মাই মিস্টিরিয়াস প্রিন্স - পর্ব ২৪ - মৌমিতা মৌ - ধারাবাহিক গল্প


ব্রেক টাইম চলছে, আর অনন্যা প্রচন্ড রাগে ফুঁসছে। কিছুক্ষণ আগের ঘটনা বার বার তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে, আর রাগের তীব্রতা বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরে কৌশিক স্যারের আচরণ আর কোনোভাবেই স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। সেদিন, স্যারের কাছাকাছি আসার পর সবকিছু ঠিক ছিল, কিন্তু এরপর কেন এমন বদলে গেলো? এখন প্রতিদিন যেন শুধুই কথা দিয়ে আঘাত করা, খারাপ ব্যবহার করা, ক্লাসে সবার সামনে অপমান করা, ইচ্ছে হলেই পুরো ক্লাসে সবার সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা এসব দেখতে দেখতে অনন্যা একদম অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। এক বা দুই দিন সহ্য করা সম্ভব ছিল, কিন্তু এখন প্রায় দিনই এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে অনন্যা, সেটা উনার বাসায় হোক অথবা ভার্সিটিতে। অনন্যা বুঝতে পারছে না, কেন স্যার তার সঙ্গে এমন বিরূপ আচরণ করছেন। সেদিন রাতে তো একেবারে কাছে টেনে নিয়েছিলেন, কিন্তু এরপর হঠাৎ এতো মেজাজী হয়ে গেলো কেনো? অনন্যার জন্য সবসময় বকাঝকা প্রস্তুত থাকবেই। এতো এতো প্রশ্নের মাঝে অনন্যা বাজেভাবে আটকা পড়ে গেছে।

নোহারা অনন্যার রাগ দেখে হেসে উঠলো এবং বান্ধবীর পিঠে চাপড় মেরে বললো,
"আর কতো ফুস ফুস করবি?"

অনন্যা চোখ গরম করে বললো,
"তোর সাথে কিছু হয় না বলে তুই হাসছিস! যা হয় আমার সাথে। ওই স্যার আমাকে কী মনে করেছে? যখন ইচ্ছে করবে অপমান করবে, দাঁড় করিয়ে রাখবে। যখন ইচ্ছে করবে বের করে দেবে আর যখন ইচ্ছা করবে কাছে টেনে...!"

অনন্যা বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেলো। মুখ ঘুরিয়ে নোহারার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো। নোহারা চোখ সঙ্কুচিত করে ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
"কী বললি? কাছে টেনে? কৌশিক স্যার তোকে কাছে টেনেছে??"

অনন্যা বিরক্ত হয়ে বললো,
"না মানে ভুলে বের হয়ে গেছে কিন্তু যা করেছে, খুব খারাপ করেছে। আমার এতো রাগ উঠেছিল, ইচ্ছে করছিল এই দুই হাতের মধ্যে স্যারকে নিয়ে মুচড়ে সব মেজাজের রস বের করি। যত্তসব ঝামেলা আমার সাথেই হয়। শুধু শুধু আমার ইমেজ নষ্ট করছে, উফফ!"

নোহারা হেসে বললো,
"থাক। স্যারকে নিয়ে আর খারাপ কথা বলিস না। কারণ আমার খারাপ লাগে।"

অনন্যা আড়চোখে নোহারার দিকে তাকিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে বসলো। নোহারা বুঝতে পারল যে, অনন্যা রেগে গেছে। তাই সে ধীরে ধীরে বাম হাত দিয়ে অনন্যার গলা জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে বললো,
"তুই বেশি ভাবছিস! স্যার ভালো আছে।"

অনন্যা উত্তেজিত হয়ে উত্তর দিলো,
"আমি না, তুই বেশি ভাবছিস। স্যারকে মাথায় চড়াচ্ছিস।"

"ফিজিক্স ক্লাসে তোকে প্রশ্ন করেছিল, তুই আবারও উত্তর দিতে পারিসনি। কিন্তু স্যার আগের ক্লাসে এটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। এদিকে তোর দোষ! উনি নিজের কাজ করছেন, পড়াচ্ছেন। তুই রিভাইজ করে আসিসনি কেনো? কালকে বন্ধ, এরপর কুইজ। ঠিকমতো পড় নাহলে তোকে কেলাবে!"

অনন্যা কাঁটায় কাঁটায় উত্তর দিলো,
"আমাকে যেটা জিজ্ঞেস করেছিল, সেটা অনেক গভীর টপিক। আচ্ছা, উত্তরটা তুই পারিস কিনা সেটা বল!"

নোহারা ঠোঁট উল্টে দুদিকে মাথা নাড়লো। অনন্যা তাচ্ছিল্যের সাথে হেসে বললো,
"হেহ, নিজেই পারে না, আবার আমাকে জ্ঞান দিতে আসছে! হুহ! আমি বলি, উনার সমস্যা আমাকে নিয়ে। আমি উনার কোনো ক্লাসই করবো না। বদ লোক একটা!"

নোহারা কিছুটা চিন্তিত হয়ে বললো,
"আহা, এতো রাগছিস কেনো? তারপর আরেকটা কথা, হিস্ট্রি কোর্সে আরণ্যক তোর সাথে বসে পড়েছিল সেদিন। তোর সাথে কথা বলার চেষ্টা করছিল, স্যারের ডিস্টার্ব হচ্ছিল, এজন্য তোকে বের করে দিয়েছে। হুম এটাও হতে পারে যে, স্যার তোকে পছন্দ করে।"

অনন্যা রেগে গিয়ে বললো,
"তোর মাথা! এই ব্যাটা আমাকে পছন্দ না! অনেক অনেক অপছন্দ করে! এজন্যই দেখতে পারে না। সে চায় না, যাতে আমি ক্লাসে বসি, যাতে আমি পরীক্ষায় ভালো করি। নাহলে কেনো আমাকেই বের করবে?আমিই কেনো? আরণ্যককে বের করুক! কথা তো ও বলেছে, আমি তো না!"

নোহারা অনন্যার সাথে কথায় পেরে উঠলে না। অনন্যার হাত ধরে বললো,
" হইছে , চল ক্যান্টিনে। খিদে পেয়েছে।"

অনন্যা মুখ ফুলিয়ে মাথা নেড়ে না জানালো, কিন্তু নোহারা থামলো না। টেনেটুনে নিয়ে গেলো অনন্যাকে। নোহারা বেশিরভাগ সময় জিন্স প্যান্ট আর লম্বা টিশার্ট বা শার্ট পড়ে থাকে, তার স্টাইলটা এমনই। ট্রেডিশনাল ড্রেসে তাকে কমই দেখা যায়। চিকন গড়ন বলে খুব সুন্দর মানায় ওকে, আর পিছনে ছোটোখাটো একটা ব্যাগ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

ক্যান্টিনের দিকে হাঁটতে হাঁটতে, হঠাৎ নোহারা থেমে গেলো। অনন্যার দিকে তাকিয়ে বড় বড় চোখে বললো,
"আমার হঠাৎ একটা কথা মনে পড়েছে। অনেক বড় কথা!"

অনন্যা বিস্মিত হয়ে চোখের পলক ফেলে জিজ্ঞেস করলো,
"কি কথা?"

নোহারা ঢোক গিলে বললো,
"আমি না ভ্যাম্পায়ার দেখেছি!"

"কিহ!"
অনন্যা বিস্মিত হলো।

"হু! জানতাম তুই অবাক হবি!"

"ধুর! স্বপ্নে দেখেছিস দেখ গিয়ে!"
অনন্যা পাত্তা না দিয়ে সামনে হাঁটতে লাগলো। নোহারা তাকে থামিয়ে বললো,
"আমি জানতাম তুই বিশ্বাস করবি না।"

অনন্যা প্রশ্নবিদ্ধ চাহনি নিয়ে উল্টো ঘুরে তাকালো। নোহারা অনন্যার সামনে এসে বললো,
"আমি সত্যিই দেখেছি। কয়েকদিন আগে শপ থেকে ফিরছিলাম। আমাদের বাসায় যেতে একটা গলি দেখিয়ে ছিলাম না তোকে?"

অনন্যা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। নোহারা গম্ভীর হয়ে বললো,
"সেই গলিতে লাল চোখের ভ্যাম্পায়ার দেখেছি। আরেকটু হলেই একটা মেয়ের রক্ত নিঃশেষ করে ফেলতো। কিন্তু আমি তাদের মাঝে এসে পড়েছিলাম বলে আর সম্ভব হয়নি।"

"সত্যি?" অনন্যা হকচকিয়ে বললো।

"হু! ওনার বয়স ৫০ এর কাছাকাছি।"

"সত্যিই কী ভ্যাম্পায়ার পৃথিবীতে আছে?"

"আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, কিন্তু নিজের চোখে যা দেখেছি, তাই তো বললাম। আরেকটু হলে আমাকে শেষ করে দিতো, কিন্তু কপাল ভালো ছিল, বেঁচে গিয়েছিলাম। পরে যখন আমার সঙ্গে কথা বলছিল, একদম স্বাভাবিক লাগছিল, একজন সাধারণ মানুষ মনে হচ্ছিল। চোখের লাল মণি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। " 
নোহারা গভীর স্বরে বলল।

নোহারা কথা বলছে, আর অনন্যার মাথায় ঝড় উঠছে। হঠাৎই কৌশিক স্যারের কথা মনে পড়ে গেল। সেই নীল মণির চোখ! সেদিন অন্ধকারে তার মণি নীল আলোয় জ্বলজ্বল করছিল। কী ভয়ঙ্কর ছিল সেই মুহূর্ত! তার মানে... কৌশিক স্যারও কি.....!

অনন্যার মনে শীতল স্রোত বয়ে গেল। ভেতরে ভেতরে ভয় চেপে বসছে। লোকটা তাকে শেষ করে দেবে না তো? কিন্তু মে/রে ফেললে এতো অপেক্ষা কেন? প্রথম দিনই তো করতে পারত! কেন এমন আচরণ করছে? লোকটার সমস্যা আসলে কী? নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, যার জন্য এখনো সে জীবিত।

চিন্তার ভারে মাথা দপদপ করছে অনন্যার। যেন একপাল অশান্ত ঘোড়া মনের মধ্যে ছুটে বেড়াচ্ছে।

অনন্যা আতংকিত কণ্ঠে নোহারার দিকে তাকিয়ে বললো,
"দোস্ত, সাবধানে থাকিস। ওই লোকটার সাথে আর কথা বলিস না। তোকে যদি কিছু করে দেয়?"

নোহারা মাথা নাড়লো।

••••••••••••••

নোহারা প্রতিদিনের মতো শপ থেকে বেরিয়েছে। গতবারের ঘটনার পর থেকে ভেস্পার সাহেবকে আর দেখেনি। মনে মনে ভাবল, না দেখাই ভালো। যে মানুষই নয়, তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাই শ্রেয়। কে জানে, কার মনে কী আছে।

রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ বাসা থেকে ফোন এলো। নোহারা রাস্তার এক কোণে দাঁড়িয়ে দ্রুত ফোনে কথা সেরে নিলো। ফোন রেখে যখন আবার হাঁটতে শুরু করল, তখন চোখে পড়ল এক অদ্ভুত দৃশ্য।

সেই একই গলির সামনে দাঁড়িয়ে আছে নিক।

নোহারা চমকে উঠে দ্রুত এক দোকানের সামনে নিজেকে আড়াল করল। দূর থেকে দেখল, নিক কিছুক্ষণ সামনে হাঁটছে, আবার থেমে চারপাশে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। মনে হচ্ছে কাউকে খুঁজছে। তারপর আবার উল্টো দিকে হাঁটতে শুরু করেছে। কিছুটা দূর গিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়াল সে এবং গলির সামনে এসে স্থির হলো।

নোহারা তার গতিবিধি গভীরভাবে লক্ষ করল। কিন্তু এই লোকটা এই গলির সামনে কাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে? কয়েক দিন তো লোকটাকে এখানে দেখা যায়নি। তাহলে আজ?

নোহারা ঘড়ির দিকে একবার তাকালো। সময় বেশ গড়িয়ে গেছে। বাসায় ফিরে রান্নার কাজও বাকি। ভেতরে ভেতরে কিছুটা অস্থির লাগছিল। অন্য রাস্তা দিয়ে গেলে দেরি আরও বেড়ে যাবে। তাছাড়া ওই রাস্তা ঘুরে যেতে সময় বেশি লাগবে। কিন্তু সোজা গেলে সরাসরি লোকটার সামনে পড়তে হতে পারে।

নিজের ভেতরের দ্বিধা সামলে নোহারা সিদ্ধান্ত নিলো, লোকটাকে না দেখার ভান করে সামনে দিয়ে চলে যাবে। এটা হয়তো সহজতর পথ। একটু সোজা হয়ে, মাথা উঁচু করে হেঁটে যাবে, যেন কিছুই জানে না, দেখেও দেখছে না।

নোহারা ধীর পায়ে রাস্তার পাশ থেকে বেরিয়ে এল। তার পায়ের শব্দ রাস্তার নীরবতাকে খানিকটা ভাঙল। সে সোজা হাঁটছে, কিন্তু ভেতরে টান টান এক অনুভূতি, বুক ধড়ফড় করছে। ব্যাগের ফিতা শক্ত করে আঁকড়ে ধরে মনের ভয় দূর করতে চাইলো সে।

অন্যদিকে, নিক তার উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়েছিল। হঠাৎ চোখে পড়ল নোহারাকে। বুকের ভেতর থেকে গভীর একটা শ্বাস বের হলো। যেন অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর অবশেষে খুঁজে পেল। নিকের চোখ যেন নোহারাকে পেয়ে জ্বলজ্বল করছে।

নিক একটু এগিয়ে এল নোহারার দিকে, ধীরে ধীরে। কিন্তু নোহারা তার উপস্থিতি পুরোপুরি উপেক্ষা করল। সে সোজা এগিয়ে গিয়ে পাশের গলিতে ঢুকে গেল।

নিক নোহারার এমন উদ্ভট আচরণে ভ্রু কুঞ্চিত করে ফেললো। কিছুক্ষণ থেমে নোহারার পিছন পিছন যেতে লাগলো।গলি থেকে বের হওয়ার কিছু পূর্বে নিক জোর গলায় বললো,
"লিটিল গার্ল! সেদিন ছেড়ে দিয়েছিলাম বলে আজ এই প্রতিদান?"

নোহারা থমকে দাঁড়ালো, হৃৎপিণ্ড হঠাৎ করে জোরে জোরে আওয়াজ করছে। উফফ! যেটার ভয় পাচ্ছিল সেটাই হলো। ধরা পড়ে গেছে! এখন নোহারা কি করবে বুঝতে পারছে না। এই রাস্তা দিয়ে কী দৌড়ে পালাবে নাকি কথা বলবে লোকটার সাথে? ভাবতে ভাবতে নিকই সামনে এসে দাঁড়ালো।

নোহারা ঠোঁট বড় করে হাসার চেষ্টা করলো, হাত নাড়িয়ে বললো,
"হ্যালো, সন্ধ্যা ব্রো! আপনি এখানে?"

"হু! না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিলে কেন?"

নোহারা দুদিকে মাথা নাড়িয়ে উচ্ছসিত হয়ে বললো,
"কই না তো! আমি তো আপনাকে খেয়ালই করিনি।"

নিক কিছুটা কাছে এসে নোহারার ললাটে নিজের ফর্সা ললাট দিয়ে আঘাত করলো। আহ শব্দ করে নোহারা দুই কদম পিছে সরে গেলো। চোখ বড় করে তাকালো নিকের দিকে।

নিক বাঁকা হেসে বললো,
"মিথ্যে বলো কেনো?"

"না আমি মিথ্যে বলছি না। সত্যি!"

নিক কিছুটা কাছে এসে নোহারার চোখে তাকালো। নোহারা দ্রুত মাথা নামিয়ে নিলো। নিক ফিসফিসিয়ে উচ্চারণ করলো,
"ভয় পাচ্ছো আমাকে?"

"না কে~নো ভয় পাবো?"

নিক মেয়েটার শক্ত হয়ে থাকা হাতের মুঠো দেখেই ফিক করে হেসে ফেললো। একটু নিচু হয়ে বললো,
"রিলেক্স! আমি তোমাকে হার্ট করবো না। "

নোহারা মুখ তুলে চাইলো নিকের দিকে। চোখে বিস্ময় প্রকাশ পেলো। নিক আচমকা নোহারার হাতের মুঠো শক্ত করে ধরলো, আদেশ দিলো,
"চলো!"

আতংকিত কণ্ঠ নোহারার, দ্রুত বললো,
"কোথায়?"

"যেখানে আমি নিয়ে যাবো!"

"আমার খিদে পেয়েছে, বাসায় যাবো। এছাড়া পড়াশোনা ও আছে।"
নোহারা সাফাই দিতে চাইলো।

নিক মৃদু হাসলো। কিছু বললো না, নোহারার হাতের মুঠি ধরে সোজা হাঁটতে লাগলো। নোহারা হতভম্ব হয়ে গেলো। সে হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু হচ্ছে না। লোকটা এতো শক্ত করে ধরে রেখেছে যে নিজেকে ছাড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে। লোকটা কোথায় নিয়ে যাবে তাকে? এই রাতের বেলা নিজের জীবনকে ধ্বংস হতে দেখতে পারে না নোহারা। চিৎকার চেঁচামেচি করতে ইচ্ছে করছে। করবে কী?
.
.
.
চলবে........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp