মেহুল ধীরে ধীরে পা টানতে টানতে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে কম্পাসে এসে দাঁড়ায়। তার পাশেই কলি, ইকরা আর লামিয়া। ভেবেছিল অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিয়ে সোজা বাড়ি চলে যাবে। কিন্তু মনে হলো বাড়ির সেই একঘেয়ে পরিবেশের চেয়ে ভার্সিটিতে থাকাই ভালো। এখানে থাকলে অন্তত নিজেকে ব্যস্ত রাখা যাবে, দুঃখ কেটে যাবে, কিছু সময়ের জন্য হলেও দুঃখ তাকে এসে ছুঁতে পারবে না। ঠিক তখনই কলি বলে উঠল, "ওই মেহুল! এটা তোর কাজিন শেরাজ ভাই না?"
মেহুল চমকে উঠে সামনে তাকায়। সত্যি তাই! শেরাজ এগিয়ে আসছে। ফরমাল ড্রেস-আপ, পুরো কালোতে মোড়া। চোখে সানগ্লাস, হাতে দামী ঘড়ি, চুলগুলো নিখুঁতভাবে সেট করা। যেন কোনো রূপকথার রাজপুত্র। যে রাজপুত্রকে সব মেয়েরা নিজের সঙ্গী হিসেবে চায়। কম্পাসে অবস্থিত কম বেশি স্টুডেন্ট সবাই দেখছে শেরাজকে।
লামিয়া ভাবুক কন্ঠে বলল, "কিন্তু মেহুল আমার জানা মতে তোর শেরাজ ভাই তো প্যারিসে ছিল! বাংলাদেশে আসলো কবে রে?"
মেহুল কিছু বলতে নিবে ঠিক তখনই কলি বিমোহিত হয়ে বলল, "ইস, মেহুল! তোর শেরাজ ভাই তো বাস্তবে হেব্বি হ্যান্ডসাম! ফেসবুকে ছবি দেখেছি, কিন্তু বাস্তবে তো পুরাই হিরো!"
মেহুল নিঃশ্বাস ছেড়ে বিড়বিড় করে বলল, "প্রকৃতি দেখতে যতটা সুন্দর, ঠিক ততটাই ভয়ংকর। তেমনি শেরাজ ভাই বাইরে থেকে দেখতে যতটা সুদর্শন ভেতর থেকে তার চেয়েও ভয়ংকর।"
কলি ভ্রু কুঁচকে বলল, "কিছু বললি?"
মেহুল তড়িঘড়ি বলল, "কিছু না, চল এখান থেকে।"
কলি বিস্মিত হয়ে বলল, "আরে! শেরাজ ভাই তো তোর দিকেই আসছে তাহলে চলে যাবি কেন? নিশ্চিয় তোকে নিতে এসেছে।"
ইতিমধ্যে শেরাজ মেহুলের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। ধীরগতিতে চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে সরাসরি তাকালো মেহুলের দিকে। তীক্ষ্ণ চাহনি শেরাজের। এই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যেন শরীরের ভেতর পর্যন্ত বিদ্ধ করে যাচ্ছে মেহুলের। মেহুল ঢোক গিলে দ্রুত চোখ ফিরিয়ে নেয়।
এই লোক তার ভার্সিটিতে কেন এসেছে? কী চাই তার? অবশ্য শেরাজও এখান থেকেই গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। সেই হিসেবে এটা শেরাজেরও ভার্সিটি। হয়তো ভার্সিটিতে এসেছে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে অথবা অন্য কোনো কাজে। দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু শিক্ষার্থী ভার্সিটির বড় ভাই হওয়ার দরুণ শেরাজকে সালাম দিচ্ছে। শেরাজও মাথা নাড়িয়ে সালাম নিচ্ছে।
একসময় ভার্সিটিতে শেরাজের প্রতাপ ছিল, তার পুরনো দাপট এখনো অনেকের মনে আছে। শেরাজের অতীতের কীর্তিকলাপ কমবেশি সবাই জানে। শেরাজ সানগ্লাসটা ব্লেজারের বুক পকেটে রেখে গম্ভীর স্বরে আদেশ ছুড়ে দিলো, "চল।"
মেহুল হতভম্ব হয়ে তাকায়, "মানে?"
শেরাজ নির্লিপ্তভাবে বলল, "বাংলা বুঝিস না? তোকে আমার সাথে যেতে বললাম।"
মেহুল মুখ ফিরিয়ে নিয়ে কঠিন গলায় বলল, "যাবো না আমি।"
শেরাজের ভ্রু কুঁচকে গেল, "কেন?"
"আমার ইচ্ছা তাই।"
শেরাজ চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে নৈঃশব্দ্যে হেসে “চ” সূচক শব্দ উচ্চারণ করে বলল, "এখন তোর এই ফালতু ইচ্ছাটাকে মাটি চাপা দিয়ে আমার সাথে চল।"
"তুমি বাংলা বোঝো না? আমি বলেছি তো যাবো না।"
শেরাজের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। এই পুচকি মেয়ে! তার কথা তাকেই ফিরিয়ে দিচ্ছে? ইচ্ছে করছে এক ঝটকায় হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে কিন্তু চারপাশের এত শিক্ষার্থী, এত শিক্ষক আছে তাই আর বেশি বাড়াবাড়ি করল না।
কিন্তু যদি একান্ত দরকার পড়ে বাড়াবাড়ি করার তাহলে সে বাড়াবাড়ির চরম পর্যায়ে যাবে। হয় বাড়াবাড়ি করবে না আর যদি বাড়াবাড়ি করে তাহলে ইতিহাস করে তবেই ছাড়বে।
শেরাজ নিজের রাগ সংযত করে বলল, "এক কথা বারবার বলতে আমি পছন্দ করি না মেহুল। সেটা তুই খুব ভালো করেই জানিস। তাই যা বলছি চুপচাপ সেটা কর।"
মেহুল সমান তালে উত্তর দিলো, "সেইম টু ইউ। আমিও পছন্দ করি না।"
শেরাজ রাগে মাটিতে পা দিয়ে আঘাত করতে নিলে নিজেকে সামলে নিলো। কিছু বলার জন্য মুখ খুলবে ঠিক তখনই—পেছন থেকে ভেসে এলো গম্ভীর, দৃঢ় এক পুরুষালী কণ্ঠ।
"আরে শেরাজ, তুমি এখানে?"
শেরাজ পেছন ফিরে তাকালো। ইকবাল স্যার তার দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে আছেন। একসময় শেরাজ ছিল ইকবাল স্যারের প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে শীর্ষে। স্যারের মুখে চিরচেনা স্নেহমাখা হাসি। শেরাজ ভদ্রতার হাসি ফেলে বলল, "জী স্যার।"
"কেমন আছো? কবে এসেছো দেশে?"
"গতকাল এসেছি, স্যার।"
দুজনেই কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। মেহুল এই সুযোগটাই কাজে লাগালো! ধীরে ধীরে পেছিয়ে গেল সে। কলি, ইকরা, লামিয়া অবাক হয়ে দেখছে বান্ধবীর কার্যকলাপ। কি হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছে না। শেরাজ যখন বুঝতে পারলো মেহুল তাকে ফাঁকি দিয়ে চলে যাচ্ছে তখনই ইকবাল স্যারকে বলল, "স্যার, আমি আপনার সাথে পরে কথা বলি। আমার একটা কাজ আছে।"
ইকবাল স্যার হেসে বললেন, "হ্যাঁ হ্যাঁ যাও।"
মেহুল যখনই করিডোরে পা রাখতে যাবে তখনই কেউ তার কব্জি চেপে ধরে সামনে ফিরিয়ে নিয়ে হুংকার ছেড়ে বলল, "খুব বেশি সাহসী হয়ে গেছিস না? তোকে কী বলেছি আমি? আমার সাথে যাওয়ার জন্য আর তুই সেই কথাটা অমান্য করছিস কোন সাহসে?"
শেরাজের শক্ত হাতে বাঁধা পড়ে গেল মেহুলের ছোট, নরম কব্জি।মেহুল ছটফট করতে লাগল বাঁধন ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করল, "কি করছো তুমি শেরাজ ভাই? হাতটা ছাড়ো! সবাই দেখছে আমাদের!"
শেরাজ চারপাশে তাকাতেই শিক্ষার্থীরা দ্রুত নজর সরিয়ে নিল যেন কিছুই দেখেনি। শেরাজ এবার চোখ সরাসরি মেহুলের মুখের উপর রেখে ভয়াবহ শান্ত স্বরে বলল, "চুপচাপ আমার সাথে চল। না হলে এর থেকেও বেশি বাড়াবাড়ি করব।"
মেহুল এবার ধৈর্য হারিয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠল, "আমি বলছি তো যাবো না!"
শেরাজ চোখ সরু করল, "যাবি না তাই তো?"
স্পষ্ট জবাব দিল মেহুল, "না!"
শেরাজ ঠোঁট চেপে গম্ভীর কণ্ঠে বলল, "এই মুহূর্তে যা হবে তার জন্য একমাত্র দায়ী থাকবি তুই। কারণ কাজটা করতে তুই আমায় বাধ্য করেছিস। এর দায়ভার সম্পূর্ণ তোর।"
মেহুল অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। কি করার কথা বলছে এই লোক? কি এমন করবে যার সম্পূর্ণ দায়ভার তার উপরে এসে পড়বে। এই কথার মানে কি? শেরাজ একটু ঝুঁকে এলো মেহুলের দিকে। স্বভাববশত মেহুল নিজের শরীরটা পেছনে সরিয়ে নিল। শেরাজ খুব আস্তে, ফিসফিস করে বলল।
"আই লাভ ইউর ঘাড়ত্যাড়ামি বাট... "
কথাটা শেষ হওয়ার আগেই যা ঘটল সেটা মেহুল স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারে নি। এক নিমেষে শেরাজ নিজের কোমর বাঁকিয়ে মেহুলকে পাজাকোলা তুলে নিল। মেহুল স্তব্ধ, বিমূর্ত! অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চারপাশের শিক্ষার্থীরা বিস্মিত চোখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। স্টুডেন্ট তো বটেই, কয়েকজন শিক্ষকও হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। যদিও বা কিছু কিছু শিক্ষক শেরাজের চরিত্র সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানে। তাই শেরাজের এই কাজে তেমন অবাক হয় নি। পুরো ক্যাম্পাস যেন কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেছে। শেরাজের চোখে ফুটে উঠেছে অদ্ভুত এক দৃঢ়তা। মুখে সেই চিরচেনা গম্ভীর অভিব্যক্তি। সবাই দেখছে! সবাই ফিসফিস করছে! কিন্তু শেরাজের যেন তাতে কিছুই যায় আসে না। তার ঠোঁটে হালকা এক ব্যঙ্গাত্মক হাসি খেলে গেল। চারপাশের সকলের কৌতূহলী দৃষ্টি উপেক্ষা করে রাশভারি কণ্ঠে বলল।
"বাট এতোটাও ভালোবাসি না তোর ঘাড়ত্যাড়ামিকে!"
শব্দগুলো যেন বজ্রের মতো আছড়ে পড়ল মেহুলের কানে। শেরাজ মেহুলকে কোলে তুলে নিয়ে সামনের দিকে এগুতেই আশেপাশের সবাই একটু সরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ক্যাম্পাসের পরিবেশ বদলে যায় চারদিকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। শেরাজ আর মেহুল যে কাজিন তা প্রায় সবাই জানে তবুও এমন দৃশ্য কেউ কল্পনাও করে নি। মেহুল লজ্জায় হতভম্ব হয়ে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না। চোখ বন্ধ করে রেখেছে সে।
শেরাজ নির্বিকার ভঙ্গিতে মেহুলকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ির দরজা লক করে দেয় যার দরুণ মেহুল চাইলেও গাড়ি থেকে নামতে পারছে না। মেহুল একরাশ ক্ষোভ নিয়ে বলল।
"তুমি এমনটা করতে পারো না, শেরাজ ভাই!"
শেরাজ ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি টেনে সিটবেল্ট লাগাতে লাগাতে বলে, "তাই? তাহলে কী করতে পারি?"
মেহুলের চোখ জ্বলে ওঠে, সে হুংকার দিয়ে বলে, "আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ! আমাকে তুমি জোর করতে পারো না!"
শেরাজ স্টিয়ারিংয়ে কনুই রাখে, চোখে বিদ্রূপের ছায়া। সে মেহুলের দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে বলে, "প্রাপ্তবয়স্ক বানান কর তো?"
মেহুল চোখ কপালে তোলে, "মানে?"
শেরাজ গলায় চাপা হাসি নিয়ে বলে, "মানে যেহেতু তুই নিজেকে প্রাপ্তবয়স্ক বলে দাবি করছিস, তাহলে তো নিশ্চিত বানানও জানা থাকার কথা, তাই না? বানান কর, তারপর আমি ঠিক করব—তুই যাবি, নাকি থাকবি।"
শেরাজ এক মুহূর্ত চুপ থেকে বলল, "যাহ! তুই যদি বানান করতে পারিস তাহলে তুই গাড়ি থেকে নেমে যাবি আর যদি না পারিস তাহলে আমার সাথে যাবি ঠিক আছে।"
মেহুল হতবাক হয়ে বসে রইলো। পুরো ব্যাপারটাই তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। শেরাজ ভ্রু উঁচু করে বলল, "কি হলো? পারবি না?"
মেহুল দ্রুত জবাব দিলো, "কেন পারবো না? অবশ্যই পারবো!"
সে একটু থেমে মনে মনে বানান গুছিয়ে নিয়ে বলতে শুরু করলো, "প... রা... প্ত... ব..."
মেহুল হঠাৎই থেমে গেলো। শেরাজ ধীর স্বরে বলল, "থেমে গেলি কেন? বানান জানিস না?"
মেহুল জেদ চেপে বলল, "জানি তো! প-র-া-প্ত ব-য়-স-ক!"
শেরাজ এক মুহূর্ত তার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর হালকা মাথা কাত করে বলল, "ভুল!"
মেহুল হাত বাড়িয়ে শেরাজকে থামিয়ে বলল, "বলছি আমি দাঁড়াও।"
মেহুল তর্জনী ঘুরিয়ে মনে মনে বানানটা ঠিক করে নিচ্ছে। শেরাজ মুগ্ধ নয়নে তার মেহুকে দেখছে। মেহুলের বাচ্চামি দেখে শেরাজের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে। মেহুল বলতে শুরু করল।
"‘প-্রা-প্ত-ব-য়-স্-ক’ এবার হয়েছে তো।"
মেহুল শেরাজের দিকে তাকায়। শেরাজ গভীর চোখে তাকিয়ে রইলো মেহুলের দিকে। তার চাহনিতে যেন শত শত আবেগের স্রোত খেলা করছে কখনো গভীর, কখনো রহস্যময়, আবার কখনো বা প্রচণ্ড কঠিন। শেরাজ শুষ্ক ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে বলল, "ঠিক আছে কিন্তু তোর অনেক সময় লেগেছে তাই তুই আমার সাথে যাবি।"
মেহুল হতবাক হয়ে বলল, "কি? এমনটা তো কথা ছিলো না।"
"এমনটাই কথা ছিলো।"
শেরাজ গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট দিলো, গিয়ার বদলে সামনে তাকাল। মেহুল না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে কিছু সইতে। কোথায় নিয়ে যাবে তাকে এই লোক? কি উদ্দেশ্য এই লোকের? পাঁচটা বছর দূরে ছিলো তখনই তো ভালো ছিলো। নাকি পাঁচ বছর দূরে থাকার জন্য প্রতিশোধ নিবে তার থেকে। মেহুল ভয় শুকনো ঢোক গিলল।
—————
গাড়ি এসে থামে মির্জা বাড়ির সামনে। শেরাজ মেহুলকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিল, তার পায়ের ক্ষতটা ড্রেসিং করানোর জন্য।
হাসপাতাল থেকে ফিরে মির্জা বাড়ির গেটের সামনে গাড়ি থামিয়ে শেরাজ সংক্ষিপ্ত স্বরে বলল, "যা বাড়ি যা।"
মেহুল গভীর এক নিঃশ্বাস ফেলল। তারপর কাঁধে কলেজ ব্যাগ ঠিক করে ধীর পায়ে গাড়ি থেকে নামল। গাড়ির দরজা লাগানোর শব্দের পরপরই গাড়ির ইঞ্জিন গর্জে উঠল। মেহুল একবার ফিরে তাকানোর আগেই শেরাজ গাড়ি চালিয়ে সামনে এগিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর গাড়িটি পুরোপুরি তার চোখের আড়াল হয়ে গেল।
মেহুল সদর দরজা পেরিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে সাবধানে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠল। করিডোরে আসতেই দেখা মিলল আকলিমার। আকলিমা শেরাজের রুম থেকে বের হচ্ছে হাতে থাকা কিছু একটা দেখতে দেখতে। সে মেহুলকে দেখার সাথে সাথে বলল, "মেহুল আপু, তুমি আইসা পড়ছো! এগুলা কি দেখো তো একটু?"
মেহুল এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসু কণ্ঠে বলল, "কি?"
আকলিমা সামনের দিকে হাত বাড়িয়ে দেখাল — একটা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ আর একটা খালি কাচের শিশি। আকলিমা ফিসফিস করে বলল, "রাজ ভাইয়ার রুম থেকে পাইছি। খাটের নিচে ছিলো এগুলা। খাটের নিচ ঝাড়ু দিতে গিয়া পাইলাম।"
মেহুল বিস্মিত হয়ে সিরিঞ্জটা হাতে নিলো শিশিটা উল্টেপাল্টে দেখল। ভেতরে ওষুধ নেই। খালি শিশির বোতল। আকলিমা এবার কিছুটা ভীত কণ্ঠে বলল, "রাজ ভাইয়ার কি কোনো রোগটোগ আছে নাকি? যার জন্য ইনজেকশন নেয়?"
মেহুল মুহূর্তেই চমকে উঠল, "কি বলছো এসব আকলিমা আপু? শেরাজ ভাইয়ের আবার কি রোগ হবে?"
মেহুল এক মুহূর্ত দেরি না করে ব্যাগ থেকে ফোন বের করল, "দাঁড়াও আমি গুগলে সার্চ দিয়ে দেখি এটা কিসের ওষুধ?"
আকলিমা উদ্বিগ্ন মুখে মাথা নাড়ল, "হুম দেখো দেখো। আমার তো মনে হয় রাজ ভাইয়া আমাদের কাছ থেকে বড় কিছু লুকাচ্ছে!"
·
·
·
চলবে...................................................................................