ফানুস - পর্ব ৩৯ - মৌরি মরিয়ম - ধারাবাহিক গল্প


          এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় পৌঁছতে রাত দুটো বেজে গেল। এত রাত হয়ে যাওয়ায় বেল বাজাল না প্রিয়। নিকিতাকে ফোন করল। নিকিতা জেগেই ছিল, প্রায় দৌড়ে এসে দরজা খুলল। প্রিয়কে দেখেই একটা হাসি দিল। প্রিয়ও হাসল। লাগেজটা নিকিতা নিতে চাইলে প্রিয় বলল, ‘পাগল নাকি? আমি নিচ্ছি, সরো তুমি।

প্রিয় ভেতরে ঢুকেই বলল, ‘শুদ্ধ কি ঘুমিয়ে?

নিকিতা বলল, ‘হ্যাঁ।’

লাগেজটা নিজের ঘরে রেখে প্রিয় শুদ্ধর ঘরে ঢুকল। পেছন পেছন নিকিতাও এল। প্রিয় শুদ্ধর বিছানায় বসে তাকে আদর করে নিকিতাকে জিজ্ঞেস করল, কেমন আছে ছেলেটা? সুস্থ আছে তো? মন ভালো তো?

‘সব ঠিক আছে। আমরা এই কদিন এত মজা করেছি যে ও তোমাকে মিস করার সুযোগই পায় নি।’

প্রিয় শুদ্ধর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল, ‘তাই নাকি?

‘হ্যাঁ, আমাদের বাসায় ছিলাম দুই দিন। আনিসা-আনিকার সাথে ওর খুব খাতির।’

প্রিয় শুদ্ধর কপালে একটা চুমু দিয়ে উঠে নিজের ঘরে গেল। নিকিতাও গেল পেছন পেছন। গিয়েই প্রিয়কে জড়িয়ে ধরল। প্রিয় বলল, ‘নিকিতা, আমি খুব টায়ার্ড। ফ্রেশ হতে দাও।

নিকি হেসে বলল, ‘কলিজাটা একটু ঠান্ডা করে নিলাম। এখন যাও, ফ্রেশ হও।’

প্রিয় ফ্রেশ হয়ে আসতেই নিকিতা বলল, ‘খেতে দিয়েছি, আসো।’

‘আমি খেয়ে এসেছি। এখন আর খাব না, তুমি খেয়ে নাও।

নিকিতার একা খেতে ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু খুব খিদে লাগায় দৌড়ের ওপর খেয়ে নিল একটু। তারপর যখন ঘরে এল, দেখল প্রিয় ঘুমে কাবু হয়ে আছে। নিকিতা কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল প্রিয়র মুখের দিকে। একদম বাচ্চাদের মতো লাগছে। এরপর প্রিয় পাশ ফিরতেই নিকিতা গিয়ে শুয়ে পড়ল। খুব লোভ হচ্ছে ওকে আবার জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু ও তো টায়ার্ড। যদি রাগ করে? ধুর, রাগ করলে করুক, বড়জোর একটা ধমকই তো খাবে। ওতে কিছু যায় আসে না। এসব ভেবেই যখন সে প্রিয়কে জড়িয়ে ধরল, প্রিয় তখন অবাক করে দিয়ে তাকে আরও ভালো করে জড়িয়ে ধরল। মুখটা গুঁজে দিল তার ঘাড়ের ভাঁজে। নিকিতা ভালো করে খেয়াল করল, প্রিয় গভীর ঘুমে মগ্ন। প্রিয়র প্রতিটা নিঃশ্বাস লাগছে। নিকিতার ঘাড়ে। ইশ, সজাগ প্রিয় এ রকমটা করলে কতই না ভালো হতো! পরক্ষণেই মনে হলো, ঘুমন্ত অবস্থায় অবশ্য অন্য রকম একটা অনুভূতি হচ্ছে। এটাও ভালো।

সকাল সকাল প্রিয় শুদ্ধকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। শুদ্ধকে স্কুলে দিয়ে সে অফিসে যাবে। যেহেতু রাতে ফিরে দেখা হয় নি, সকালবেলা কিছু সময় ছেলের সঙ্গে কাটানোর উদ্দেশ্যেই এই ব্যবস্থা। বেলা দশটার দিকে নিকিতা রেডি হচ্ছিল ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য। ঠিক তখনই বাবর খান। ডেকে পাঠালেন। নিকিতা যেতেই বললেন, ‘নিকিতা, প্রিয় কাল রাতে কখন ফিরেছে?

‘বাবা, ও তো রাত দুটার দিকে ফিরেছে।

‘ওর লাগেজ, কাপড়চোপড়–সব খুঁজে দেখো টিকিট পাবে। আই মিন কাল ও যে ফ্লাইটে ফিরেছে, ওই টিকিটটা একটু লাগবে। খুঁজে নিয়ে এসো।’

‘ঠিকাছে, বাবা।

নিকিতা লাগেজের বাইরের পকেটেই টিকিটটা পেয়ে গেল। টিকিটটা হাতে নিয়ে থমকে গেল নিকিতা। প্রিয় মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল! পেট্রা আপুর কাছে? একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে টিকিটটা নিজের হ্যান্ডব্যাগে চালান করে দিল। তারপর বাবর খানকে গিয়ে বলল, ‘বাবা, লাগেজে কোনো টিকিট পেলাম না। ও যে জামাকাপড়গুলো পরে ছিল, ওসবের মধ্যেও নেই। আলমারিতে কি খুঁজব? নাকি ওকে ফোন করে জিজ্ঞেস করব কোথায় রেখেছে?

বাবর খান বললেন, ‘না না, ঠিকাছে, লাগবে না। তুমি কি ভার্সিটিতে যাচ্ছ নাকি?

‘জি বাবা।’

‘ঠিকাছে, যাও তাহলে।

নিকিতা বেরিয়ে যেতে যেতে শ্বশুরের ঘরে একটা লোককে দেখতে পেল। লোকটা সামনের বাসায় থাকে। প্রায়ই দেখেছে নিকিতা। একদিন তো সরাসরি ওদের ঘরের দিকেই তাকিয়ে থাকতে দেখেছিল। তারপর থেকে নিকিতা ওদিকটার জানালায় পর্দা টেনে রাখত। যেহেতু শ্বশুরের কর্মচারী, তাই ভেবেছিল শ্বশুরকে ব্যাপারটা জানাবে কিন্তু পরে আর জানায়। নি। কারণ, তার আগেই খেয়াল হয়েছে, এই লোকটা যখনই বাসায় আসে, বাবা প্রিয়কে নিয়ে কথাবার্তা বলে। আর লোকটা তখনই আসে, যখন প্রিয় বাসায় থাকে না। তার কাছে প্রিয় সম্পর্কে এটা-ওটা জিজ্ঞেস করে। কিন্তু কেন? কে এই লোক?

সকালে-বিকেলে অনেকবার ফোন করল নিকিতা, কিন্তু প্রিয় ধরল না। সন্ধ্যাবেলা নিজেই ফোন করল, ‘হ্যালো নিকিতা, বলো কেন ফোন করেছিলে?

‘যখন ফোন করেছি, তখন ধরতে পারলে না? এখন তো আমি বাসায় চলে এসেছি।’

‘আরে ভাই, আমি ব্যস্ত ছিলাম। কয় দিন পর আজকে অফিসে ঢুকেছি? দুনিয়ার কাজ পড়ে রয়েছে। বলো কী বলবে?

‘এখন আর বলা যাবে না। বাসায় আসো, তারপর বলব।

‘কেন বলা যাবে না?

‘সেটাও বলা যাবে না।

‘উফ নিকিতা, তুমি দিন দিন বহুত ঢঙি হচ্ছ। রাখলাম আমি।

এ কথা বলে প্রিয় ফোন রেখে দিল। নিকিতা মনে মনে বলল, রাখো তুমি ফোন। এসব এখন বলে বিপদে পড়ি আর কী! অত গাধা-গরু না আমি।’

—————

প্রিয় চলে গেছে কাল রাতে। অথচ এখনো ওর রেশ রয়ে গেছে পেট্রার ছোট্ট বাসাটাতে। তোয়ালে, বিছানা-বালিশ থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ওর শরীরের ঘ্রাণ। তার জন্য থাইল্যান্ড থেকে আনা ব্যাগ, জুতা, ঘড়ি, কসমেটিকস এখনো খোলে নি। সবকিছুতে প্রিয়র স্পর্শ! সব জায়গায় যেন প্রিয় এখনো আছে। অফিস থেকে ফিরে এসবই আবিষ্কার করল সে। কাল এমন সময় সে প্রিয়র সঙ্গে কত পাগলামি করছিল! প্রিয় কেন তাকে এত ভালোবাসে? মাঝেমধ্যে গর্ব হয় প্রিয়কে নিয়ে। গত তিন দিনে প্রিয় তার সব কষ্ট, না-পাওয়া, গ্লানি নিমেষেই মুছে দিয়েছে। এই তিন দিনের স্মৃতিগুলো নিয়ে বাকিটা জীবন সে অনায়াসে পার করে দিতে পারবে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের পেটের দিকে তাকাল। পেটে হাত রেখে চোখ বন্ধ করে মনে মনে প্রার্থনা করল পেট্রা, ‘হে ঈশ্বর প্লিজ, একটা ছোট্ট প্রিয় আমাকে দাও। জীবনে আর কিছু চাইব না তোমার কাছে।

—————

প্রিয় অফিস থেকে বাসায় ফিরতেই শুদ্ধ এল ঘরে। দুই বাপ-ছেলে অনেক গল্প করল, খেলল। প্রিয় শুদ্ধর জন্য যেসব গিফট এনেছিল, সেসব দিল। নিকিতা উশখুশ করতে লাগল কিন্তু কিছু বলার সাহস পেল না। শুদ্ধর সামনে তো আর এসব বলা যায় না। ডিনারের পর শুদ্ধ ঘুমাতে গেলে প্রিয় নিজের ঘরে এল। বারান্দার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরাতে ধরাতে নিকিতাকে বলল, তোমার জন্য থাইল্যান্ড থেকে কিছু ব্যাগ আর অর্নামেন্টস এনেছিলাম। লাগেজে আছে।

‘ওসব পরে দেখব। আগে আমার জরুরি কথা শোনো।’

‘কী জরুরি কথা?

‘যেজন্য ফোন করেছিলাম।

ও হ্যাঁ, বলো।’ নিকিতা প্রিয়র সামনে গিয়ে দাঁড়াল। বলল, এই যে আমি দক্ষিণের জানালাটা সব সময় বন্ধ করে পর্দা ফেলে রাখি, কখনো জিজ্ঞেস করলে না তো কেন রাখি?

‘বাসায় থাকিই তো রাতটুকু। কোন জানালা বন্ধ, কোনটা খোলা, এত সব দেখব কখন?

‘তোমার যে খানদানি বাপ, তোমার আরও সাবধান হওয়া উচিত ছিল।’

‘মানে? কী বলতে চাচ্ছ, সরাসরি বলো।’

‘ওই দিকের বিল্ডিংয়ে তোমার বাবার এক কর্মচারী থাকে। হাঁ করে তাকিয়ে থাকে এই দিকে।’

‘তোমাকে দেখে বোধ হয়। সুন্দরীদের এই এক বিপদ বুঝলে, সবাই হাঁ করে গিলে।’

এ কথা বলে প্রিয় হাসল। নিকিতা বলল, আমার মনে হয় ওই লোক তোমার বাবার স্পাই। সেই লোকই সব খবরাখবর তোমার বাবাকে দেয়।

চমকে গেল প্রিয়। বলল, ‘কী বলো? এ রকম মনে হওয়ার আর কোনো কারণ আছে?

‘আছে। লোকটা যখনই আসে, তখনই বাবা তার সাথে তোমাকে নিয়ে আলোচনা করে। তার সাথে কোনো কাজের আলাপ করতে দেখি নি। কখনো আর উনি এলে প্রায়ই আমাকে ডেকে তোমার ব্যাপারে এটা-ওটা জিজ্ঞেস করে।

‘আমাকে আগে বলে নি কেন?’

‘আগে ব্যাপারগুলো খেয়াল করি নি। আজই সব মিলিয়ে দেখলাম– দুয়ে-দুয়ে চার হয়ে গেল।

‘আজ কি বিশেষ কিছু ঘটেছে?

‘হ্যাঁ। আজ বাবা আমাকে তোমার লাগেজ আর কাপড়চোপড় ঘেঁটে ফ্লাইটের টিকিট খুঁজে দিতে বলেছিল। কী কারণে যেন লাগবে। ওই লোকটা তখন বাবার ঘরেই ছিল।

প্রিয়র চোখ কপালে উঠল, ‘সর্বনাশ! দিয়ে দিয়েছ?

‘না। প্রথমে ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ঘামাই নি। বাবার কথামতো খুঁজে বের করেছি। কিন্তু যখন দেখলাম মালয়েশিয়ার টিকিট, তখন আর দিই নি। বলেছি কোনো টিকিট পাই নি।

প্রিয়র অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। নিকিতা চুপ করে মাথা নিচু করে রইল। প্রিয় কাছে এসে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিকিতার ঘাড়ে হাত রেখে বলল, ‘নিকিতা!

নিকিতা তাকাল। প্রিয় বলল, ‘তার মানে তুমি জেনে গেছ আমি পেট্রার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তবু তুমি বাবাকে টিকিটটা দিলে না কেন?

‘হুম, বুঝেছি, পেট্রা আপুর সাথে দেখা করতে গিয়েছ। পেট্রা আপু হুট করে না বলে চলে যাওয়াতে তুমি খুব কষ্ট পেয়েছ, অস্থিরতার মধ্যে ছিলে। তাই হয়তো একটা বোঝাপড়া করতে গিয়েছ বা অন্য কিছুও হতে পারে। আমি ঠিক জানি না। কিন্তু বাবা এভাবে তোমার পেছনে লোক লাগিয়ে রাখে, ভাবতেই গা গুলিয়ে উঠছে আমার। আগেও বাবা অনেকবার বলেছে যে তোমাকে ফলো করার জন্য তার লোক আছে। তুমি যা-ই করবে, তার কানে চলে যাবে। কিন্তু ব্যাপারটা যে এ রকম বেডরুমে উঁকি দেওয়ার মতো বিশ্রী, তা ভাবতেই ঘৃণা লাগছে আমার। তোমার ফ্লাইটের টিকিট আমি কেন দেব ওদের? তুমি পেট্রা আপুর কাছে গিয়েছিলে এটা জানতে পারলে বাবা কী-না-কী করবে, তার নেই ঠিক। টিকিটটা আমি আমার ব্যাগে রেখে দিয়েছি। তুমি ওটা পুড়িয়ে দাও।

‘পেট্রার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম জেনেও এত স্বাভাবিক আছ। কী করে? আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।’

‘আগে যা উল্টোপাল্টা করেছি, তা আমি না বুঝেই করেছি। তার জন্য আমি লজ্জিত। পেট্রা আপুকে তো আমি চিনতাম না, ভাবতাম সে আমার শত্রু। আমার ঘর ভাঙবে হয়তো। এখন জানি পেট্রা আপু কখনো আর তোমার জীবনে ফিরবে না। আমার জন্য তোমরা আলাদা হও নি, আমি না থাকলে তোমরা আবার এক হতে পারবে, এমনও না ব্যাপারটা। তাই তাকে শত্রু ভাবার কোনো মানে হয় না। আপুর জন্যই আমি শুদ্ধর মুখে মা ডাক শুনতে পাচ্ছি। বিয়ের আগে যখন শুনেছিলাম যে তোমার পাঁচ বছর বয়সী একটা ছেলেকে পালতে হবে, তখন কষ্ট পেয়েছিলাম কিন্তু আজ এই ছেলের মা হতে পেরেই আমি খুশি। এমন ছেলের মা হওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। সব আপুর জন্যই হয়েছে। কারণ, আপুই ওকে শিখিয়েছে আমাকে মা ডাকতে। কত বড় মন হলে মানুষ এটা পারে! আমি হলে কখনো পারতাম না। উল্টো খারাপ ব্যবহার করতে শিখিয়ে দিতাম।

শেষ কথাটা শুনে প্রিয় হেসে ফেলল। তারপর বলল, ‘নিকিতা, এত বুঝতে শিখলে কবে তুমি?

‘তোমাকে হারিয়ে শিখেছি। তুমি যখন বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলে, তখন পেট্রা আপু আমার সাথে দেখা করে আমার ভুল ভাঙিয়ে দিয়েছিল। তার ওপর তোমার বাবার হুমকি-ধমকি আর তোমার অনুপস্থিতি, এসবই আমাকে সবকিছু বুঝতে শিখিয়ে দিয়েছে। তুমি ফিরে এলে পেট্রা আপুর সব জিনিস ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলাম না একটা সুযোগ দাও, আর ভুল করব না?

অদ্ভুত একটা চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে প্রিয়র বুকের মধ্যে। নিঃশ্বাস নেওয়াটাও এখন একটা যুদ্ধ বলে মনে হচ্ছে। প্রিয় দুহাতে নিকিতার মুখটা ধরল। নিকিতা চোখ নামিয়ে নিল। প্রিয় এবার বলল, ‘নিকিতা, সব বউই যেমন তাদের স্বামীদের ভালোবাসে, তুমি প্রথম প্রথম আমাকে তেমন ভালোবাসতে। কিন্তু তুমি বোধ হয় এখন আমাকে সত্যিকারভাবে ভালোবাসছ, যাকে বলে পৃথিবীর শুদ্ধতম ভালোবাসা। যখন অন্যায় কাজ করতে, চেঁচামেচি করতে, আমিও তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতাম। আমার মধ্যে কোনো গ্লানি ছিল না। অপরাধবোধ ছিল না। কিন্তু আজ থেকে যে তুমি আমার বোঝা বাড়িয়ে দিলে! তোমার এই শুদ্ধতম ভালোবাসা শোধ করব কীভাবে আমি? আমি তো কখনো তোমাকে ভালোবাসতে পারব না!

নিকিতা চমকে তাকাল প্রিয়র দিকে। প্রিয়র শেষ কথাটা ওর বুকে বিধল। প্রিয়র মুখে সে বহুবার শুনেছে এ কথা। তবু বারবার কেন একই রকম কষ্ট হয়? সেকেন্ডের মধ্যেই কখন চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পড়তে লাগল, নিজেই টের পেল না। প্রিয় দুহাতে নিকিতার চোখের পানি মুছে দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘সরি নিকিতা। সত্যিই আমি কখনো তোমাকে ভালোবাসতে পারব না।’

‘ভালোবাসতে হবে না তোমার। দোহাই লাগে, চুপ করো।’

নিকিতা এবার প্রিয়কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল।
·
·
·
চলবে....................................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp