দাসরাজ্ঞী - পর্ব ০৭ - মুশফিকা রহমান মৈথি - ধারাবাহিক গল্প


!!১১!!

          সকালে যখন ঘুম ভাঙলো ইরহানের, সে চমকে উঠলো তার ঘর দেখে। পাশে হুসনাত নেই। কেবল এক দলা রক্ত বিছানায় লেগে আছে। যা শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে। ধূসর চোখজোড়া ঘরময় বিচরণ করলো। ঘরে মেয়েটির কোনো অস্তিত্ব নেই। সবকিছু পরিপাটি করে গুছানো। তার থেকেও অবাক হয়েছে মেঝেতে পরে থাকা তলোয়ারটা তুলে সযত্নে রাখা। ইরহানের কপালের সমান্তরাল ভাঁজগুলো কুঞ্চিত হলো। একটা বিষয় কিছুতেই বুঝতে পারলো না সে কি করে টের পেলো না। 

ইরহান এগারো বছর থেকে যুদ্ধে যায়। মেহমুদ সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধাদের মধ্যে তাকে গোনা হয় সর্বদা। মীর বখসির সাথে প্রায় প্রতিটি যুদ্ধে সে উপস্থিত ছিলো। তার মস্তিষ্ককে যেভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। একমুহূর্তের তন্দ্রা কতটা প্রাণঘাতক হতে পারে তা ইরহানের থেকে ভালো কেউ জানে না। তাই তো ঘুমের মধ্যেও তার মস্তিষ্ক থাকে সজাগ। তার অনুভূতি, স্নায়ু থাকে সচল, সক্রিয়। তাহলে সে কি করে টের পেলো না তার পাশ থেকে আস্ত একটা মানুষ সরে গেছে। সে মাটিতে পড়ে থাকা ভারী তলোয়ারটাও তুলে রেখেছে। অথচ একটিবারও ঘুম ভাঙ্গে নি ইরহানের। ইরহানের ভারী তলোয়ার তোলা দক্ষ সেনার পক্ষেও অনেক কঠিন। সে কি গতরাতে মদিরা বেশি পান করেছিলো? মাদকতা তার মস্তিষ্ককে গ্রাস করেছে? ভোঁতা করে নিয়েছে তার স্নায়ু? উচ্চস্বরে ডাকলো,
 “হুদ? হুদ?”

হুদ প্রায় সাথে সাথেই প্রবেশ করলো ঘরে। ইরহান চুল মুঠোবন্দি করে বসে রয়েছে। হুদ বিনয়ী স্বরে শুধালো,
 “জি হুজুর?”
 “মেয়েটা কোথায়?”
 “ও তো ভোরেই চলে গেছে হারেমে। হুজুর তখন ঘুমাচ্ছিলেন”

ইরহান থমথমে স্বরে শুধালো,
 “তুমি যেতে দিলে কেন?”

হুদ ভ্যাবাচেকা খেলো? মাথা চুলকে উত্তর হাতড়ালো। প্রশ্নটার উত্তর ঠিক কিভাবে দেওয়া যায়। নিশাচারিনীদের কাজ তো রাত অবধিই থাকে। দিনের বেলায় তাদের কি কাজ? সে শেহজাদার স্ত্রী নয়। সামান্য দাসী। তাকে কি বলেই বা আটকাবে। হুদ খুব আমতা আমতা করে বললো,
 “ওর দায়িত্ব কি রাত অবধিই ছিলো না?”
 
ইরহান চুপ করে রইলো। বুঝতে পারলো যেন প্রশ্নটা অনর্থক ছিল। ফলে বিরক্ত স্বরে বললো,
 “আমাকে প্রস্তুত করার ব্যাবস্থা কর। আজ রাজসভায় আমি যাব”

—————

সভায় মালেক শাহর আগমণ ঘটতেই সবাই কুর্নিশ হয়ে তাকে সালাম জানালো। রত্ন খচিত সিংহাসনে বসলো মালেক শাহ। তার শ্বশুর উজির প্রধান আবদালি সেখানে উপস্থিত ছিল। দেওয়ান, মীর বখসি সবাই অপেক্ষারত ছিলো মালেক শাহর। শেহজাদা উমারের সাথে সেখানে উপস্থিত শেহজাদা আবু সাঈদ এবং তার বাকি চার ভাই সেলিম, জালাল, এহমাদ এবং সাদিক। মালেক শাহ সভা শুরু করার আদেশ দিলেন। সাথে সাথেই আবদালি বলে উঠলেন,
 “এসফাইনের আন্দোলন দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে তাদের কোনো পৃষ্ঠপোষক আছে”

মীর বখসি সাথে সাথেই প্রতিবাদী স্বরে বললেন,
 “উজির প্রধান আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে তাদের করা আন্দোলনটা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংঘর্ষ। আপনি জনগণের দাবি না মানলে এই জনগণও আপনাকে মানবে না”
 “এসফাইনে এখন খোরতাইন সুলতানকেই জনগণ সুলতান হিসেবে চায়। তবে কি মীর বখসি বলতে চাচ্ছেন আমাদের এখন আরাসালান সুলতানকে কবর থেকে তুলে এনে সিংহাসনে বসানো উচিত নাকি তার ছেলে নাসিরকে খুঁজে তাকে সিংহাসন সপে দেওয়া উচিত? ভুলবেন না মীর বখসি আরসালান সুলতানের শিরশ্ছেদ আপনি করেছিলেন

মীর বখসিকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই আবদালি মালিক শাহকে বললেন,
 “হুজুর, মেহমুদ সাম্রাজ্য এখন তার উন্নতির শেখরে। সবাই আমাদের শত্রু। আরবরা বা আফগানরা যদি জানতে পারে আমাদের বসানো মানুষের উপর জনগণ ক্ষিপ্ত হিতে বিপরীত হবে। তারাও বিদ্রোহ করতে পারে। মিশর বহুদিন যাবৎ যুদ্ধের পায়তারা করছে। কেন না বিদ্রোহীদের গোড়া থেকেই উচ্ছেদ করা হোক। শেহজাদা উমার মামলুকদের সাথে কিছুদিন আগেই সন্ধি করেছে। আমার মনে হয় এবারের সুযোগটা শেহজাদা আবু সাঈদের প্রাপ্য। প্রখর যোদ্ধা তিনিও। এসফাইনের প্রাদেশিক প্রধান হিসেবে সে আপনার নাম উজ্জ্বল করবে”

আবদালি নিজের নাতীর সুলতান হবার রাস্তা মসৃণ করতে এই প্রস্তাব করেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই মীর বখসির। ঠিক তখনই সভায় প্রবেশ করলো ইরহান। ইরহান বরাবরই উদাসীন ব্যক্তি। সভায় বসে বকবক করার থেকে তার কাছে তলোয়াড় অনুশীলন করা শ্রেয় মনে হয়। অথচ আজ তাকে সভায় দেখে ভ্রু কুচকে আসে আবু সাঈদের। ইরহান সভায় প্রবেশ করে প্রথমে সালাম জানালো মালেক শাহকে। অতঃপর বললো,
 “আমি এসফাইনে আমার বিশ্বাসী সৈন্য বায়োজিদকে পাঠিয়ে দিয়েছি। সে আগামীকালের মধ্যেই পৌছে যাবে। ওখানে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যে সেটার খবর দ্রুত আমরা পেয়ে যাবো। এতোকষ্টে দখল করা এসফাইন কোনোভাবেই মেহমুদ সাম্রাজের বহির্ভূত হবে না”
 “বায়োজিদ? ওই এসফাইনের ছেলেটা?”
 
আবদালি অপ্রসন্ন স্বরে শুধালো। ইরহান ফিঁচেল হেসে বললো,
 “জি উজির প্রধান। এসফাইনের ছেলেটা। আমার খুব বিশ্বস্ত সে”

এর মধ্যেই উপহাসের স্বরে আবু সাঈদ বলে উঠলো,
 “তাবরেজ কি দক্ষ সেনার অভাব ছিল? যে ওকেই পাঠাতে হল?”

ইরহান ওকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বললো,
 “এখন এসফাইনে অরাজকতা চলছে। আলাউদ্দিনের সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রয়োজন। বায়োজিদ আমার বিশ্বস্ত, আমার মনে হয় না এখন ওর থেকে ভালো কেউ ওখানের সঠিক তথ্য দিতে পারবে। ও আলাউদ্দিনের শিরশ্ছেদ করে ওখানের জনগণকে শান্ত করার ক্ষমতা রাখে, আবার আলাউদ্দিন যদি নির্দোষ হয় তবে এসফাইনের বিদ্রোহীদেরকেও দমাতে পারে। সকাল সকালও কি মদ খেয়ে এসেছেন শেহজাদা? মাথাটা সচল করুন”

আবু সাঈদ খোঁচা সহ্য করার মানুষ নয়। সাথে সাথেই বললো,
 “এসফাইনের একটা ছেলেকে এসফাইনের খবর নিতে পাঠিয়ে আমার মাথার পরীক্ষা করছেন ভাইজান। আমার মনে হয় আপনার সুস্থ মস্তিষ্কের প্রয়োজন। ও যে এসফাইনের বিদ্রোহীদের সাথে মিলে যাবে না তার কি নিশ্চয়তা?”

মালেক শাহ তাদের সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে শেহজাদা উমারকে শুধালো,
 “আমাদের এখন কি করা উচিত?”
 “আমার মনে হয় আমাদের বায়োজিদের চিঠির অপেক্ষা করা উচিত। বায়োজিদ ইরহানের অনুগত। আমি সেই প্রমাণ অনেকবার পেয়েছি। সুতরাং সে ইরহানের আদেশ অমান্য করবে না”

মালেক শাহ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ইরহানের উদ্দেশ্যে বললেন,
 “এসফাইনে বাঘের পতাকাই সবসময় দেখতে চাই। যদি অন্যথা হয় আমি দেখবো না কে আমার ছেলে!”

আবু সাঈদের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। সভার শেষ হতেই সে ইরহানকে খোঁচা দিয়ে বললো,
 “দাসীপুত্র শুধু মাথা কাটতেই জানে রাজনীতি নয়”
 
ইরহান বাঁকা হাসলো। তারপর শীতল স্বরে বলল,
 “মাথা কাটলেই কিন্তু সালতানাত খতম”

!!১২!!

হারেমে হুসনাতের প্রতি সবার আচারণ খুব রুক্ষ্ণ, কেউ তার সাথে সোজা বুকে কথা বলে না। তাকে দেখলেই কপাল কুঁচকে ফেলে। তার উপস্থিতিতে তারা যে অখুশি তা বুঝাতে তাদের কার্পন্যতা নেই। এই যে আজ সকালে যখন তাকে কাপড় ধোঁয়ার কাজ দেওয়া হলো, তখন যেন তুলনামূলক বেশি কাপড় তাকে ধরিয়ে দেওয়া হলো। সে যে স্থানে ঘুমায় সে স্থানটিও ময়লা করে রাখে তারা। খাওয়ার সময়ও তার ভাগে খাবারগুলো কেমন বাসি, পঁচা থাকে। হুসনাত বুঝতে পারে এই মেয়েগুলো তাকে অপছন্দ করে কিন্তু কেন? এই উত্তরটা তার বোধগম্য হল না। কাপড় শুকানোর সময় একটি মেয়ে তাকে শুধালো,
 “তোমার সাহায্য লাগবে?”

চমকে উঠলো হুসনাত। মুখটা কাপড়ে ঢাকা ছোটখাটো, রোগা মতন একটি মেয়ে। চোখগুলো গোলগোল। হুসনাত শুধালো,
 “কে তুমি?”
 “আয়েশা আমার নাম। এতো কাপড় একা নাড়তে পারবে না। দাও আমি সাহায্য করি”
 “আমি তোমার থেকে লম্বা। তোমার কষ্ট হবে, তুমি বরং বসে থাকো”

মেয়েটি পা ছড়িয়ে বসলো মাটিতে। সবুজ ঘাসের প্রলেপে শরীরটাকে একটু বিশ্রাম দিতে চাইলো। তারপর নিজের পা টিপতে টিপতে বললো,
 “ওরা তোমাকে হিংসা করে, তাই তোমার সাথে ওমন করে”
 “হিংসা করে? কেন?”
 “বাহ রে! একে সুন্দরী, উপর থেকে শেহজাদার খাস। হিংসে করবে না? যে জায়গায় ওরা পৌছাতে পারে নি তুমি প্রথম দিন পৌছে গেছো। আমিও হিংসে করি তোমাকে”
 “তাহলে সাহায্য কেন করছো?”
 “দয়া হল। আর আমার হিংসেতে কিচ্ছু যায় আসে না। শেহজাদা আমার মুখ দেখলেই দৌড়ে পালাবেন”

হুসনাতের হাত থামলো। পেছনে ঘুড়ে শুধালো,
 “কেন?”

মেয়েটি তার মুখের কাপড়টা সরিয়ে ফেললো। মুখের বামপাশ থেকে গলা অবধি ঝলসে গেছে। খাবলা মাংস দেখা যাচ্ছে। এমন বিভৎস চেহারা দেখলে যে কেউ কেঁপে উঠার কথা। হুসনাতের মুখে তেমন কোনো ভাবাবেগ হল না। বরং কণ্ঠে সহমর্মিতা প্রকাশ করে শুধালো,
 “হারেমের মেয়েরা পুড়িয়ে দিয়েছে?”
 “না না, আগে যে মনিবের কাছে ছিলাম তার স্ত্রী পুড়িয়ে দিয়েছে। মহিলা ভাবতো আমার রুপে তার স্বামী তাকে ভুলে যাবে। হাহ! পুড়িয়ে দিল। তারপর হারেমে বেঁচে দিলো। এখানের ফরমাইশ খাটি”
 “একদিক থেকে বেঁচে গেছো”

হুসনাত বিষন্ন স্বরে বলে। আয়েশা বিহ্বল কণ্ঠে শুধায়,
 “বেঁচে গেছি?”
 “অন্তত কারোর বিছানায় মনোরঞ্জনের জন্য যেতে হয় না, কেউ হিংসেও করে না”

আয়েশা হেসে উঠলো। সুন্দর, স্বচ্ছ হাসি। সেই হাসি বাতাসে মিশে অদ্ভুত ধ্বনির সৃষ্টি করছে। আয়েশা সহাস্যে বলল,
 “ঠিক বলেছো, ওই বুড়ো রাজার ঘরে যাওয়া থেকে মলমূত্র পরিষ্কার করা ঢের ভালো। আচ্ছা, তুমি কি শেহজাদার প্রেমিকা?”

হুসনাত নড়েচড়ে উঠলো। অবাক স্বরে শুধালো,
 “প্রেমিকা?”
 “প্রেমিকা নও?”
 “নাহ, শুধু দাসী”
 “তাহলে সেদিন সারারাত তার কাছে ছিলে কেন? শুনেছি শেহজাদা হেকিম ডেকে তোমার চিকিৎসা করিয়েছেন”
 “একান্ত দাস কি না?”

আয়েশা কপট রাগ দেখিয়ে বললো,
 “মিথ্যে বলছো”
 
হুসনাত কাপড় গুলো নেড়ে তার পাশে বসলো। হাটু গেড়ে বললো,
 “সত্যি বলছি। বিশ্বাস হয় না?”
 “এই প্রথম কেউ নিজেকে দাসী পরিচয় দিল। নয়তো শেহজাদার সাথে রাত কাটিয়েই সবাই নিজেকে সুলতানা ভাবে। অলীক স্বপ্ন”
 “স্বপ্ন কেন? দাসী সুলতানা হতে পারে না?”
 
আয়েশা হো হো করে হেটে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়লো। চোখে পানি চলে এলো তার। হাসি না থামিয়েই বললো,
 “তোমার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে? কার সুলতানা হবে? ওই হিংস্র শেহজাদার? শোনো গোপনকথা বলি। শেহজাদা ইরহান খুব নির্দয়। তার চার স্ত্রীকে সে মেরে ফেলেছে। খবরদার এমন স্বপ্ন দেখো না। আর মেহমুদ সাম্রাজ্যে দাসী দাসী থাকে। সর্বোচ্চ উপপত্নী হতে পারে। হামিদার মত স্বপ্ন দেখো না”
 “হামিদা কে?”
 “আছে একটা শয়তান। খবরদার ওর থেকে দূরে থাকবে। আস্তো শয়তান মেয়েটা। নিজেকে সুলতানা ভাবে। শেহজাদা উমার ছোটবেলা থেকে তাকে সমীহ করে বলে তার অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না। একবার একমেয়ে শুধু বলেছিলো সে শেহজাদা উমারের মতো সুদর্শন ছেলে দেখে নি। হামিদা ওর চুল কেটে দিয়েছিলো। সাংঘাতিক মেয়ে”

হুসনাত খুব যত্নে ছুঁলো আয়েশার পোঁড়া মুখটা। মেয়েটি বয়সে তার থেকে ছোট হবে। তারপর মমতা নিয়ে বললো,
 “আমাকে এতো সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ আয়েশা। যদি কোনোদিন আমি সুলতানা হই, তুমি হবে আমার খাস সহোচর”

আয়েশা হুট করেই খুব আবেগপ্রবণ হয়ে গেলো। এই হারেমে তার সাথে অনেক কিছু ঘটলেও কেউ কখনো তার সহমর্মী হয় নি। ফলে মৃদু হেসে বললো,
 “বলেও পাগল, শুনেও পাগল। তুমি হবে সুলতানা?”
 “হতে পারি না?”
 “দেখবো ক্ষণ”

—————

মাগরিবের আযানের ধ্বনি আসছে মসজিদ থেকে। একটু পর তাবরেজ নগরী অন্ধকারে ছেয়ে যাবে। অন্ধকার নগরীতে তখন শুধু হবে নানাবিধ বেআইনী কাজ। এক ছোট সারাইখানার বাহিরে বণিক এবং তার দল এসে পৌছালো। প্রতিদিন তাদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সুলতানের সৈন্য তাদের খুঁজছে। ধরা পড়া যাবে না। তাদের কাজ এখনো শেষ হয় নি। এর মধ্যে এক ভৃত্য বললো,
 “হুজুর, নাফিসা মরে গেছে। খবর পেলাম ওই রাতেই সুলতানে ওকে মেরে ফেলেছে”
 “বলেছিলাম এই মেয়েকে সাথে রেখো না”

বণিকের কণ্ঠে ঈষৎ ক্রোধ প্রকাশ পেলো। সে নিজের রাগ সংবরণ করে বললো,
 “আমাদের ধরা পড়া যাবে না। মনে রেখো আমাদের উদ্দেশ্য সুলতানকে শেষ করা। আগামীকাল আমরা বেশভূষা বদলে প্রাসাদের বাবুর্চি হিসেবে ঢুকবো। তোমরা হবে প্রাসাদের দাস। মনে থাকবে?”
 “জ্বি হুজুর”
 “শুধু আজকের রাতটা পার হলেই হবে”

কিন্তু কথাটা শেষ করতে পারলো না বণিক। তার পূর্বেই তার গলায় অনুভব করলো ধারালো কিছু। অন্ধকারে দেখতে না পেলেও বুঝলো কালো পোশাকধারী কিছু মানুষ তাকে ঘিরে ধরলো। চোখের পলকে ছোঁ-রার আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো তার দাসেরা। তার পেছনের ঘাতক শীতল স্বরে বললো,
 “তোমার পরিকল্পনা এবার সরাসরি হুজুরকে জানাবে।”
 ·
·
·
চলবে..........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp