তোমার নামে যাতনা - পর্ব ০১ - শারমিন আক্তার বর্ষা - ধারাবাহিক গল্প


!!১!!

‘তোমারে কইলাম পছন্দ হইছে, সাবধানে থাইকো নাহলে কিন্তু তুইলা নিয়ে যামু।’

পুরুষালী কণ্ঠে এমন কথাটা শুনতেই শরীর শিরশির করে উঠল চারুর। চারু সশরীরে ঘুরে তাকাল আশবিনের দিকে। তারপর রাগান্বিত গলায় বলল, ‘লজ্জা-টজ্জা করে না রাস্তাঘাটে এইসব কি বলতেছেন?’

আশবিন অধর বাঁকা করে হাসল। তারপর ঠাট্টার স্বরে বলল, ‘তোমারে দেখলেই আমার লজ্জা শিকে উঠে নাচনকোঁদন করে। তাছাড়া লজ্জা নারীদের ভূষণ। পুরুষকে ওসবে মানায় না। আর আমি লেংটা দাঁড়িয়ে আছি নাকি লজ্জা পাবো কেন? আমি শার্ট-প্যান্ট পইরাই আছি। তাই আমার লজ্জা-টজ্জা করতেছে না।’

চারু, আশবিনের সঙ্গে কোনো কথায় জিততে পারে না। লোকটা বরাবরই কথাতে পারদর্শী। আশবিনের কথায় বিরক্ত হয় চারু, বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে গেল তার। এই পথ দিয়ে চারু কলেজ থেকে বাড়ি যায় আর আশবিন এই পথে তার জন্য রোজ দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর চারুকে আসতে দেখলেই সে অদ্ভুত কথাবার্তা বলে মন ইচ্ছামতো তাকে বিরক্ত করে। চারুর পাশে ওর বন্ধু ইলমা দাঁড়িয়ে আছে। ইলমা, আশবিনকে ভয় পায় প্রচুর। আশবিন বখাটে ছেলে ঝগড়াঝাটি আর মারামারি তার জন্য পানিভাত। সিনিয়র বলে ভার্সিটিতেও তার বিশাল দাপট। 

ইলমা চারুর কানেকানে ফিসফিস করে বলল,
‘ওর সাথে কথা বাড়াইস না। দোস্ত চল, চলে যাই। ও কিন্তু খুব ডেঞ্জারাস।’

আশবিন সেটা দেখে মৃদু হাসল, ইলমাকে জিজ্ঞেস করল, ‘কি কুবুদ্ধি দিচ্ছো শালিকা?’

ইলমা ঘাবড়ে গিয়ে ডানে-বামে মাথা নেড়ে বলল, ‘কিছু না, কিছু না ভাইয়া।’

আশবিন হাসিমুখে মেরুদণ্ড টানটান করে দাঁড়াল। তখন ঠিক দুপুর সূর্যটা মাথার উপরে প্রচন্ড রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে চারু। আশবিনের ঠোঁটকাঁটা স্বভাবটা বরাবরই অপছন্দ চারুর। আশবিনের সঙ্গে চারুর আজ ঝগড়া করার নিয়ত থাকলেও শরীর সঙ্গ দিচ্ছে না তার। শরীরটা ক্লান্ত লাগছে ভীষণ। চারু ঘাড় ঘুরিয়ে ইলমার দিকে তাকাল তপ্ত শ্বাস ফেলে তার কথাটাই মেনে নিল৷ এখন বাড়ি যাবে। তাই হাঁটতে লাগল। 

আশবিন হাসিমুখে প্যান্টের পকেটে দু-হাত গুঁজে চারুর পিছু পিছু হাঁটতে লাগল। চারু ভারী শ্বাস ফেলল। পায়ের শব্দ শুনে বোঝার বাকি রইল না যে আশবিন তার পিছু করছে। চারু হঠাৎ ইলমার হাতটা ধরে দ্রুত হাঁটতে লাগল। এক প্রকার দৌঁড়ে গিয়ে পিচঢালা রাস্তায় উঠল সে। 

আশবিন দারুণ মজা পেয়েছে। মিটমিট করে হেসে উচ্চ গলায় বলল, ‘শোনো সুন্দরী মেয়ে চারুলতা, 
তুমি যেখানেই যাও না কেন আমি তোমার পিছু নেবো।’

চারু রিক্সায় উঠল। ঠিকঠাক মতো বসে তারপর তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল আশবিনের দিকে। নরম ঠোঁট দুটো নেড়ে ইচ্ছামতো বকাঝকা করল মানুষটাকে। আশবিন মাথায় হাত বুলিয়ে ইমাজিন করতে লাগল, রিক্সায় উঠে চারু তাকে কোন বকাটা দিতে পারে? নরম তুলতুলে ঠোঁটের বকা শুনতে দারুণ মজা লাগবে। ভাবতেই কুটিল হাসল আশবিন।

আশবিন তার প্যান্টের পকেট হাতড়ে সিগারেটের প্যাকেট বের করল। ওতে একটা সিগারেট-ই আছে। শার্টের পকেট থেকে গ্যাসলাইট বের করল। সিগারেটটা দুই ঠোঁটের মাঝখানে রেখে আগুন জ্বালিয়ে একটা লম্বা টান দিল। 

তন্মধ্যেই রাস্তার পাশের টং দোকান থেকে বেরিয়ে এল নিশান। নিশান সুক্ষ্ম গলায় বলল, ‘তুই ওরে এতো বিরক্ত করস কেন? ওয় তো তোরে পাত্তাই দেয় না।’

আশবিন হেসে ফেলল। বলল,
‘মজা লাগে।’

নিশান প্রলম্বিত শ্বাস ছেড়ে বলল,
‘তুই তো শালা খাঁটি প্রেমিক না। খাঁটি প্রেমিক হইতে হইলে শার্টের পকেটে ফুল রাখতে হইব আর তোর শার্টের পকেটে তো থাকে শুধু গ্যাসলাইট আর সিগারেট।’

আশবিন বলল,
‘এই গ্যাসলাইট রাখা বুক টাকে একদিন ওই অষ্টাদশী জড়িয়ে ধরবে।’

নিশান বিরক্ত গলায় বলল, ‘তোর স্বপ্নে। ওই মাইয়া তোরে পছন্দ করে না। ওর কলেজে ঢু মাইরা দেখিস, ওর পেছনে ছেলেদের কত বড় লাইন লাইগা থাকে।’

আশবিন গাঁ ছাড়া ভাবটা বজায় রেখে বলল,
‘মেয়ে মানুষ হচ্ছে মৌচাকের মতো, ওদের চারপাশে মৌমাছি ভনভন করবেই। আর ওই মৌমাছি তাড়ানোর জন্য আমি আছি। প্রত্যেকটার পেছনে আগুন জ্বালিয়ে দিবো।’

আশবিনের কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে গেল নিশানের। নিশান কর্কশ গলায় বলল, ‘আর মেম্বার তোর পেছন জ্বালাইবো। মেম্বার যদি জানতে পারে তুই ওর মাইয়ার পেছনে লাগছস, তোকে চৌদ্দশিকের ভাত খাওয়াবে।’

আশবিন সিগারেটে টান দিল। তারপর ধোঁয়া উড়াতে উড়াতে বলল, ‘ওই শালা ভণ্ড আমার কিচ্ছুই করতে পারবে না। সারাজীবন শুধু ভণ্ডামি করছে।'

নিশান পলক ঝাপটিয়ে আশবিনের দিকে তাকিয়ে। বেশ জোরে জোরে জিজ্ঞেস করল, ‘হবু শ্বশুরকে শালা আবার ভণ্ড কস। তোর তো দারুণ সাহস।’

আশবিন সশব্দে হেসে উঠল। ওর হাতের সিগারেটটা তখনই শেষ হয়ে আসছে, সিগারেটের নিচের অংশটুকু ফুটপাতের কিনারায় ছুড়ে ফেলল আশবিন। তারপর প্যান্টের পকেটে হাত গুঁজে যেতে যেতে বলল, ‘শালা হিটলার। আমি তো ওরে মানুষ বলেই মনে করি না। শালা একবার ভণ্ড টাকা খাইয়া উল্টা বিচার করে।’

নিশাল অবশ কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, ‘তোর কি মনে হয় মেম্বার তার একমাত্র মাইয়ারে তোর মতন বখাটের হাতে তুইলা দিবো?’

আশবিন নিশানের দিকে তাকিয়ে তড়িঘড়ি করে বলে ওঠল, ‘দিতে হবে কেন? নিজের মনে কইরা নিয়া নিমু।’
নিশান নির্বাক। আশবিন দাঁড়িয়ে গেল। তারপর ক্ষীণ কণ্ঠে বলল, ‘ওই সুন্দরী আমার মনপ্রাণ দখল কইরা নিছে। একমাত্র আল্লাহ জানেন ওরে আমি কতোটা চাই। যদি ওরে নিজের কইরা পাই তাহলে আমার পৃথিবীর সব পাওয়া হইয়া যাইব।’

নিশান বলল,
‘তুই তো দেখতাছি পাক্কা প্রেমিক হইয়া গেছোস। মেম্বারের মাইয়ার প্রেমে হাবুডুবু খাইতাছোস।’

আশবিন নিশ্চুপ। নিশান আবারও বলল, ‘একটা কথা কো বন্ধু, মেম্বারের বাসার সামনেই তো তোর বাসা তারপরও তুই চারুলতারে দেখার লাইগা এতদূরে আইসা দাঁড়াইয়া থাকোস কেন?’

আশবিনের চোখ-মুখ শান্ত। নিশানের দিকে তাকিয়ে অকপটে বলল, ‘তুইই তো একটু আগে বললি, মেম্বার যদি জানে আমি ওর মাইয়ার পেছনে ঘুরি, তাহলে আমারে জেলের ভাত খাওয়াইব। তাই তো ঝুঁকি নেই না। বাসা থেকে এতদূরে দেখা করি। এখন ওই ভণ্ড যদি জানতে পারে আমি ওর বাড়ির সামনেই ওর মাইয়ার সাথে ফ্লার্ট করতেছি, তাহলে ও কি আমারে ধরে চুমু খাবে?’

নিশাল বলল, 
‘বুঝলাম৷ কিন্তু বন্ধু তোর প্রেয়সীর মনে আগে থেকাই একজন এক্কাদোক্কা খেলতাছে। ওই মনে তোর চান্স একদমই নাই।’

আশবিন চোখে বিস্ময় মুখে রাগ নিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কে সে? কার এতো কলিজা?’

নিশান হাতের ইশারায় একটা রিক্সা থামালো। তারপর দু'জনে উঠে বসল রিক্সায়৷ আশবিন তখনও প্রশ্নের উত্তরের আশায় নিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। নিশান গুনগুনিয়ে বলল, ‘তোর সুন্দরী, কলেজের এক পোলার উপরে ক্রাশ খাইছে। সারাক্ষণ দুজন একে অপরের দিকে তাকাইয়া মিটিমিটি হাসাহাসি করে। আবার হাত তুলে হাই হ্যালো করে।’

রাগ ও ক্ষোভে আশবিনের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। আশবিন শক্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল, ‘ওই শালার বাচ্চাটাকে কোথায় পাবো? বল।’

নিশান সোজা হয়ে বসল। বলল,
‘লিটনের মাঠে। আজকে মাঠে ওদের খেলা আছে।’

আশবিন রাগে কাঁপছে। রিক্সাওয়ালাকে বলল, ‘মামা রিক্সা ঘুরাও। লিটনের মাঠে নিয়া চলো।’

রিক্সাওয়ালা মাথা নাড়ল। বলল, ‘আইচ্ছা বাবা।’

আশবিনের মাথা ঠান্ডা করার জন্য এই সময় একটা সিগারেটের প্রয়োজন। নিশানের উদ্দেশ্যে বলল, ‘সিগারেট দে।’ 

নিশান তার পকেটে খুঁজেও একটা সিগারেট পেল না। নিচু গলায় বলল, ‘নাই।’
আশবিন রাগে গজগজ করে বলল, ‘অকর্মা তোরে দিয়া একটা কাজও ঠিকঠাক মতো হয় না।’
লিটনের মাঠের পাশে রাস্তায় রিক্সাটা থামল। রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে নামল আশবিন। অষ্টাদশীর হৃদয়ে এক্কাদোক্কা খেলা মানুষটাকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নিশান। 

ক্রিকেট খেলার মাঠটার পাশে একটা ছোট বাগান অবস্থিত। কড়া রোদের তাপ থেকে বাঁচার জন্য সব খেলোয়াড়েরা বাগানের গাছগুলোর নিচে বসে আছে। খেলা শুরু হবে চার ঘটিকায়। এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। দুটো দল পাশাপাশি বসে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে। জাহিদ কথা বলতে বলতে উঠে দাঁড়াল। আর তখনই আশবিন এল। আচমকা জাহিদকে ধরেই মারতে শুরু করল আশবিন। ঘটনাটি এতো তাড়াতাড়ি ঘটে গেল যে উপস্থিতি সবাই চমকে গেছে। তাদের মনে প্রশ্ন, কি হচ্ছে? জাহিদ মাটিতে পড়ে গেল। তাকে এলোপাথাড়ি লাণ্থি মারতে লাগল আশবিন। 

জাহিদের নাক দিয়ে রক্ত পরতেছে। নিশান সেটা লক্ষ্য করে আশবিনকে টেনে ধরল। আশবিন ক্ষুধার্ত বাঘের মতো গর্জন করে বলে ওঠল, ‘সুন্দরী শুধু আমার। ওর দিকে তুই নজর দেস তোর চোখ উপচে ফেলবো আমি।’

জিহাদ নাক চেপে ধরে, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বলল, ‘সুন্দরী কে? আমি তো এই নামে কাউকেই চিনি না।’

নিশান আমতাআমতা করে বলল, ‘মেম্বারের মাইয়া চারুলতা।’

জিহাদ আশবিনের দিকে তাকিয়ে। কাতর স্বরে বলল,
‘সোজাসুজি বললেই হতো আমি ওর থেকে একশো হাত দূরে থাকতাম। এইভাবে মারলি কেন ভাই?’

আশবিন তার ঠোঁট কামড়ে ধরল। জিহাদের কথা শুনে তার রাগ নিমিষেই পানি হয়ে গেছে। হাসিটা কোনোরকমে চেপে গিয়ে তর্জনী দিয়ে নাক চুলকাতে লাগল আশবিন। তারপর প্যান্টের পকেট থেকে টাকার একটা নোট বের করে জাহিদের হাতে গুঁজে দিয়ে বলল, ‘সরি ভাই। এইটা নে, ডাক্তার দেখাইস।’

জাহিদ হাতের মুঠোয় তাকিয়ে দেখল কটকটি আমলের পুরানো পঞ্চাশ টাকার একটি নোট। তা-ও কিঞ্চিৎ ছেঁড়া। জাহিদ বিরক্ত হয়ে কাঠকাঠ গলায় বলল, ‘ধ্যাত মিয়া, পঞ্চাশ টাকায় ডাক্তার, কেমনে দেখামু?’

জিহাদ টাকাটা মাটিতে ছুড়ে ফেলল। আশবিন ঠোঁট উল্টিয়ে ফেলল। আস্তেধীরে হাঁটু গেড়ে বসে টাকাটা তুলে আবারও পকেটে গুঁজে রাখল। তারপর মুখ ভেংচি কেটে বলল, ‘নিলে নে, না নিলে নাই। আমি আবার একবারের বেশি কাউকে সাধি না।’

কোচ রাগান্বিত গলায় ধমকে বললেন, ‘এই ছেলে তুমি ওকে আহত করছো। এখন তুমিই ওকে ফার্মেসিতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে আনবা। খামাখা তোমার জন্য আমার একটা খেলোয়াড় কম পড়ে গেল।’

আশবিন ঠোঁট কামড়ে ধরে কিংকর্তব্যবিমুঢ় দাঁড়িয়ে আছে। অপরাধ বোধটা কাজ করছে তার। নিশান হুট করে বলে ওঠল, ‘আশবিন ক্রিকেটে খুব পারদর্শী, কোচ। আপনি ওকে আপনার দলে নেন। দেখবেন আপনিই জিতবেন।’

কোচ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে। আশবিন নিশানের হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলল, ‘আমি কি এইখানে খেলতে আইছি?’

নিশান ফিসফিস করে বলল,
‘খাট কাঁপানোর চিন্তায় মাঠ কাঁপাবি। নিজের এলাকার খেলা। অন্য এলাকার সাথে হারলে আমাদের এলাকার নামই বদনাম হইব। এলাকার সম্মান বাঁচাইতে খেলতে তো দোষ নাই।’

জাহিদের হয়ে খেলতে হবে আশবিনকে। একদিকে খেলা আর অন্যদিকে জিহাদকে ফার্মেসীতে নিয়ে আসার দায়িত্ব দু'টোই আশবিনের কাঁধে পড়ল। পিটতে এসে নিজেই বিপদে পড়ে গেল। ফার্মেসির সামনে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আশবিন। জিহাদকে ডাক্তার দেখছেন। হাতে ব্যান্ডেজ করতে হয়েছে। তাদের এখন বিল দিতে হবে। জিহাদের কাছে টাকা নাই। ও মাথা ঘুরিয়ে আশবিনের দিকে তাকাল। 

আশবিন চোখ দুটো ছোটো ছোটো করে খোঁচা দিয়ে বলল,
‘সেই তো আমার টাকাই নেওয়া লাগতাছে। হুদাই তখন ফাঁপর মারলি।’

জাহিদ শক্ত কণ্ঠে বলল, 
‘আমার এই অবস্থা তোর জন্যই হইছে।’

আশবিন ঠোঁট টিপে হাসলো। অন্য দিকে তাকিয়ে শিস বাজাতে লাগলো এমন ভাব যেনো সে জিহাদের কথাটা শুনতেই পায়নি। 
·
·
·
চলবে.........................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp