মেঘফুল - পর্ব ০২ - মিশু মনি - ধারাবাহিক গল্প


অর্ণব বিছানায় এপাশ ওপাশ করছে। মোবাইল ছাড়া এক মুহুর্ত ভালো লাগে না ওর। দরজায় ঠকঠক শব্দ শুনে কান খাড়া করলো অর্ণব। অন্ধকারে সে ভুলে গেছে দরজাটা কোন স্থানে। হাতড়ে হাতড়ে দরজা খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হলো তাকে। 

আলো হাতে দাঁড়িয়ে আছে জাহ্নবী ও সামার। অর্ণব খানিকটা ভড়কে গেলো। টর্চের আলো সরাসরি অর্ণবের মুখে তাক করে সামার বলল, 'হ্যালো মিস্টার গেস্ট, আশা করছি আমরা বিরক্ত করায় আপনি কষ্ট পান নি।'

অর্ণব আলোর দাপটে চোখ মেলতে পারছে না। পিটপিট করছে চোখ দুটো। জাহ্নবী সামারের হাত টেনে ধরে বলল, 'সমস্যা কি তোর? প্লিজ আপনি কিছু মনে করবেন না। এক মিনিট আপনাকে একটু বিরক্ত করবো।'

অর্ণব ভদ্রতার সঙ্গে বলল, 'সমস্যা নেই। আমি কিছু মনে করিনি। আপনারা ভেতরে যান।'

অর্ণব দরজা থেকে সরে বাইরে এসে দাঁড়াল। জাহ্নবী ও সামার আলো হাতে প্রবেশ করলো ঘরে। মাঝেমাঝে দমকা খাওয়ার শব্দ কানে আসছে। অর্ণব বুকে হাত বেঁধে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। দ্রুত বেরিয়ে এলো মেয়ে দুটো। সামার অর্ণবকে বলল, 'আপনি আর আসার সময় পাননি? এমন মধ্যরাতে কেউ কারও বাসায় বেড়াতে আসে?'

জাহ্নবী সামারের হাত টেনে ধরে ওকে নিয়ে দ্রুতপদে প্রস্থান করলো। অর্ণবের মুখে হাসি ফুটল এবার। অন্ধকারে ওকে ফেলে মেয়েগুলো চলে গেলেও, রেখে গেলো তাদের নিজস্ব রেশ। 

জাহ্নবী সামারের ফোনে রিচার্জ করে দিলো। সামার ফোন নিয়ে চলে গেলো বারান্দায়। বিমর্ষ মনে বিছানায় শুয়ে পড়ল জাহ্নবী। ভায়োলেট নিষ্পাপ ঘুমে বিভোর। ওর মতো সহজেই যদি ঘুমাতে পারতো সে! চোখে তন্দ্রা লেগে এসে আবারও কেটে যাচ্ছে। এখনও বিছানায় আসেনি সামার। জাহ্নবী বারবার এপাশ ওপাশ করে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগল। 

সকালবেলা পারভীন বিছানা ছেড়ে উঠলেন না। জাভেদ আলী অনেকটা বাধ্য হয়েই জাহ্নবীকে ডেকে তুলে বললেন, 'মা, একটু দেখো নাস্তা টাস্তা কিছু করা যায় কিনা। ছেলেটা মনেহয় উঠে পড়েছে।'

জাহ্নবী মুখ ধুয়ে রান্নাঘরে প্রবেশ করলো। সূর্যের মিষ্টি আলোয় রান্নাঘর ঝলমল করছে। মন ভালো হয়ে গেল জাহ্নবীর। সোনালী রোদ্দুর গায়ে মেখে নাস্তা তৈরি করে নিলো সে। বেশ কয়েকবার মায়ের কথা মনে পড়ল তার। জাহ্নবী জানে পারভীন সুস্থ। শরীর একটু খারাপ হলেও রান্নাঘরে না আসার মতো খারাপ নয়। পারভীন ইচ্ছে করেই বিছানা ছাড়ছেন না। এই বয়সে এসে মা কেন এমন আচরণ করছেন জাহ্নবী বোঝে। কিন্তু চুপচাপ দেখা ছাড়া সত্যিই ওর কিছুই করার নেই। 

খাবার টেবিলে অর্ণব ও জাভেদ আলী বসে আছেন। নাস্তা পরিবেশন করছে জাহ্নবী। সামার মুখ ধুয়ে নাস্তার টেবিলে বসে পড়ল। জাহ্নবী এক পলক সামারের দিকে তাকিয়ে ছোট্ট নিশ্বাস ফেলল। ওর মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সামার চাইলেই পারতো বড় বোনকে সহায়তা করতে। অথচ কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে উলটে পালটে ঘুমাচ্ছিল এতক্ষণ। নাস্তা তৈরি হওয়ামাত্রই মুখ ধুয়ে টেবিলে বসে পড়ল। 

জাহ্নবী নাস্তা পরিবেশন শেষে রান্নাঘরে এলো চা বানাতে। জাভেদ আলী খাবার খেতে খেতে অর্ণবের সঙ্গে গল্প করছেন। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে সামার। ওদের হাসাহাসির শব্দে জাহ্নবীর বুক ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এই অর্থহীন জীবনকে আর এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়না ওর। মিছে বেঁচে থাকার কোনো মানে হয়!

চায়ের দুধ উথলে চুলার আগুন নিভিয়ে দিলো। এমন সময় রান্নাঘরে প্রবেশ করলেন পারভীন। বিরক্তির সঙ্গে বললেন, 'মন কোনদিকে যে থাকে মানুষের.. '

জাহ্নবী বলল, 'মা তুমি এই শরীর নিয়ে রান্নাঘরে এসেছো কেন? তুমিও নাস্তা করে নাও।'
'আর নাস্তা..'

একটা গভীর নিশ্বাস ফেললেন পারভীন। আজকাল মাকে দেখতেও দুঃখী দুঃখী লাগে। জাহ্নবী কয়েক সেকেন্ড মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। এরপর চা নিয়ে গেল খাবার টেবিলে। 
জাভেদ আলী তখন জাহ্নবীকে নিয়েই কথা বলছিলেন, 'ও তো সবসময় ফার্স্ট হতো। ম্যাট্রিকে তো আমাদের বোর্ডে নয় নাম্বার হয়েছিল। স্কুলের সব বাচ্চাকে মিষ্টি খাইয়েছি আমি। আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতেও মিষ্টির কার্টুন পাঠিয়েছি।'

জাহ্নবী নিঃশব্দে টেবিলে চা রেখে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হলো। সামার বলল, 'আপু তুই নাস্তা খাবি না?'
'পরে খাবো।'
'এখানে বস তো। সকাল থেকে এইগুলাই করলি। এখন আর কি কাজ আছে? নাস্তা খেয়ে নে।'

জাহ্নবী একবার জাভেদ আলীর দিকে তাকালো। চোখাচোখি হলো দুজনের। জাভেদ আলীর দৃষ্টি ভাষাহীন। সামারের জোরাজোরিতে জাহ্নবীও একটা চেয়ারে বসে পড়ল। অর্ণব দ্রুত চা শেষ করে বলল, 'আংকেল আমি তাহলে উঠি?'
'আরে না। কথাই তো শেষ হলো না। বসো গল্প করি।'

ইতস্তত বোধ করছে অর্ণব। জাহ্নবী বিষয়টা বুঝতে পেরে প্লেট হাতে নিয়ে সামারের ঘরে চলে গেলো। অর্ণব লজ্জায় মাটিতে দৃষ্টি নামিয়ে রাখলো। জাভেদ আলী সহজ গলাতেই বললেন, 'তোমার বাবার ব্যাপারে কি যেন বলছিলে?'

সামার বলল, 'আপনার বাবা সাঁতার কাটতে কাটতে মাঝপুকুরে গিয়ে ডুবে গেলেন। তারপর কী হলো?'
অর্ণব বলতে শুরু করলো। সামার বারবার হেসে উঠছিল অর্ণবের গল্প শুনে। জাভেদ আলীও দারুণ মজা পাচ্ছেন। রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে এই কাণ্ড দেখে বিরক্তবোধ করছেন পারভীন। ওনার অকারণেই মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে। মেজাজ ঝাড়ার মতো সুযোগ পাচ্ছেন না। অবশেষে ভায়োলেটকে ডাকতে চলে এলেন তিনি। 

লক্ষী মেয়ের মতো ঘুমাচ্ছে ভায়োলেট। বিছানার এক কোণায় বসে নাস্তা খাচ্ছে জাহ্নবী। পারভীন তিক্ত সুরে বললেন, 'ও এখনও ঘুমাচ্ছে না? তাছাড়া আর করবে কি। কাম নেই কাজ নেই, সারাক্ষণ ঘুম। ডেকে তোল ওকে। আমার জীবনটা ছাড়খার করে দিলো এই মেয়েগুলো। এ জীবনে একবেলা শান্তিতে খাইতে পারলাম না ওদের জন্য।'

জাহ্নবী পরোটা মুখে দিয়ে স্তব্ধ হয়ে পারভীনের দিকে তাকিয়ে রইল। মা কী বলছেন সেটা কি উনি নিজেই বুঝতে পারছেন? এমন উলটা পালটা কথা কেন বলছেন তিনি! বাসায় মেহমান আছে। জাহ্নবী গম্ভীর হয়ে গেল। খাবার গলা দিয়ে নামছে না ওর। 

ভায়োলেট চোখ কচলে বলল, 'কী হয়েছে মা? এত চেঁচাচ্ছো কেন?'
পারভীন বললেন, 'আমি চেঁচাচ্ছি? তাই তো মনে হবে। মাকে এখন ভালো লাগে না কারও।'

পারভীন ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে ভায়োলেট বিছানা থেকে নামলো। জাহ্নবীকে ওর বিছানায় নাস্তা করতে দেখে বেশ অবাক হয়েছে ও। জাহ্নবী সচরাচর ওদের রুমে আসে না। হাই তুলতে তুলতে নির্বিকার ভঙ্গীতে বাথরুমে চলে গেলো ভায়োলেট। 

জাভেদ আলী পারভীনকে শান্ত করার জন্য নিজের ঘরে গেছেন। টেবিলে মুখোমুখি বসে আছে অর্ণব ও সামার। অর্ণব বুঝতে পারছে না তার এখন উঠে রুমে যাওয়া উচিৎ হবে কী না? আবার এটাও বুঝতে পারছে না, এখানে সামারের মুখোমুখি বসে থাকাটা সঙ্গত কী না? দোটানায় ভুগছিল বেশ। সামার বলল, 'আপনার চাকরি হবে বলে মনে হচ্ছে?'

অর্ণব ঠোঁট কামড়ে ধরে কয়েক সেকেন্ড ভেবে বলল, 'মনে হয়, না। পরীক্ষা ভালো দেইনি।'
'যদি চাকরি হয়ে যায়?'
'হলেই তো ভালো।'
'আপনার চাকরি হলে তখন কোথায় থাকবেন?' 
'জানি না। আগে তো হোক।'
'জানেন না ভালো কথা। আমি জানিয়ে দিচ্ছি। আমাদের বাসায় আসবেন, খাবেন, রেস্ট নেবেন, গল্প গুজব করবেন। চাইলে ক্রিকেট খেলাও দেখতে পারেন। আমাদের টিভিটা অনেক বড়। বড় না?'
অর্ণব ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, 'জি।'
'কিন্তু..'
'কিন্তু কী?'
'এটা এখন বলবো না। চাকরি হলে বলবো।'

অর্ণব অবাক হয়েছে ভীষণ। সামার খুব চনমনে একটা মেয়ে। এ ধরনের মেয়েগুলোকে ওর বেশ ভালোই লাগে। অর্ণব মুখে হাসি ধরে রেখে মাথা নিচু করে রইল। কিছুক্ষণ পর বলল, 'যদি চাকরিটা না হয়, তাহলে তো আমার আর কখনো এই কথাটা শোনা হবে না।'

সামার টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। অদ্ভুত হেসে বলল, 'চাকরি না হলে এই কথাটা আপনার কোনোদিনো শোনার প্রয়োজন নেই।'

চলে গেল সামার। কিন্তু অর্ণবের বড্ড মন উশখুশ করতে লাগল। সামার কী কথা বলতে চাইছে সেটা শোনার জন্যই ওর চাকরি হওয়াটা ভীষণ জরুরি। 

ভায়োলেট হাতমুখ ধুয়ে খাবার টেবিলে এসে দেখল টেবিলে অপরিষ্কার থালাবাসন পড়ে আছে। নাস্তা না খেয়ে আগে সেগুলো রান্নাঘরে নিয়ে এলো সে। সব বাসন পরিষ্কার করে তারপর নাস্তা করার জন্য টেবিলে এসে বসলো। আম্মুর মেজাজ খারাপ মানে অনেক্ষণ সে রুম থেকে বের হবে না। ভায়োলেট খাবার খাওয়ার সময় জাহ্নবীর ঘর থেকে অর্ণবকে বেরিয়ে আসতে দেখে প্রথমে ভড়কে গেল ভায়োলেট। পরক্ষণেই বুঝতে পারলো নিশ্চয়ই ইনি কোনো মেহমান, যার কারণে জাহ্নবী আজ ওদের রুমে বসে নাস্তা খাচ্ছিল।

ভায়োলেট বলল, 'আপনি কে? চিনতে পারলাম না তো?'
'আমি অর্ণব।'
'ও আচ্ছা। বাবার গেস্ট?'
'জি।'
'ব্যাগ ট্যাগ নিয়ে চলে যাচ্ছেন নাকি?'
'জি।'
'ওহ আচ্ছা।'

ভায়োলেট খাবারের দিকে মনোযোগ দিলো। অর্ণব বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ভায়োলেটের খাবার খাওয়া দেখছিল। ভায়োলেট মুখ তুলে ওর দিকে তাকাতেই অর্ণব বলল, 'আংকেল কোথায়? ওনাকে বলে যেতাম।'
'আপনি সোফায় বসুন। আমি ডাকছি।'

ভায়োলেট খাবারের মাঝখানে উঠে বাবাকে ডাকতে গেল। বসে রইল অর্ণব। জাভেদ আলী বলেছিলেন ওনার তিনজন মেয়ে। কিন্তু তিনটা মেয়েই এত বড় হয়ে গেছে সেটা ভাবে নি অর্ণব। যার বাসায় এমন বড় বড় মেয়ে থাকে, সেখানে মেহমান হয়ে যেতেও লজ্জা লাগে। 
জাভেদ আলী এসে বললেন, 'সে কী, তুমি এখনই চলে যাচ্ছো নাকি? দুপুরে খেয়ে বের হইয়ো।'

'না আংকেল। আমি এখন থানায় গিয়ে একটা জিডি করবো। তারপর চলে যাবো। এখানে থেকে আসলেই আমার কোনো লাভ নেই।'
'তাই বলে এখনই তোমাকে যেতে দিবো নাকি? তুমি বিশ্রাম করো। তোমার সঙ্গে গল্প গুজব করি।'

অর্ণব ইতস্ততবোধ করছে। ভায়োলেট আবারও এসে বাকি খাবারটা খাওয়া শেষ করলো। অর্ণবের ব্যাপারে কোনো আগ্রহই নেই ওর। খাবারটা মজা হয়েছে, সেটাই আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে ভায়োলেট। বড় আপুর হাতের রান্না খেলেই বুঝতে পারে ও। 

