সূর্য মামার অবস্থান পশ্চিম আকাশে। তপ্ত বিকেলে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ নগরবাসী। ব্যস্ততায় ঘিরে রেখেছে তাদের। রাস্তায় বিরতিহীন গাড়িঘোড়া চলমান। ফুটপাতের ফাস্টফুড ও ভাজিপুড়ির দোকানে মানুষের অঢেল ভিড়। অভাব নেই সাহায্য চাওয়া মানুষের! সুস্থ সমেত মানুষ চাইলে কাজ করে খেতে পারেন অথচ রাস্তায় রাস্তায় লোকদের কাছে হাত পেতে সাহায্য চায়। অথচ অনেক অচল মানুষও নিজের দমে পরিশ্রমের কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করে। এখানে সম্পূর্ণটাই আত্মসম্মান কাজ করে। একজন আত্মসম্মানবোধ মানুষ সবসময় নিজের দমে, পরিশ্রমের প্রচেষ্টায় সম্মানের সাথে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
পাতা ব্যস্ততায় ঘেরা রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে রাস্তা পার হওয়ার উদ্দেশ্যে। লুবমান লতা ভাজিপুরির দোকানে পিয়াজি, কলার চপ, হালিম ইত্যাদি কিনতে ব্যস্ত সেখানে ভিড় হওয়ার কারনে লুবমান বড় বোনের পাশে দাঁড়িয়ে। আজকাল ছেলে মানুষের ভরসা নেই। ভিড়ভাট্টায় মেয়েদের বাজে স্পর্শ দিয়ে মজা নেওয়া তাদের পছন্দের কাজ কিনা! তাই পাতা একাই এসেছে রাস্তার অপাশে স্টেশনারির বড় শপ আছে। তার কিছু কেনার আছে যেমন আর্ট পেপার, রং তুলি, কিছু পেন্সিল সহ হাবিজাবি জিনিস। তার আঁকাআঁকির শখ আছে টুকটাক। পাতা রাস্তার এপাশে ওপাশে তাকিয়ে পার হওয়ার চেষ্টায় কিন্তু পারছে না। গাড়ি, বাইক গুলো বেশ বেগে ছুটে চলেছে। সে দু পা এগোলে এক পা পিছিয়ে যায়। নাহ তার দ্বারা হবে না। আপু ভাই আসলে ওদের সাথে যাবে। তার ভাবনার মাঝেই এক ট্রাফিক পুলিশ আসে।তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে,
-" আমার সাথে আসুন আমি পার করে দিচ্ছি!"
পাতা হেসে মাথা নাড়ে। ট্রাফিক পুলিশ হাতের লাঠি দিয়ে গাড়ি গুলোকে সাবধান করে পাতাকে রাস্তা পার করিয়ে দেয়। পাতা মুচকি হেসে তার দিকে তাকায়। তার বয়সীই হবে লোকটা। দাঁড়িই ভালোমতো গজায় নি।
-" আপনাকে ধন্যবাদ স্যার। ভালো থাকবেন!"
লোকটি হেসে মাথা নেড়ে বলে,
-" এটা আমার ডিউটি মিস! আসি সাবধানে রাস্তা পার হবেন!"
বলে হাত নাড়িয়ে চলে যায়। পাতা তার দিকে তাকিয়ে রয় কিছু পল। ছেলেটা মিষ্ট ভাষী দেখে ভদ্রলোক মনে হয়। পাতা ভাবনা বাদ দিয়ে স্টেশনারীতে চলে যায়। শপে ভিড় আছে, কিছু কলেজপড়ুয়া মেয়ে ছেলে ও কিছু গার্জেন সহ বাচ্চা! পাতা শপ কিপারকে ডেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিতে বলে। পাতা সামনে কাচের ডেস্কের উপর রাখা ফাইল দেখছিল তখনি পরিচিত কণ্ঠে পাশে তাকায়।
এতো মি. অরুণ সরকার। পাতা হেসে অরুণের দিকে একটু এগিয়ে যায়। অরুণের পাশে কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়ে, অরুণের দিকেই চেয়ে আছে। মেয়েগুলো চোখ দিয়েই গিলে খাচ্ছে মনে হচ্ছে। এ বয়সী মেয়েদের আবার ত্রিশ প্লাস হ্যান্ডসাম পুরুষদের প্রতি বেশিই আকর্ষণ থাকে। পাতা বাচ্চা মেয়ে গুলোর দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে হাসে। অরুণকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-" হ্যালো মি. আপনি এখানে?"
অরুণ একবার তার দিকে তাকিয়ে সামনের শপ কিপারকে গম্ভীর গলায় বলে,
-" আই এম গেটিং লেট! হারি আপ?"
দোকানি তার লিস্ট দেওয়া জিনিস গুলো দেয়। স্পাইডার ম্যান ছবি ওয়ালা ক্লিপ বোর্ড! ভোরের ফেভারিট সুপার হিরো স্পাইডারম্যান! কার্টুন শেপের ইরেজার, শার্পনার, পেন্সিল বক্স, অনেক গুলো পেন্সিল, স্কেল সহ আরো বেশ কিছু ।কাল কলিজার প্রথম এক্সাম বলে কথা!!
পাতা অরুণের দিকে চেয়ে! গম্ভীর্যে ঘেরা মুখশ্রী শপ কিপারের পানে চেয়ে। তার কথা কি শুনতে পায় নি? নাকি খেয়াল করে নি তাকে! মেয়েগুলো তার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। সে অরুণের নেওয়া জিনিস পত্রের দিকে চাইল। ভোরের জন্য সব! সে পুনরায় হেসে বলল
-" ভোরের জন্য সব? ভোরও এসেছে? কই দেখছি না যে মি. ভোরের আব্বু?"
অরুণ আবারো অগ্রাহ্য করে। বিল মিটিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে হন হন করে চলে যায়। গাড়িতে উঠে বসে। পাতা সেদিকে তাকিয়ে দেখলো সব! এভাবে অগ্রাহ্য করে চলে গেল! এভাবে অপমান করল!! হাই হ্যালো টুকুও বলা তো দূরের কথা তাকায় নি পর্যন্ত!! অথচ কাল রাতে ছেলে কাঁদছিলো বলে ফোন করে কথা বলতে বলল! কতটা স্বার্থপর লোক! কথা বললে কি হতো? ইগো হার্ড হতো?
পাশের মেয়েগুলো হেসে উঠলো। গুসুর ফুসুর করছে। একটা মেয়ে তো বলেই দিলো,
-" আপু? কি এটিটিউড দেখেছেন? আপনাকে তো ভাও ই দিল না! সো স্যাড!"
বলেই হাসতে লাগল। পাতার রাগ হলো বেশ। দাঁত খিচে অরুণকে ভয়ংকর গালি দিয়ে ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে বলল,
-" দেখলাম তো! লোকটার একটা ছেলে আছে পাঁচ বছরের! আমি তার স্কুলের টিচার! চিনি তাকে! সেও চেনে। হঠাৎ দেখা হলো ভদ্রতার খাতিরে কথা বললাম! অথচ তিনি ফিরেও চাইলেন না! সব বড়লোকি উচ্চবিত্ত পরিবারের গরীমা! আমার মতো সামান্য স্কুল টিচারের সাথে রাস্তা ঘাটে কথা বললে কেমন দেখায় না?"
বলে শপ কিপারের থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে টাকা মিটিয়ে মেয়েদের দিকে মুচকি হেসে চলে গেলো সেখান থেকে! ছেলেমেয়ে সহ সবাই তার যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো!
••••••••••••
অরুণ একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে। কর্ণারের টেবিল বুক করেছে।বিকেলের দিকে হওয়ায় ভিড় টা একটু বেশিই। অরুণ অর্ডারকৃত কোল্ড কফিতে চুমুক দিয়ে ঘড়ির দিকে চেয়ে সময় দেখে। নির্দিষ্ট সময়ের দশ মিনিট পেরিয়ে গেছে।সে আর পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করবে আসলে তো হলোই না আসলে চলে যাবে। পাশে রাখা ছেলের জন্য কেনা জিনিসগুলোর দিকে নজর আসে। ছেলেটা আসার জন্য অনেক বায়না করছিল। সে বুঝিয়ে রেখে এসেছে। মেয়ে দেখতে এসেছে সে। ওই শ্রাবনী নামক মেয়েটির সাথে দেখা করতে। আসমা বেগম কাল বিকেলেই তার সাথে কথা বলে। সে জানায় আগে সে কথা বলবে জানবে তারপর কথাবার্তা এগোবে। আসমা বেগম ঘটকের সাথে কথা বলে। ঘটক মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলে। তারাও সায় জানায়। আজ ছুটির দিন হওয়ায় তারা দেখা করার সিদ্ধান্ত জানায়। ভোর এসবের কিছুই জানে না। অরুণ আগেই জানাতে নিষেধ করেছে। সে সময় বুঝে বলবে। সে সময় দেখে চার মিনিট পার হয়ে গেছে। সে সামনে তাকায়। একটা মেয়ে আসছে। লেগিংস আর কামিজ পড়নে। ওড়না নেই, কাঁধে ভ্যানিটি ব্যাগ। লম্বা চুল ছেঁড়ে দেওয়া। চোখে কালো সানগ্লাস! অরুণের টেবিলের সামনে এসে চশমা খুলে বলে,
-" অরুণ সরকার?"
অরুণ মাথা নাড়ে। মেয়েটি হেসে সামনের সিটে বসে।ব্যাগ টেবিলে রেখে বলে,
-" স্যরি ফর লেট! আমি শ্রাবণী আহসান! কেমন আছেন আপনি?"
অরুণ কোল্ড কফির লাস্ট সিপ নিয়ে চোখের কালো খয়েরি ফ্রেমের চশমাটা খুলে হাতে নেয়। শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে গাম্ভীর্যতা বজায় রেখে জবাব দেয়,
-" আলহামদুলিল্লাহ! আপনি?"
শ্রাবনী স্বভাবসুলভ হেসে বলে,
-" ভালো! আপনি অর্ডার করেছেন?"
-" না! আপনি করুন। এক্সকিউজ মি?"
বলে পাশের টেবিলে অর্ডার সার্ভ করা অল্প বয়সী ছেলে ওয়েটারকে ডেকে নিলো। ছেলেটি অর্ডার সার্ভ করে অরুণদের টেবিলে এসে অর্ডার নিয়ে যায়। ওয়েটার যাওয়ার পর অরুণ শ্রাবনী চুপচাপ বসে। কি বলবে কেউ বুঝতে পারছে না। পর পর নিরবতা ভেঙ্গে শ্রাবনী হেসে বলে,
-" আপনি চুপ করে আছেন যে? কিছু বলুন?"
-" আপনি শুরু করুন!"
শ্রাবনী অরুণের দিকে চায়। সে শুনেছে ছেলের বয়স সাইত্রিশ একটা ছেলেও আছে পাঁচ বছরের। লোকটা নিশ্চয়ই বুড়ো গোছের হবে!!সে তো ছেলের ছবি না দেখেই ফ্যামিলিকে না করে দিয়েছিল। তার ওতটাও খারাপ দিন আসে নি যে এক বাচ্চার বাপকে বিয়ে করতে হবে!! কিন্তু বাবা ভাই মানে নি! অগত্যা আসতে হয়েছে! ভেবেছিল না করে দেবে! কিন্তু অরুণ সরকারকে দেখে মনটা খানিক পরিবর্তন হয়েছে! নাহ লোকটা স্বপুরুষ বটে! কানের পাশের চুল কিছু পাকলেও বুড়ো টাইপ নয়। সুঠাম দেহের গাম্ভীর্যে ভরপুর তাগড়া লোক! ফর্সা মুখশ্রীতে গালের একটু বড় বড় দাঁড়িতে বেশ লাগছে। চশমা পড়ে কেন লোকটা? চোখে কম টম দেখে নাকি! সে ভাবনা বাদ দিয়ে অরুণকে বলে,
-" আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না! শুনেছি আপনার লাভ ম্যারেজ ছিল! তাহলে ডিভোর্স কেন হলো? কিছু মনে করবেন না! যেহেতু দুজনের বিয়ের ব্যাপারে কথা বার্তা চলছে! কোনো রাখ ঢাক রাখা উচিত না! আপনিও জিজ্ঞেস করতে পারেন আমায়!"
অরুণ টেবিলের উপর এক হাত রেখে সিটে গা এলিয়ে বসে।
-" কিছু মনে করি নি! দুজনের মতের মিল ছিল না! ও ওর ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ সিরিয়াস ছিল। এন্ড আয় এপ্রিসিয়েট দ্যাট। পি এইচ ডি করার জন্য ক্যালিফোর্নিয়ায় বেশ কয়েকবার এপ্লাই করেছিল। ও প্রেগন্যান্ট থাকা অবস্থায় গ্র্যান্টেড হয়। তখন ওর ফাইভ মান্থ রানিং! ও তবুও যেতে চেয়েছিল। আমি যেতে দেই নি। ও মনে রাগ পুষে রেখেছিল। মার্ক মায় ওয়ার্ড ভোর ইজ মায় চাইল্ড। ভোর হওয়ার পর ও আবার এপ্লাই করে বিভিন্ন জায়গায়। আমি বাঁধা দেই নি কখনো! বাট পারমিশন পায় না! ভোর ও আমাকে এ নিয়ে দোষী ভাবতে থাকে । মাঝে মাঝে এ নিয়ে বেশ ঝগড়া হতো! ভোরের দু'বছর বয়স হওয়ার পর কিরগিজস্তানের এক ভার্সিটি থেকে মেইল আসে সেখানে পি এইচ ডির জন্য এপ্লাই করেছিলো। তো সে যাবে আমি বললাম ওকে যাও! হঠাৎ সে ডিভোর্সের কথা বলে! আমি অবাক হয়ে ছিলাম অনেক। আমি তো তাকে মানা করি নি! তাহলে! সে রিজন সরূপ জবাব দেয় আমার জন্য তার ক্যারিয়ারে একবার ইফেক্ট পড়েছে। ভবিষ্যতে পরবে না তার গ্যারান্টি কি? তাই! দেন ডিভোর্স!"
শ্রাবনী ভ্রুযুগল কুঁচকে যায়।
-" ছেলেকেও নিতে চায় নি?"
অরুণ না বোধক ইশারা করে। শ্রাবনী মাথা দুলায়।
-" আমার ডিভোর্সের কথা শুনবেন না?"
-" বলুন!"
শ্রাবনী মুচকি হেসে বলতে শুরু করে,
-" আমার এক্স হাজবেন্ড একটা জানোয়ার ছিলো। একজন মেয়েবাজ লোক সাথে মাতাল! আর্মি অফিসার ছিল! আমি জানতাম না প্রথমে। আমার এক ফ্রেন্ড আর্মিতে ছিলো। সে ইনফর্ম করে। সাথে কিছু ভিডিও। আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। তবে নিজেকে বুঝিয়েছি। ওকেও বুঝিয়ে ছিলাম। ও বলেছিল সব ছেড়ে দিবে। কিন্তু সেটা মুখেই। কিচ্ছু ছাড়ে নি। একদিন ঝগড়াও হয় বেশ। সেদিন প্রথম হাত তুলেছিলো। ব্যস চলে এসেছি! ওর লাথি গুতা সহ্যকরে সংসার করার মেয়ে আমি না! তাই ডিভোর্স!"
এরমধ্যেই অর্ডার চলে আসে। ওয়েটার ছেলেটা সব দিয়ে চলে যায়। অরুণ দেখে সব ফাস্টফুড। পিৎজা, বার্গার, মোমোস ইত্যাদি। সে কিছু নিলো না। শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে বলল,
-" দেখুন মিস শ্রাবনী আহসান! আমি ক্লিয়ার কথা বলতে চাই! আমার কাছে আমার ছেলে সবার আগে। সে একজন আম্মু চায় তাই বিয়ে টা করা। তো আপনার শুনলে খারাপ লাগতে পারে বাট আমি এমন কাউকে চাই যে আগে ছেলের আম্মু হবে, পরে সে আমার অর্ধাঙ্গী। তবে এমন না যে তাকে মেনে নেবো না বা ভালোবাসবো না। ইন মায় অপিনিয়ন ভালোবাসা টা একদিনে হয় না। ধীরে ধীরে মন কুঠিরে পরিস্ফুটিত হয়। যেটা একদিনে হয় সেটা ইনফ্যাচুয়েশন/ক্ষনিকের ভালোলাগা !তাই যে আমার জীবনে আসবে তাকে আগে আমার ছেলের আম্মু হতে হবে! পরে স্ত্রী! আমি আশা করছি আপনি বুঝতে পারছেন?"'
শ্রাবনী হাসে মনে মনে। পিৎজার স্লাইডে কামড় বসিয়ে কোল্ড ড্রিঙ্কসে চুমুক দেয়।
-" ছেলেকে খুব ভালোবাসেন বুঝি? বুঝতে পারছি। তবে আমি শুনেছি মা মরলে বাপ তাওঈ! যদিও আপনার ছেলের মা মরেনি ডিভোর্স হয়েছে। আপনি ছেলের জন্য মা খুঁজছেন। ভালো কথা! বিয়ের পর এই আপনিই চেঞ্জ হয়ে যাবেন। আয় এম নাইন্টি নাইন পার্সেন্ট সিওর। নতুন বউ নিয়ে মেতে থাকবেন!ছেলের থেকে একটু একটু করে দূরত্ব বাড়বে। তারপর আবার নতুন ঘরে ছেলে মেয়ে আসবে! তাদের সাথে থাকতে থাকতে দূরত্ব এতো বেড়ে যাবে আপনার তার কথা খেয়ালই থাকবে না। হয়তো তার নিডস গুলো পূরণ করবেন কিন্তু..!"
অরুণ শান্ত দৃষ্টিতে শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে। শ্রাবনীর কথা গুলো খুব একটা মিথ্যা নয় বাস্তব জীবনে। তবে তার ক্ষেত্রে কথাগুলো একদমই প্রযোজ্য হবে না। তার ছেলে তার কলিজা। কিভাবে ভুলে যাবে সে? ছোট থেকেই তার কোলে কোলেই মানুষ হয়েছে। মায়ের কোল কমই পেয়েছে। মা ভার্সিটির বিজি লেকচারার ছিল কিনা! সে শ্রাবনীকে থামিয়ে বলে,
-" আপনি নাইন্টি নাইন পার্সেন্ট সিওর বললেন বাকি ওয়ান পার্সেন্ট ইজ মি! আমার ছেলে আমার অক্সিজেন! আমার কোলেই বড় হয়েছে। দু বছরের ছেলেকে সাথে নিয়েই পুরো অফিস সামলিয়েছি! বাড়িতে রেখে যায় নি কখনো! যত ইম্পর্ট্যান্ট মিটিংই হোক না কেন তাকে বুকে জড়িয়েই মিটিং করেছি! শত ব্যস্ততার মাঝেও ছেলের সব আবদার পূরণ করেছি। তার নতুন আবদার আম্মু চাই! তার জন্যই এসব। মনে রাখবেন সব বাবা কিংবা মা এক হয় না!"
শ্রাবনী সিরিয়াস হয়ে বসে। অরুণের দিকে তাকিয়ে বলে,
-" আমার কথায় রাগ করলে স্যরি বাট এসব বাস্তবতা! আমার এক ফ্রেন্ড নিজে এর ভুক্তভোগী! "
অরুণ হাসে অল্প। ঘার পাশ ফিরাতেই দুই টেবিল দূরত্বে দেখতে পায় একটা মেয়ে হাই দিলো মুচকি হেসে। সেও প্রতিত্তরে হাই দিলো হাত নাড়িয়ে। মেয়েটা মিস পাতাবাহারের বোন লতা! তার সাথে লুবমান ও মিস পাতাবাহার! সে হাতের ইশারায় তাদের ডাকে। লতা লুবমান যেন এটারই অপেক্ষায় ছিল।
পাতা, লতা ,লুবমান কেনাকাটা শেষে রেস্টুরেন্টে আসে। ঢোকার সাথে সাথে অরুণের দিকে তাদের নজর পরে। পাশে আবার সুন্দরী মেয়ে। তাদের কৌতুহল আকাশচুম্বী। লুবমানের না হলেও লতার না জানা অবধি পেটের ভাত হজম হবে না। পাতা তো মুখ গম্ভীর করে রেখেছে স্টেশনারি থেকে আশার পর থেকেই।তারা ঝটপট উঠে অরুণদের টেবিলে বসে। চারটা আসন থাকায় প্রবলেম হয় না। অরুণ ভোরের জন্য কেনা জিনিস পত্র টেবিলে রাখে। সে চাইলে গাড়িতেই রেখে আসতে পারতো! কিন্তু তার হাতে নিয়ে ঘুরতেই ভালো লাগছিল কেমন যেন।
লতা বসে অরুণকে বলে,
-" আমি রেস্টুরেন্টে ঢোকার সময়ই আপনাদের দেখেছি! ভাইয়া হু ইজ সি?"
শ্রাবনী এদের আগমনে ঢের বিরক্ত। অরুণকে কিছু বলতে না দিয়ে শ্রাবনী হেসে বলে,
-" ফিয়ন্সে বলতে পারেন! আসলে দুজনের ফ্যামিলি থেকে বিয়ের কথা চলছে। আর আপনারা?"
অরুণ তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়,
-" ওনার নাম লতা। আমরা একই ভার্সিটিতে পড়েছি। আমার জুনিয়র আর ওনার হাসবেন্ডের সাথে চেনাজানা আছে আমার। আর উনি ওনার ভাই!"
লতা মাথা নাড়ে। শ্রাবনী লতাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে। প্রথম স্বামীর ধোঁকার পর সে ছেলেদের একটু কমই বিশ্বাস করে। আর লতা মেয়েটি দেখতে বেশ সুন্দরী। শ্রাবনী অরুণের দিকে তাকিয়ে বলে,
-" ওহ্।"
অরুণ সরকার শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে বললো,
-" তা আপনার কি মতামত এ বিয়েতে?"
শ্রাবনী লতা লুবমানের দিকে তাকিয়ে বলে,
-" আই থিংক আমাদের পার্সোনালি কথা বলা উচিত ছিলো! কোনো ব্যাপার না! অন্য সময়! আমি উঠছি!"
লতা তরিঘরি করে উঠে বলল,
-" ইশ আমরা ডিস্টার্ব করলাম আপনাদের। আপনারা কথা বলুন। আমরা যাচ্ছি! এই লুব ওঠ?"
শ্রাবনী হেসে বলে,
-" একদম না। আপনারা কথা বলুন আমার একজায়গায় যেতে হবে।ইটস ইমার্জেন্সি! আপনারা না এলেও যেতাম। মি. অরুণ আসি ?"
অরুণ মাথা নাড়ায়। শ্রাবনীর একটু রাগ হয়। মি. অরুণ তো একবার থেকে যাওয়ার অনুরোধ করতে পারতো! সে হন হন করে সেখান থেকে চলে যায়। লুবমান আফসোস করে বলে,
-" স্যরি ভাইয়া। আমাদের জন্য আপনাদের ডেটটা নষ্ট হয়ে গেল! ইশ উনি বোধহয় মাইন্ড করেছেন! উই আর রিয়েলি স্যরি! "
অরুণ সামনে ঝুঁকে টেবিলে কনুই ঠেকিয়ে অধরকোনে হালকা হাসি ঝুলিয়ে বলে,
-" স্যরি বলতে হবে না। বরং তোমাদের ধন্যবাদ! আই এম ইরিটেটিং উইথ হার কম্পানি! তোমরা এসে উপকার করলে!"
লতা চোখ ছোট ছোট করে বলে,
-" পছন্দ হয় নি তাই না ভাইয়া?"
অরুণ মাথা নাড়ে। হয় নি! মেয়েটা মা ম্যাটেরিয়াল না! তবে হ্যা খারাপও নয়।
লুবমান কপালে ভাঁজ ফেলে বলে,
-" আপুটা কিন্তু দেখতে ভালোই ছিল! পছন্দ কেন হলো না?"
অরুণ হেসে কাঁধ উঁচিয়ে পাশের দু টেবিল পরে পাতার দিকে একপল তাকিয়ে বলে,
-" কি জানি! তোমরা এখানে?"
-" কেন আসতে পারি না বুঝি? মধ্যবিত্তের আসতে নেই?"
লুবমানের কথায় অরুণের মুখশ্রী পুনরায় গম্ভীর হয়ে যায়।
-" আমি সেটা বলি নি! এখানে কারো সাথে এসেছো নাকি সেটা বলেছি!"
লুবমান অরুনের দিকে তাকিয়ে বলে,
-" আরে ভাই মজা করলাম তো! আপনার ছেলেকে আনেন নি?
অরুন মাথা নাড়ে আনে নি।লতা ভাইকে চোখ রাঙিয়ে অরুণকে বলে,
-" ওর কথায় কিছু মনে করবেন না ভাইয়া! এই কেনাকাটার পর এই দুই জনকে নিয়ে এলাম খাওয়াতে!"
-" তা আরেকজন কই?"
লতা খানিক দূরে বসা পাতার দিকে তাকিয়ে বলে,
-" ওই তো ! স্টেশনারি গিয়েছিল কিছু কিনতে। ওখান থেকে আসার পর থেকেই মুখ গম্ভীর বানিয়ে বসে আছে! ওর কথা বাদ দিন তো!"
অরুণ পাতার দিকে চায়। বাহ এই টুকুনি বিড়াল শাবকের আবার মুড! শপে সে পাতাকে দেখেছে! তার কথাও শুনেছে। তবে জবাব দিতে মন চায় নি! সে মিস পাতাবাহারকে আগেই দেখেছে! রাস্তা পার হতে পারছিলো না। সে শপ কিপারের কাছে লিস্ট দিয়ে এগিয়েও যায় হেল্প করতে। কিন্তু তার আগেই ট্রাফিক পুলিশ পার করে দেয়। তার সাথে হেসে হেসে কথাও বলছিলো আবার। সেটা দেখে তার রাগ হওয়ার কথা মোটেই না কিন্তু হয়েছিল! এর কারণ কি দাঁড়ালো! না এই মিস পাতাবাহারের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। মেয়েরা হলো চলতি ফিরতি মায়াবী নাগিন! কখন জালে ফেঁসে যায় কে জানে! লোকে জানলে ছিঃ ছিঃ করবে শুনলে যে হাঁটুর বয়সী মেয়ের জালে আটকা পড়েছে অরুণ সরকার!!
•••••••••••••
গোধূলি বেলা। চিলের দল উড়ে বেড়াচ্ছে নিচু দিগন্তে! সাথে রঙ বেরঙের ঘুড়িও দেখা যাচ্ছে। লতারা ওটোতে বসে আছে। গন্তব্য বাড়ি! লুবমান লতা টুকিটাকি কথা বললেও পাতা চুপ করেই আছে। চুপ কথা ভেঙে পাতা কৌতুহল মনে জিজ্ঞেস করে,
-" ওই নাক উঁচু ম্যানারলেস লোক কি বলছিলো তখন?"
লতা লুবমান তার দিকে তাকিয়ে তীক্ষ্ণ নজর ফেলে বলে,
-" কার কথা বলছিস?"
-" তোমার সিনিয়র ভাইয়াআআ ওরফে অরুণ সরকার!"
লতা কটমট করে চেয়ে বলে,
-" বাজে কথা বলবি না!"
-" বাহ রে বাজে কথা কি বললাম?"
-" তোর সিনিয়র ভাইয়াআআ বলার টোন বাজে ছিল!"
পাতা ভেংচি কেটে বলে,
-" তোমার মাইন্ড বাজে ছিলো! তা কি বললেন উনি? পাশের মেয়েটাই বা কে ছিলো?"
-" মেয়েটার সাথে তার বিয়ের কথা চলছিল বোধহয়। বাট ওনার পছন্দ হয়নি!"
পাতার কপাল কুঁচকে যায়।
-" ওনার পছন্দ হয়নি নাকি মেয়েটা রিজেক্ট করে দিয়েছে হু নোস! এই ওনার এক্স ওয়াইফকে চিনো? সেম ভার্সিটিতেই ছিলো শুনেছি!"
লতা মাথা নাড়ে।
-" হুম চিনি। মেয়েটার নাম বর্ষা। আমাদের দুই ব্যাচ সিনিয়র।দেখতে শুনতে অতটাও ভালো নয়! আবার খারাপও নয়। ঠিকঠাক আছে। অরুণ ভাইয়া তাকে বেশ ভালোবাসতো! তাদের প্রেমের গুঞ্জন তো পুরো ভার্সিটি ছড়িয়ে ছিল। দুজনকে একসঙ্গে প্রায়সই দেখা যেত। বেশ ভালো জুটি ছিল! "
-" এতো ভালোবাসা তাহলে ডিভোর্স কেন হলো?"
-" সেটা জানি না! হয়েছে হয়তো কিছু সিরিয়াস! এই তোর এতো ইন্টারেস্ট কেন? ক্রাশ টাশ খেয়েছিস নাকি? খেলে ভুলে যা! বান্দা সলিড তবে খুব ঝাঁঝালো!"
বলে হাসতে থাকে।লুবমান বোনকে কঠিন সুরে বলে,
-" আপু? এসব কি কথা! কোথায় পাতা আর সে! এক বাচ্চার বাপ বয়সও অনেক। তুই আমাদের পাতার সাথে তুলনা করছিস?"
-" আরে আমি তো মজা করছিলাম! তুই ও না! আর পাতা তুই তখন আসলি না কেন? অরুণ ভাইয়া তোর কথা জিজ্ঞেস করেছিলো!"
পাতা নাকের পাটা ফুলিয়ে বলে,
-" আমি তোমাদের মতো ছোচা না বুঝলে! এক দিনের পরিচয়! রেস্টুরেন্টে দেখা হলো ওমনি চলে গেলাম! কি ভাববে? যে খাওয়ার জন্য এসেছে ছোট লোক ভাববে না!"
-" যে যেমন ধারার সে তেমনি ভাববে!"
পাতা শান্ত দৃষ্টিতে বোনের দিকে চায়। লতা মিষ্টি করে বলে,
-" পাতু তুই এমন অসামাজিক কেন? বাচ্চা ছাড়া কারো সাথেই মিশতে পারিস না! একটা বন্ধুও নেই তোর!"
-" মিশে কি হবে! সবাই স্বার্থপর!দুনিয়ায় কেউ স্বার্থ ছাড়া কাজ করে না! সবাই স্বার্থপর বুঝলে আপু! স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে মানুষকেও ভুলে যেতে দুদন্ড ভাবে না। আর বাচ্চারা ওরা তো স্বার্থ চেনে না! ওদের মন নিষ্পাপ হয়!
•••••••••••••
স্নিগ্ধ সকাল। সূর্য উঠেছে দূর নীলিমায়। তার আলোর ঝলকানিতে আজকের পরিবেশ যেন বেশ ঝলমলিয়ে আছে। সাথে গরম ফ্রি! অরুণ আজ সকাল সকাল উঠে গোসল সেরে তার ঘরে বেলকনিতে অবস্থানরত সব গাছে পানি দেয়।আজ আর মর্নিং ওয়াকে যায় নি। ছেলেটার এক্সাম কত ব্যস্ততা তার! তার উপর ছেলের আবদার তাকে সাথে যেতে হবে। শুধু তাই না এক্সাম শেষ হওয়ার অবধি সেখানে থেকে তাকে নিয়ে ফিরতে হবে। অরুণ বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেয়। ভোরকে ডেকে তুলে কোলে করে ওয়াশ রুমে নিয়ে ফ্রেশ করিয়ে ব্রাশ করে দিলো। গোসল করিয়ে কোমড়ে তোয়ালে ঝুলিয়ে রুমে এনে বিছানায় দাঁড় করিয়ে চুল মুছে দিতে থাকে। ভোর মুখ ফুলিয়ে নিয়েছে।
-" আব্বু এখনো অনেক সময় বাকি আরেকটু ঘুমিয়ে নিতে পারতাম আমি!"
অরুণ হেসে ছেলের গালে চুমু দিয়ে তোয়ালে বেলকনিতে রেখে এসে আলমারি থেকে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট বের করে বলে,
-" আব্বু আজ তোমার পরীক্ষা আছে। সব পড়াগুলো রিভাইস দিতে হবে না?
-" কতবার পড়লাম তো! আরো? আমি আর পড়বো না!"
-" শুধু একবার কলিজা?"
ভোর কিছু বলে না। অরুণ তার তোয়ালে খুলে প্যান্ট পড়িয়ে দিলো। ছেলেকে বুকে নিয়ে রুম থেকে বেরোতে বেরোতে বলে,
-" আনি বুড়ি সেই কখন উঠে পড়া শুরু করে দিয়েছে! দুই তিনবার রিভাইস দেয়া হয়েছেই বোধহয়!"
ভোর কিছু বলে না। অরুণ ছেলেকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামে। কিচেনে গিয়ে দেখে মিনু রান্না করছে সকালের। ভোর তাকে দেখে অরুণের কোল থেকে নেমে দৌড়ে তার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
-" মিনু খালা কি রান্না করছো তুমি?"
মিনু হেসে তাকে তুলে কেবিনেটের উপর বসিয়ে কপালে চুমু দেয়।
-" এই তো! ফিরনি বসিয়েছি। চা বানাবো, রুটি, অমলেট, ভাজি!"
-" আমি কি খাবো?"
-" তুমি আমার হাতে মার খাবে ভোর!"
ভোর বাবার দিকে চায় ঠোঁট উল্টে।আভারি এসে ভোরের মাথায় হাত বুলিয়ে অরুণকে বলে,
-" কি কইরেছে স্যার ?"
ভোর আভারির কোলে উঠে বলে,
-" কিছুই করি নি আমি! তোমার স্যার এমনিতেই বকে আমায়!"
আভারি স্যারের দিকে চায়। অরুণ চোখ ছোট ছোট করে বলে,
-" আচ্ছা তাই না? কেন বকি? একটু পরে এক্সাম না তোমার? পড়তে হবে না?"
-" সব পড়া কমপ্লিট আমার! আর পড়তে হবে না! আমি পড়বোও না। না মানে না!
চিল্লিয়ে বলে ভোর। অরুণ চোখ রাঙায়। ব্যস ভোরের চোখে অশ্রু ভরে ওঠে। অরুণ দেখে বলে,
-" একদম কাঁদবে না!"
ভোর আভারিকে জড়িয়ে কান্না শুরু করে দেয়। অরুণ এগিয়ে এসে আভারির কোল থেকে ভোরকে নিলো ।মিনুকে উদ্দেশ্য করে বলে,
-" একগ্লাস গরম দুধ হরলিক্স মিশিয়ে আনো।"
মিনু মাথা নাড়ায়। অরুণ ভোরকে কোলে নিয়ে রুমে যায়। বিছানায় বসিয়ে বই খাতা এনে ভোরের সামনে দিয়ে পাশে বসে। পাতা বাহার কম্ফোর্টের ভিতর থেকে বেরিয়ে ভোরের কোলে বসে মিও মিও করে। ভোর মুখ ফুলিয়ে নাক টেনে তাকে সরিয়ে দেয়। অরুণ উঠে টিস্যু বক্স এনে ছেলের নাক পরিষ্কার করে বলে,
-" যতই বাহানা কর রিভাইস তোমাকে দিতেই হবে! নইলে সারপ্রাইজ পাবে না!"
ভোর বাবার দিকে তাকিয়ে গাল ফুলিয়ে বলে,
-" আগে বলো কি সারপ্রাইজ তবেই পড়বো!"
-" না পড়লে বলবো না!
-" না বললে পড়বো না!"
-" তোমার কথা না আমার কথা?"
-" আমার কথা!"
অরুণ জেদি ভোরের সামনে নত হয়।
-" আব্বু বাইক কিনেছি! আজ আমরা বাইকে চড়ে স্কুলে যাবো"
ভোর চোখ বড় বড় করে বাবার দিকে চায়। হেসে বাবার গলা জড়িয়ে ধরে।
-" আব্বু বাইক আমি চালাবো?"
অরুণ ভোরকে কোলে বসিয়ে খাতা বের করে লিখতে দেয়।
-" অবশ্যই! তবে আগে তোমার লাইসেন্স দরকার হবে। সেটার জন্য আগে পড়াশোনা করে বড় হতে হবে! বুঝলে সোনা?"
.
.
.
চলবে.......................................................................