পিনপিন নীরাবতায় ছেয়ে আছে আশপাশ। গাড়ির ইঞ্জিনের আওয়াজ শোনা যায়। মাঝে মাঝে দুয়েক কুকুরের ঘেউ ঘেউ। কবরস্থান সংলগ্ন জায়গা টা বেশ ভুতুড়ে। বসতবাড়ি বলতে মিনিট পাঁচেক হাঁটলে চেয়ারম্যান বাড়ি। শুনশান রাস্তাটায় দিনের বেলাতেই মানুষ জনের আনাগোনা কম দেখ যায়। রূপসা আড়চোখে তাকায় নওরিজের পানে। রিজ ভাই কি রেগে আছে? বাড়ি নিয়ে গিয়ে অনেক বকবে? ইশ্ কি একটা লজ্জাজনক ঘটনা! সে কি এখন কথা বলে সব মিমাংসা করে নিবে? কিন্তু কিভাবে বলবে? লজ্জায় মুখ লাল হয়ে আসে। রিজ ভাই নিশ্চয়ই পঁচা মেয়ে ভাবছে তাকে!
"রিজ ভাই আসলে ইয়ে মানে স্যরি হ্যাঁ? আর জীবনেও হবে না। এই পিঙ্কি প্রমিজ?"
নওরিজ মাহবুব স্টিয়ারিং হাত রেখে গমগমে আওয়াজে শুধায়,
"তোর স্কার্টের পকেটে কি?"
রূপসা জিভে কামড় বসায়। আমতা আমতা করে বলে,
"ওই.. ওই যে কি যেন বলে! ভুলে গেছি। হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে সর্দি মোছার জন্য সুর ভাবী দিয়েছে তো।"
একটু বুদ্ধি খাটিয়ে সর্দির কথা বলে রূপসা। সে শত ভাগ নিশ্চিত সর্দির কথা শোনার পর রিজ ভাই আর গভীরে যাবে না। সত্যিই রিজ যায় না। তবে রিজের শান্ত রাশভারী আগাম সতর্ক বার্তা গায়ে হিম ধরিয়ে দিলো।
"রূপ তুই বাচ্চা মেয়ে, অবুঝ, বোকাসোকা সহজ-সরল। বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। আমাদের খান বাড়ির চোখের মণি তুই। এখনো মায়ের হাতের দুধ ভাত ছাড়া তোর পেট ভরে না। আবদার করার আগেই শখের সব কিছু সামনে পেয়ে যাস। কখনো কেউ উঁচু গলায় তোর সাথে কথা বলেছে কি না সন্দেহ। প্রিন্সেস এর মতো বড় হয়েছিস তুই। কখনো কোল থেকে মাটিতে রাখা হয় নি। আমি রওশন আব্বা চাচাজান কাঁধে চড়িয়ে ঘুরিয়েছি। এখন তোর বয়সটা আবেগের। যেখানে যাওয়া বারণ সেদিকেই পা কদম ফেলার জন্য ছটফট করবে। সিনান সালেহের ব্যাপারটাও তেমনি।"
নওরিজ বুঝদার সুরে বলে রূপসার দিকে তাকায়। রূপসা ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে। স্কার্টের পকেটে হাত দিয়ে শার্ট খানা মুচড়ে ধরে। নওরিজ অন্ধকারেও ঠাহর করতে পারে রূপসার ফোঁস ফোঁস শ্বাসের ক্রিয়া। একহাত বাড়িয়ে রূপসার মাথায় রেখে আদুরে গলায় বলে,
"যতদিন যাচ্ছে এই সিনান সালেহ ভয়ংকরভাবে শিকড় গেড়ে বসার পাঁয়তারা করছে তোর মন মস্তিষ্কে। ওর ময়লা শার্ট চুরি করে এনেছিস! ভাবা যায়?"
রূপসা কেঁদে দেয় ভয়ে। সব দোষ ওই নিষ্ঠুর নির্দয় পাষন্ড লোকটার। সে ফ্যাচ ফ্যাচ গলায় বলল, "রিজ ভাই বিশ্বাস করো আমি কিছুই করি নি। দুষ্টুমি করে এনেছিলাম!"
নওরিজ হাসে ক্ষীণ স্বরে।তবে খানিকটা কঠোর গলায় অভিব্যাক্তি পেশ করে,
"বড় ভাই হই তোর। জল কতটুক গড়েছে সব নখদর্পণে। সবাই কি তোর মত বোকা নাকি? সিনানের আশেপাশেও দেখলে গাল লাল করে দিবো। তেলাপোকার বাচ্চা দেখেও যে মেয়ে ভয়ে মায়ের গলায় ঝুলে পড়ে সেই মেয়ে নাকি সিনান সালেহের পেছনে ঘুরঘুর করে। সব নষ্টের গোড়া ওই টিভিতে চলা সিনেমা গুলো। বাড়ি ফিরেই ওটার ব্যবস্থা করছি।"
রূপসা ফ্যাঁচ ফ্যাঁচে কান্নার স্বর দীর্ঘ হয়। নাকের পানি চোখের পানি একাকার! কেঁদেও শান্তি পায় না সর্দি বেরিয়ে আসে নাকের ডগায়। নাক ঝাড়ার শব্দে নওরিজ মুখের আদল পরিবর্তন হয়। খানিকটা ধমকে বলে,
"কান্না থামা বলছি? কি সব বাচ্চামো!"
হঠাৎ গাড়ির ব্রেক কষায় রূপসা পড়তে পড়তে বেঁচে যায়। নওরিজ মাহবুব বাহু ধরে আগলে রেখেছে তাকে। ভয়ে জান পাখি যেন বেরিয়ে আসছিলো রূপসার। কান্না গিলে বুকে হাত রেখে দম নেয়। কিছু বলবে সম্মুখে মানব গুলোকে দেখে রগে রগে শীতল স্রোত বয়ে যায়। লোকগুলোর হাতে দেশীয় অস্ত্র চোখে পড়তেই রূপসার মুখ বিবর্ণ দেখায়। অস্ফুট স্বরে ডাকে,
"রিজ ভাই!"
রূপসার বাহুতে থাকা নওরিজের হাতের বাঁধন শক্ত হয়। শীতল চাহনি সম্মুখ দন্ডায়মান মানবের উপর। গাড়ির হেড লাইটের আলোয় জ্বল জ্বল করছে অস্ত্র। মুখে গামছা বেঁধে লুঙি কাছা মেরে পাঁচ জন দাঁড়িয়ে আছে। নওরিজ ফোনটা বের করে রূপসার কোলে রাখে। পিঠে আলতোভাবে চাপড় মেরে বলে,
"রিল্যাক্সড রূপ! ভয় নেই।"
রূপসা নাক টেনে টেনে ফোঁপায়। ভয়ে অস্পষ্ট স্বরে বিড়বিড় করে কিছু বলে। আগত লোকগুলোর মধ্যে একজন রূপসার মুখ বরাবর টর্চের আলো ফেলে অশ্লীল কথা বলতে শুরু করে। নওরিজের কানে আসলেও কিছু বলে না। গমগমে সুরে রূপসা কে সতর্ক করে,
"যাই হয়ে যাক গাড়ি থেকে নামিস না। তোর রিজ ভাইয়ের শরীরে দম না থাকলেও তোর গায়ে টোকা অবদি পড়বে না।"
রূপসা ভয়ে বাহু জড়িয়ে ধরে নওরিজের। ভয়ে তাঁর শরীর হিম হয়ে আসছে। নওরিজ গাড়ি স্টার্ট দিতেই আক্রমণকারীর একজন গাড়ির সম্মুখে কোপ বসায়। গাড়ি নড়েচড়ে ওঠে ঝনঝনিয়ে। রূপসা 'রিজ ভাই' ডেকে ভয়ে চেঁচিয়ে উঠলো। নওরিজ ভরাট গলায় বলে ওঠে,
"তোরা জানিসই না কার সামনে অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়েছিস। রাস্তা ছাড় নয়তো কি হবে তোদের ধারনারও বাহিরে!"
হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। কিছু কুকুরের দল ছুটে এসে ঘেউ ঘেউ লাগিয়ে দেয়। তবে লোকগুলোর হাতের অস্ত্র গুলো দেখে লেজ গুটিয়ে পালায়। এক আক্রমণাত্মক ব্যাক্তি দা ছুঁড়ে মারে গাড়ি বরাবর। নওরিজ রূপসার ঘার নিচ দিকে চেপে ঠেসে ধরে; নিজেও সামনে খানিকটা ঝুঁকে আসে। সামনের কাঁচ ভেঙ্গে চুরমার। আগত দা কাঁচ ভেঙ্গে গাড়ির সিটের সাথে বাড়ি খেয়ে নওরিজের পিঠে এসে লাগে। চোখ খিঁচে দাঁতে দাঁত চাপে। দা ছুঁড়ে মারা লোকটা হেসে বলে,
"কি রে বাইনঞ্চোত পলাইলি ক্যান? আয় এক্কা দোক্কা খেলি? তুই জিতলে তোর জান ভিক্ষা দিমু আর আমরা জিতলে ওই মাগী আমাদের পাঁচজনের!"
পাশের লোক চাপা স্বরে ফিসফিসিয়ে বলে, "এই কালু? একদম আলটাম ফালটাম করবি না। যত সময় নিমু তত রিস্ক। কোপাই জলদি কাইটা পরমু কাহিনী খতম। বস কিন্তু আগেই সাবধান করছে!"
কালু লোকটা ভাবে কথা মন্দ নয়। ফিসফিসিয়ে বললো, "তা ঠিক কইছোস! তয় মানুষ মারতে আইছি ডর দেহান লাগতো না? আর মাইয়াডারে দেখছোস? রুপুসি সাথে কচি মাল! ওই হুমুন্দির পুতরে কোপামু তারপর রাণী নিয়া আয়েশ ফুর্তি করমু, কি কস আক্কাস?"
আক্কাস নামক লোকটা দাঁত কেলায়। প্রস্তাব মন্দ না। বাকি সবাই খুশিতে টগবগিয়ে ওঠে। নওরিজ গাড়ি থেকে নামে ঝড়ের গতিতে। শার্টের হাতা গুটিয়ে সিটে পড়ে থাকা দা হাতে নেয়। গাড়িতে দায়ের ঘর্ষণে শব্দ সৃষ্টি হয়। রূপসা মাথা তুলে দেখে রিজ ভাইকে দা হাতে এগিয়ে যেতে। মুখে দুহাত দিয়ে ফুঁপিয়ে ওঠে। ভয়ে কান্নারাও আটকে যায়। কি হবে? উত্তেজনায় মূর্ছা যাবার পথে রূপসা।
"অন্ডকোষ কেটে গলায় ঝুলিয়ে দিবো! চোখ গুলো উপড়ে নিবো। যার আগে কবরস্থানে যাওয়ার শখ জেগেছে সে আয়!"
দা নাড়িয়ে হুঙ্কার ছাড়ে নওরিজ। লোকগুলো মোটেই ভয় পায় না। হেসে এগিয়ে এসে একপাশ থেকে ঘিরে ধরে নওরিজকে। কালু দাঁত কিড়মিড় করে বলে,
"এতো ভাব বাড়ায় কন দিয়া? কার না কার বাচ্চা মরছে তাতে তোর এতো কুড়কুড়ানি কিসের? নাঙ লাগাই দিছোস সবার পিছনে, তাই না? ওহনি মায়ের ভোগে পাঠাই খাঁড়া!"
বলতে বলতে দা দিয়ে কোপ তুলে। তবে উঁচুতে তোলা দা বালু মাটিতে পড়ে যায়। সাথে হাতের একাংশ মাটিতে দাপাদাপি করে। ঘটনা এতো দ্রুত ঘটে কালু নামক লোকটা থম মেরে দাঁড়িয়ে। নিজ হাতের কাটা অংশ হতে তাজা রক্ত ফুলকির ন্যায় বেরিয়ে আসে। 'আআ..' অদ্ভুত স্বরে চেঁচামেচি শুরু করে কালু। বাকি সবাই খানিকটা দমে দুই কদম পিছিয়ে যায়। নওরিজ সতর্কের সহিত কদম বাঁড়ায়। এক হাত সম রাম দা নাড়িয়ে বলে,
"গরু কেটেছিস মানুষ কাটাও শিখে আসতি! চল আজ শিখিয়ে দিচ্ছি হাতে কলমে?"
লোকগুলো একে অপরকে ইশারা করে। হুট করে সবাই একচোটে দা তোলে। নওরিজ পাশ কেটে সরে পড়ে দা ছুঁড়ে মারে পা বরাবর। একজন পা ধরে বসে পড়ে চিৎকার দেয়। নিরস্ত্র নওরিজ। বাকি তিন লোক অশ্রাব্য গালি ছুঁড়ে তেড়ে আসে। নওরিজ এক লোকের বুক বরাবর লাথি মেরে কসাইদের হাড্ডি কাটা মোটা দা ছিনিয়ে তৎক্ষণাৎ আরেক লোকের কাঁধ বরাবর কোপ দেয়। সুযোগে তৃতীয় ব্যক্তি নওরিজকে আক্রমন করে বসে। দা বসে যায় বলিষ্ঠ বাহু বরাবর। দূর হতে রূপসা চেঁচিয়ে উঠলো নিমিষেই। নওরিজ দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যায়। উত্তেজনায় ব্যাথা যেন শরীর ছুঁতে পারে না। লোকটা আবারও কোপ তোলে নওরিজ হাতের দা লোকটার মাথায় বসিয়ে দেয় দ্রুত গতিতে। রক্ত ছিটকে পড়ে চোখে মুখে।
গাড়ির হেড লাইটের আলোয় সবটাই দৃশ্যমান। রূপসার পেট মুচড়ে ওঠে। গলগলিয়ে বমি করে দেয়। গায়ে ঘাম ছুটেছে মনে হচ্ছে এখনি জ্ঞান হারাবে। এমন মুহূর্তে কেউ চুলের মুঠি টেনে ধরে। রূপসা ঘার ফিরিয়ে তাকায়। নেশারু ডাবলু নামক লোক পান খাওয়া টকটকে মুখে অশ্রাব্য খিস্তি শুনিয়ে টেনে নামায় জিপ থেকে। রূপসা বাকরুদ্ধ। গলা চড়িয়ে রিজ ভাইকে ডাকবে এই শক্তি অবদি নেই! তাকে কষ্ট করতে হয় না। নেশারু ডাবলু পানের পিক ফেলে ডাকে,
"এই নটির বাচ্চা? এদিকে তাকা? দেখ তোদের বাড়ির সম্মান!"
রূপসা এবার গলা ফাটিয়ে ডাকে রিজকে। হাত পা ছোড়াছুড়ি করে গলা কাটা মুরগীর মতো। ডাবলু চুলের মুঠি ছেড়ে গলায় ছুরি চেপে ধরে পেছন থেকে। একটু চাপ দিতেই চামড়ায় বসে যায়। আতংকে রূপসার ছটফটানি থেমে যায়। শির দাঁড়া বরাবর নোনাজল গড়িয়ে পড়ে।
আধমরা ব্যাক্তির পেটে দা বসিয়ে নওরিজ উঠে দাঁড়ালো। চোখ মুখ রক্তের রক্তিম কৃষ্ণচূড়া। পিছনে ফিরতেই মাথায় রক্ত চড়ে বসে পূনরায়।
নেশারু ডাবলু রূপসার গা হতে ওড়না ছুঁড়ে ফেলে। অশ্লীল হাত ছুঁয়ে দেয় মেয়েলী কায়া। রূপসা হুঁ হুঁ করে কেঁদে ওঠে। অস্ফুটে করুণ স্বরে ডাকে,
"রিজ ভাই?
নওরিজ পড়ে থাকা দা তুলে তেড়ে আসে। বাঘের মতো গর্জে ওঠে,
"খানকির বাচ্চা তোরে আজ পিস পিস করে কুত্তারে না খাওয়াইছি তো আমি এক বাপের পোলা না!"
"থাম বেজন্মা! এক টান তারপর কেচ্ছা খতম! দিই?"
বলে ছুরিটা আরকটু চেপে ধরে। গলগলিয়ে রক্ত আসে। নওরিজ থামে না। লম্বা পা ফেলে এগিয়ে আসে।
"তোর কেচ্ছার ওপেনিং হওয়ার আগেই কাহিনী ডিশমিশ!"
হুঙ্কারে ডাবলু একটু ঘাবড়ে যায়। রক্তে মাখা নওরিজকে বড্ড ভয়ঙ্কর লাগছে। যেন জখমিত বাঘ! আর হাতে রক্তমাখা। অস্ত্র যেন রক্ত পিপাসু। তাঁর হাত নড়েচড়ে ওঠে। বাঁচার স্পৃহায় অদম্য সাহস সঞ্চার হয় রূপসার ভেতরে। সাহস জুগায় এগিয়ে আসা রিজ ভাই।গলা পেঁচিয়ে রাখা বাহুতে সর্বশক্তি দিয়ে দাঁত বসিয়ে ছুরি ফেলে দেয়। ডাবলু আচানক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে। ওদিকে রিজের দা তাঁর গলা ছুঁই ছুঁই। ভয়ে শুকনো ঢোঁক গিলে ডাবলু। মৃত্যু দেখতে এমন?
ছুটকারা মিলতেই রূপসা আছড়ে পড়ে ভরসা যোগ্য বুকে। হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। নওরিজ এক হাতে আগলে স্বস্তির শ্বাস ফেলে। একটু এদিক সেদিক হলে যা কিছু ঘটতে পারতো। সে চোখ তুলে ডাবলুর দিকে তাকায়। দা গলায় বাজিয়ে দাঁত চেপে বলে,
"জবাই করবো তোকে। অন্তিম মুহূর্তে সৃষ্টি কর্তার কাছে মাফ চেয়ে নে! রূপ চোখ কান বন্ধ!"
রূপসা ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপে । রিজ ভাইয়ের শার্টে লেপ্টে থাকা তাজা রক্তের ঘ্রাণে নাড়িভুঁড়ি সহ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। সে নওরিজকে ছেড়ে পিঠ পিছনে দাঁড়িয়ে গড়গড়িয়ে বমি করে ভাসিয়ে দেয়। অদ্ভুত ভয়ানক গোঙানির আওয়াজে শরীরের প্রতিটি লোমকূপ জেগে ওঠে। দুই হাতে কান চেপে ধরে। হঠাৎ কেমন যেন অনুভূতি হয়। চোখের আকার বড় হয় ক্রমশ। ওই হাত কাটা লোকটা উঠে বসেছে। দা তুলে ছুঁড়ে মারে এদিকেই। রূপসার মাথা ঝিমঝিম করে ওঠে। কথা বলার শক্তি টুকু নেই। কোনমতে ঘুরে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে নওরিজকে। কয়েক পল পেরিয়ে যায় চোখের পলকে। লম্বা শ্বাস টানে রূপসা। হাতের বাঁধন ফসকে যায় নিমিষেই। লুটে পড়ে বালু মাটিতে। চোখ উল্টে হা হা করে শ্বাস টানে।
·
·
·
চলবে......................................................................