অর্ণবকে বাবা ধরে রাখলেন। প্রায় এক ঘন্টা বসে গল্প করলেন ওনারা। পারভীন নিজের রুমে শুয়ে রইলেন। অর্ণবকে একবার দেখেই দেখার ইচ্ছে মরে গেছে ওনার। চলে যাওয়ার সময় জাভেদ আলী এসে বললেন, ' ছেলেটা বিদায় নেয়ার জন্য ডাকছে তোমাকে।' 
পারভীন বললেন, 'ডাকুক। বলো আন্টির শরীর খারাপ।' 
'সে কি! যাও গিয়ে বিদায় টা দিয়ে আসো।'
'সে কি আমার ঘরের জামাই নাকি? না আমার ছেলে? উঠতে পারবো না। তোমার গেস্ট, তুমি বিদায় দিয়ে আসো।'

জাভেদ আলীর মন খারাপ হলো। তথাপি মুখে হাসি নিয়ে তিনি অর্ণবের কাছে গিয়ে বললেন, 'তোমার নান্টির শরীর খারাপ, শুয়ে আছে।'
' সমস্যা নেই। আন্টিকে আমার সালাম দিবেন।'
'অবশ্যই।'

জাভেদ আলী অর্ণবকে বাসার সামনে রাস্তায় এসে রিকশায় তুলে দিলেন। রিকশা ছেড়ে দিলে পেছন থেকে ডেকে তিনি নিজেও উঠে পড়লেন রিকশায়। থানায় যাবেন জিডি করাতে। আসলে এই মুহুর্তে ওনার কোনো কাজ নেই। বাসায় ফিরে পারভীনের সামনে বসে থাকতে একদমই ইচ্ছে করছে না। 

জাহ্নবী ঘরে এসে বিছানা গুছিয়ে নিলো। মাত্র একরাত্রি অতিথি ঘুমিয়েছে এখানে, অথচ ওর মনে হচ্ছে চাদরটা ধুয়ে দেয়া উচিৎ। কিন্তু এইমুহুর্তে চাদর ধোয়ারও ইচ্ছে নেই। বিছানা থেকে চাদর সরিয়ে তোষকের ওপর শুয়ে রইল সে। সামার এসে ওর টেবিলের ওপর একটা একশো টাকার নোট রেখে বলল, 'আপু এই যে তোর টাকা।'

জাহ্নবী উত্তর দিলো না। মাথা তুলে তাকালো না অব্দি। সামার বলল, 'আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। আম্মুকে বলিস।'

দরজা আটকে দিয়ে সামার বেরিয়ে গেল। জাহ্নবী চোখ মেলে একটা নিশ্বাস ফেলল। সামার প্রায় প্রতিদিনই বাইরে যায়। পড়াশোনা শেষ করার পরও ওর যাওয়ার জায়গার অভাব নেই। বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে আড্ডা দেয়া, মার্কেটে ঘোরাঘুরি করা আবার কখনো লম্বা ট্রিপে ঢাকার বাইরে চলে যায় ও। ভীষণ আনন্দে আছে মেয়েটা। জাহ্নবীর মাঝেমাঝেই মনে হয়, এই শহরের সবচেয়ে আনন্দিত মেয়েটা সামার। ওর নাম আসলে আনন্দিতা হওয়া উচিৎ ছিল। জাহ্নবী চাইলেও কখনো ওর মতো হতে পারবে না। কোনো মেয়েই পারবে না। 

এমন সময় ফোনে ভাইব্রেশনের আওয়াজ হলো। জাহ্নবী নোটিফিকেশন চেক করে দেখলো একটা নতুন ইমেইল এসেছে। কিছুদিন আগে চাকরির জন্য আবেদন করেছিল সে। সেখানে ইন্টারভিউয়ের তারিখ জানিয়েছে তারা। খুশিতে টগবগ করে উঠলো জাহ্নবীর মন। চাকরিটা হলে সে ব্যস্ত থাকার একটা কারণ পেয়ে যেতো।
.
.
.
চলবে.........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp