আনন্দ হচ্ছে!'
'আনন্দ হলে বুঝতে হবে আমার জন্য আপনার মায়া আছে।'
'তা তো আছেই স্যার।'
' এখানে স্যার স্যার করবেন না প্লিজ। আমার অফিসের তেমন কাউকে আসতে বলিনি। যাদের দেখতে পাচ্ছেন, সবাই আমার ফ্যামিলি মেম্বার আর ফ্রেন্ডস। অফিসের হাতেগোনা দুই একজনকে বলেছি।'
'স্যার আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, এত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ গুলোর মাঝে আমিও আছি!'
'হা হা হা। আপনি অবশ্যই কাছের একজন হয়ে উঠেছেন। আপনার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে গত কয়েকদিনে একটা ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে। সেটা আপনি মানুন বা না মানুন। আপনাকে ইনভাইট না করে থাকতে পারিনি।'

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হাসল জাহ্নবী। তার আনন্দ বেড়ে গুলো বহুগুণে। নাদির অন্য দিকে চলে গেলে সে ভীষণ একা হয়ে পড়ল। তন্বী আজ আনন্দে ঝলমল করছে। এখন তার মাথায় একটা হিরের মুকুট। সত্যিই তাকে রাজকন্যার মতো লাগছে এখন। এত আনন্দের ভেতর তার নিজেকে নীড়হারা পাখি বলে মনে হতে লাগল। কারণ এখানে কেউই তার পরিচিত নেই।

জাহ্নবী চোখ ঘুরিয়ে খুঁজছে পান্নাবাহারকে। এই একটা মানুষই তার সবচেয়ে চেনা। কিন্তু এখনো দেখতে পায়নি তাকে। ধীরপায়ে জাহ্নবী ওপরের তলায় উঠে এলো। খোলা আকাশের নীচে বসতে ইচ্ছে করছে তার।
বৃক্ষলতার আড়াল থেকে হাসছে কিছু হলুদ রঙের বাতি। পাশেই স্মোকিং জোন। গুটিকয়েক ছেলে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে। তাদের হাসির শব্দ ভেসে আসছে এখান থেকে। গন্ধে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হল সে।

হঠাৎ মনে হল স্মোকিং জোনে তার পরিচিত একজন আছে। পান্নাবাহার!

চমকে উঠে পেছন ফিরল জাহ্নবী। পান্নাবাহারের এক হাত পকেটে। অন্যহাতে সিগারেট ফুঁকছে। সিগারেটে টান দিয়ে যখন আকাশে ধোঁয়া উড়িয়ে দিচ্ছে, বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠতে লাগল জাহ্নবী'র। 

জাহ্নবী ঠায় দাঁড়িয়ে রইল সেখানেই। মুহুর্ত বয়ে যেতে লাগল। ধীরেধীরে সবার সিগারেট খাওয়া ফুরালে আড্ডা ভঙ্গ দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেল ছেলে গুলো। 

জাহ্নবী সাহস করে ওপরের দিকে এলো। এদিকটায় টেবিলে কিছু ছেলেমেয়ে বসে গল্প করছে। পাশ দিয়ে চলে গেল পান্নাবাহার। জাহ্নবী'র বক্ষমাঝে ছলাৎ করে উঠলো। পান্নাবাহারের সুঘ্রাণ বিমুগ্ধ করে ফেলল তাকে।
জাহ্নবীও দ্রুত নেমে এলো নীচে। নিজে থেকে পান্নাবাহারকে গিয়ে বলল, 'ভাল আছেন?'
'হ্যাঁ। আপনি?'
'আমিও। সেদিন আমাদেরকে বিল দিতে দিলেন না কেন?'
'আজকে বুঝি বিল দিতে এখানে এসেছেন?'

লজ্জা পেয়ে হাসল জাহ্নবী। সে খুব বোকার মতো প্রশ্ন করে বসেছে। মাথা নিচু করে হেসে জাহ্নবী বলল, 'হুম বিল দিতেই এসেছি। আপনাকে আজ এক কাপ কফি খাওয়াতে চাই।' দুরুদুরু বুকে সাহস করেই কথাটা বলে ফেলল জাহ্নবী।

'আপনার দাওয়াত কবুল করলাম। এসব হৈ হুল্লোড় আমার একদম ভালো লাগে না। তন্বী রাগ করবে তাই আসা।'
পান্নাবাহার দ্রুত চলে যেতে যেতে পেছন ফিরে জিজ্ঞেস করল, 'কী হল? যাবেন না?'

চমকে উঠলো জাহ্নবী। তার মুখে ফুটন্ত পদ্মফুলের ন্যায় হাসি ফুটে উঠল। পান্নাবাহারের সঙ্গে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে এলো সে। আশেপাশের টেবিল গুলোতে ছেলেমেয়েরা বসে গল্প করছে। তাদেরই কোনো এক ফাঁকে একটা ছোট্ট টেবিল আর টুলে জায়গা করে নিলো পান্নাবাহার। 

জাহ্নবী তার মুখোমুখি বসল। বিপরীত দিকে বসা মানুষটা জানেনা এই মুহুর্তে কী এক অদ্ভুত ভয়ংকর ঝড় বইছে এখানে। যে ঝড় দেখতে পারবে না কেউই। কেবল একজন মানুষ সেই ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে উঠছে, আবার ফিরে পাচ্ছে আপন প্রাণ।

পান্নাবাহার বলল, 'ওইদিন আপনাদেরকে অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। এজন্য সরি।'
'আরে কী বলছেন! আপনাদের বন্ধুদের মাঝে আমাদেরও বেশ ভালো লাগছিল। আমরা বিব্রত হইনি।'
'যাক, শুনে ভালো লাগল। কী খাবেন বলুন?'
'আপনি খাবেন। আপনার ইচ্ছেমতো।'
পান্নাবাহার হেসে বলল, 'এতটা সুযোগ দেবেন না। পেটে কিন্তু অনেক ক্ষুধা।'
জাহ্নবী মিষ্টি করে হাসল। কী উত্তর দেবে বুঝতে পারল না। তার পেটে ক্ষুধা নেই, ক্ষুধা তার দু চোখে। পান্নাবাহারকে দুচোখ ভরে দেখতে না পারার তৃষ্ণা। কী ভয়ংকর এক দোটানার মধ্যে বাস করছে সে! কখনো ইচ্ছে করে পান্নাবাহারকে ভালবাসতে, আবার কখনো নিজের মনেই সে বলে বসে, 'আমি আর কক্ষনো এই লোকটার কথা ভাব্বো না।'

পান্নাবাহার বলল, 'ভয় পেয়ে গেলেন?'
'না।'
'ওকে বাবা আমি শুধু কফি দিতে বলি।'
'এত দুঃখ দেবেন আমায়?'

পান্নাবাহারের চোখে চোখ রেখে কথাটা বলে ফেলল জাহ্নবী। চোখাচোখি হল দুজনার। পান্নাবাহারের চোখে জমে থাকা শক্তিশালী এক আকর্ষণ জাহ্নবীকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে যেতে লাগল। মনে হচ্ছে এই বুঝি পৃথিবীটা দুলে উঠবে, সবকিছু হয়ে যাবে এলোমেলো। 

নিজেকে সামলে নিল জাহ্নবী। তার দ্রুত হৃদস্পন্দিত হচ্ছে। পান্নাবাহার বলল, 'আমি একটা ছোট সাইজের পিজ্জা দিতে বলি কী বলেন?'
' ছোট কেন, বড়টাই দিন না।'
'ম্যাডাম, ছোট টাই খেয়ে শেষ করতে পারবেন না।'

জাহ্নবী ম্লান হাসল। চোখ নামিয়ে নিয়ে আপনমনে ভাবছে জাহ্নবী, 'এ আমার কী হল আজ! কেন এমন করে একটা মানুষ আমার জীবনে এসে গেল, কেন এভাবে আমি মানুষটার প্রতি একটু একটু করে দূর্বল হয়ে পড়ছি? জানিনা। এত কেন'র উত্তর নেই পৃথিবীতে। এভাবে বারবার আমাদের দেখা হওয়ার মানে কী এই, প্রকৃতি আমাদের এক করে দিতে চায়? এত দীর্ঘকাল পেরিয়ে আমার জীবনেও এলো বসন্ত!'

ভেতরে ভেতরে উত্তেজনায় কাঁপছে জাহ্নবী। পান্নাবাহার ফোনের স্ক্রিনে চোখ রাখল। বেশ কিছুক্ষণ স্ক্রল করল সে। জাহ্নবী ফোনের মৃদু আলোয় আলোকিত তার মুখটা পরখ করছিল। 
মুহুর্ত থমকে আছে আজ। জাহ্নবী এমনটাই চেয়েছিল। দুজনে মুখোমুখি বসে থাকবে, হয়তো থাকবে দুজনেই চুপচাপ। তবুও সেই মুহুর্তকে তার মনে হবে, জগতের সবচেয়ে সেরা সময়। এখন সেই সময়ের ভেতর বাস করছে জাহ্নবী।

কিন্তু মুহুর্ত ফুরিয়ে এলো একসময়। হঠাৎ একটা ছয় বছর বয়সী মেয়ে এসে পান্নাবাহারের পাশে দাঁড়িয়ে বলতে লাগল, 'বাবা তুমি এখানে, আমি কখন থেকে খুঁজছি তোমাকে।'
'ওরে আমার মা রে, তুমি একা একা ওপরে এসেছো কেন?'
'তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে চলে এসেছি।'
'যদি হারিয়ে যাও?'

মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরল পান্নাবাহার। জাহ্নবী মুহুর্তের জন্য নিশ্বাস বন্ধ করে রেখেছে। বাচ্চাটা ওকে 'বাবা' ডাকছে কেন!
তার প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেল মুহুর্তেই। পান্নাবাহার বলল, 'এটা আমার মেয়ে, ক্লারা। আমার কলিজার টুকরা।'
'আপনার মেয়ে!' অস্ফুটে কথাটা বলে জাহ্নবী চোখ বন্ধ করে ফেলল। তার মনে হচ্ছে এখন সত্যি সত্যিই দুলছে পুরো পৃথিবী। তাকে বিধ্বস্ত হওয়া থেকে এবার আর জেগে ওঠাবে না প্রকৃতি। 

পান্নাবাহার বলল, 'তোমার আম্মু খুঁজবে তো সোনা।'
'আম্মুও খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসে পড়বে।'
'আমার কলিজাটা। তোমার আম্মু আজ তোমাকে পরীর মতো করে সাজিয়ে দিয়েছে।'

পান্নাবাহার ক্লারার মাথায় চুমু খেয়ে আদর করল ওকে। জাহ্নবী কিছু শুনতে পাচ্ছে না আর। তার কাছে মিথ্যে মনে হচ্ছে সবকিছু। 
ক্লারা বলল, 'এই আন্টিটা কে বাবা?'
'তুমিই তো বললে আন্টি।'

ক্লারা হাসতে হাসতে ওর বাবার গাল ধরে আদর করে দিতে লাগল। পিজ্জা ও কফি চলে এলো খানিকক্ষণ পরেই। ক্লারা বলল, 'বাবা তুমি আমাকে আর মাকে রেখেই পিজ্জা খাচ্ছো এখানে? আম্মুকেও ডাকো আমরা একসঙ্গে খাই।'
'না মামণি। এই আন্টি পিজ্জা খাওয়ার জন্য অর্ডার দিয়েছে। আম্মু আসলে তো পুরোটাই খেয়ে ফেলবে।'
'আমার আম্মু কি রাক্ষস?'

পান্নাবাহার উচ্চস্বরে হাসতে হাসতে ক্লারাকে জড়িয়ে ধরে বসে রইল। জাহ্নবী আর বসে থাকতে পারছে না। পান্নাবাহার যখন তাকে পিজ্জার স্লাইস তুলে নিতে অনুরোধ করল, জাহ্নবী বিব্রত হয়ে মোবাইল বের করে ব্যস্ত ভঙ্গীতে বলল, 'সরি, আমার একটা খারাপ খবর এসেছে। আমাকে এক্ষুনি উঠতে হবে।'
'সে কী! কী হয়েছে?'
'ব্যক্তিগত কিছু। প্লিজ কিছু মনে করবেন না।'

দ্রুতবেগে সেখান থেকে নিচে নেমে এল জাহ্নবী। রিসিপশনে এসে বিল পরিশোধ করে দিয়ে নাদিরের কাছে গেল।

নাদির জাহ্নবী'র বিধ্বস্ত মুখ দেখেই আন্দাজ করেছে কিছু একটা হয়েছে। সে বারবার জানতে চাইলো, 'কোনো সমস্যা আমাকে বলুন?'
'আপনাকে বলতে পারবো না স্যার। কিন্তু আমাকে এখনই যেতে হবে।'
'এক মিনিট দাঁড়ান।'

জাহ্নবী দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়াল। ওর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। এই শহরের দালান কোঠা, মানুষ জন সবকিছুই ভয়ংকর লাগছে তার। হঠাৎ পাশ থেকে ক্লারার কণ্ঠ শুনতে পেলো, 'আম্মু, ওপরে চলো। পিজ্জা খাবো।'
'এখন না মামণি।'
'আব্বু একাই একটা পিজ্জা নিয়ে বসে আছে। অনেক বড় পিজ্জা। আব্বু একা শেষ করতে পারবে না। আমাদেরকে গিয়ে শেষ করে ফেলতে হবে। চলো।'

জাহ্নবী পাশ ফিরে তাকাল। পান্নাবাহারের স্ত্রীকে দেখে একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার। অপূর্ব দেখতে একটা মেয়ে। পরনে স্লিভলেজ গাউন, গলায় একটা হিরার নেকলেস জ্বলজ্বল করছে। তার মাধুর্যতাপূর্ণ হাসিই এখানে তাকে সবার চাইতে আলাদা করে তুলেছে। তার দিকে তাকিয়ে নিজেকে নিতান্তই তুচ্ছ মনে হল জাহ্নবী'র। পান্নাবাহারকে নিয়ে স্বপ্ন সাজানোর দুঃসাহস সত্যিই তাকে মানায় না। যার স্ত্রীকে ঘরভর্তি লোকজনের মধ্যে সহজেই আলাদা যায় কেবল তার রূপ ও মাধুর্যতার কারণে।

জাহ্নবী আর এক মুহুর্তও দাঁড়াল না। নাদিরকে বলল 'স্যার আমি আসি?'
নাদির বলল, 'পার্সেলটা দিতে বলেছি। এক মিনিট দাঁড়ান প্লিজ।'

বেয়ারা একটা পার্সেল এনে জাহ্নবী'র দিকে এগিয়ে দিলো। নাদিরকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্রুতপদে বেরিয়ে এলো জাহ্নবী। দরজার দিকে আসতে আসতে এক পলক তাকাল ক্লারা ও তার মায়ের দিকে। মা ও মেয়ে হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে ওপরের দিকে যাচ্ছে। তারপর! তিনজন বসে হাসাহাসি করতে করতে পিজ্জা খাবে, নিশ্চয়ই মেয়েটা অভিমানী গলায় বলবে, 'তুমি একা একা পিজ্জা খাচ্ছো কেন?'
পান্নাবাহার উত্তর দেবে, 'তোমাদের নিয়ে খাবো বলেই অর্ডার দিলাম।'
আর তখন ক্লারা বলে উঠবে, 'না আম্মু, একটা আন্টি এই পিজ্জা অর্ডার দিয়েছিল।'
ক্লারার মা খুব রাগ করে জানতে চাইবে, 'কোন মেয়ের সঙ্গে বসে ছিলে?'
পান্নাবাহার অভিমান ভাঙাতে আমতা আমতা করে কান ধরে সরি বলবে। জড়িয়ে ধরবে তাকে। তাদের এইসব দৃশুগুলোকে কল্পনা করেই জাহ্নবী ক্রমশ যেন মাটির নিচে চলে যেতে লাগল, এমন বোধ হচ্ছিল তার।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটা গাড়ি ডেকে তাতে উঠে পড়ল জাহ্নবী। বাকি পথটা কীভাবে সে বাসায় ফিরেছে নিজেও জানেনা। 

বাসায় ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে গা থেকে খুলে ফেলল শাড়ি ও ব্লাউজ। বাথরুমে ঢুকে জাল দিয়ে প্রচণ্ড রাগের বেগে ঘষে ঘষে গাল থেকে মেক আপ তোলার চেষ্টা করল। মুহুর্তেই লালচে হয়ে জ্বালা করতে লাগল মুখ। জাহ্নবী স্তব্ধ হয়ে বসে পড়ল মেঝেতে। বুকের জ্বালার চাইতে কোনোকিছু তো তীব্র হতে পারে না। 

কতক্ষণ কেঁদেছে তা নিজেও জানেনা জাহ্নবী। বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো একজন স্তব্ধ, চোয়াল শক্ত করে রাখা মেয়ে। ঝড়ের পর সবকিছু শান্ত হয়ে গেছে হঠাৎই।
.
.
.
চলবে......................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp