ফানুস - পর্ব ২৯ - মৌরি মরিয়ম - ধারাবাহিক গল্প


          প্রিয়র যখন জ্ঞান ফিরল, চোখ মেলে নিজেকে আবিষ্কার করল নিজের বিছানায় শুদ্ধও পাশেই ঘুমিয়ে আছে। খুব বেশি অবাক হলো না, এমনটা তো হওয়ারই কথা ছিল।

প্রিয়র নদীতে খুব ভালো লাগছিল। কিন্তু শুদ্ধর ভয়ংকর রকম ঠান্ডা লেগে যাওয়ার খুলনা শহরে চলে এল। হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা গেল নিউমোনিয়া হয়েছে। ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালেই পড়ে রইল প্রিয়। প্রতিমুহূর্ত কেটেছে আতঙ্কে। বাবর খান কখন টের পেয়ে এসে যাবে সেই আতঙ্ক। অবশ্য তার টের পাওয়ার কোনো পথ রাখে নি প্রিয়। এর মধ্যে আর টাকাও তোলে নি। পেট্রা যদি বাবর খানকে ফোন নম্বর দিয়েও দেয় বা পেট্রার ফোন ট্রেস করে থাকে তবুও তাকে খুঁজে পাওয়ার কথা নয়, কারণ সে ফোনটা আর খোলে নি।

ঘটনাটা ঘটল হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর। হাতে টাকা ছিল, হাসপাতালের বিল কার্ডের মাধ্যমে শোধ করতে হবে। তাই আগেই খুলনা ছাড়ার জন্য গাড়ি ঠিক করে আনল। তারপর কেবিনে গিয়ে শুদ্ধকে নিয়ে এসে বিল শোধ করল।

খুলনা ছাড়ার আগেই গাড়ি জ্যামে পড়ে ছিল। একটা মহিলা এসে বেলি ফুলের মালা সাধল। তার এখন মালা দেওয়ার মতো কেউ নেই, তবুও মালা দেখে কিনল। আগে প্রায়ই পেট্রাকে বেলি ফুলের মালা কিনে দিত। পেট্রা এই সামান্য জিনিস পেয়ে কী যে খুশি হতো! কত স্মৃতি। এসব স্মৃতি ভেতরটা জ্বালিয়ে দেয়। এসব ভাবতে ভাবতে প্রিয় টাকা বের করছিল, মহিলা ফুলের মালা দেওয়ার সময় মালাটা খুব দ্রুত তার নাকের সামনে ধরল, আর কিছু মনে নেই প্রিয়র।

শুদ্ধকে ডেকে তুলল প্রিয়। শুদ্ধ চোখ মেলে বলল, বাবা, আমি আরেকটু ঘুমাই?

‘আচ্ছা বাবা ঘুমা।

শুদ্ধকে সুস্থ দেখে প্রিয় স্বস্তি পেল। ঘর থেকে বের হতেই বাবর খান বললেন, ‘ওয়েলকাম মাই সান।

কিছুই হয় নি এমন ভান করে প্রিয় খেতে বসল। বাবর খান টেবিলে এসে বসলেন। তারপর বললেন, তোমার মতো বোকা ছেলে আমি আর একটাও দেখি নি জানো প্রিয়?

প্রিয় পাত্তা দিল না। নিকিতা খাবার তুলে দিতে যাচ্ছিল, প্রিয় হাতের ইশারায় তাকে বাধা দিল, তারপর নিজেই তুলে নিল। বাবর খান বললেন, ‘তুমি ভাবলে কী করে আমি তোমাকে খুঁজে পাব না? তুমি জানো না বাংলাদেশের সব জেলায় আমার লোক আছে?

প্রিয় নির্বিকারভাবে খেতে লাগল। উনি আবার বললেন, ‘প্রথমদিকে আমি কিছু ঝামেলায় পড়ে তোমাকে নিয়ে মাথা ঘামাই নি।

প্রিয় এবার হেসে ফেলল। বাবার দিকে না তাকিয়েই বলল, ‘হ্যাঁ, দেখেছি তোমার কয়েক শ অবৈধ অস্ত্র চট্টগ্রাম পোর্টে ধরা পড়েছে। আহারে, কত টাকা লস হলো?

নিকিতা চমকে উঠল। একবার শ্বশুর আরেকবার ছেলের দিকে তাকাল। নিকিতার সামনে এ কথা বলায় বাবর খান একটু বিব্রত বোধ করলেন। প্রিয়কে ধমকে বললেন, ‘কী যা তা বলছ? মাথা ঠিক আছে তোমার?

প্রিয় নিঃশব্দে হাসল। বাবর খান আর কিছু বললেন না। কিছুক্ষণ পর নিকিতা রান্নাঘরে গেল চা বানাতে। বাবর খান প্রিয়কে একা পেয়ে বলল, ‘আরেকবার এসব কথা সবার সামনে বললে পেট্রার ভাইবোন দুটোকেও উপরে পাঠিয়ে দেব। প্রয়োজনে পেট্রাকেও। তুমি ভালো করেই জানেনা তোমার অপরাধের শাস্তি আমি বরাবরই তোমার প্রিয়জনদের দিয়ে থাকি।

বাবর খান বেরিয়ে গেলেন। প্রিয় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল তার চলে যাওয়া পথের দিকে।

—————

প্রিয় নাস্তা খেয়ে ঘরে ফিরে এল। প্রিয়র পিছু পিছু নিকিতা এল। প্রিয় না দেখার ভান করল। কিন্তু নিকিতা হঠাৎ করেই প্রিয়কে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিল। প্রিয় নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল, তোমার সাহস তো কম না, ছাড়ো।’

‘প্লিজ একটু থাকতে দাও। এরপর মেরে ফেললো, আপত্তি নেই।

প্রিয় নিকিতাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল। নিকিতা কাঁদতে কাঁদতে বলল, আমাকে মাফ করে দাও প্রিয়।

প্রিয় কড়া গলায় বলল, ‘তুমি এর আগেও মাফ চেয়েছ, বলেছ আর কখনো ভুল করবে না। তারপর তুমি সর্বোচ্চ ভুলটা করেছ, যার কোনো মাফ হয় না। প্লিজ নিকিতা, আমার চোখের সামনে থেকে চলে যাও, তোমাকে আমার অসহ্য লাগছে। তুমি আপাদমস্তক একটা বিষ।

‘এবার শেষবারের মতো মাফ করে দাও। এতদিন তোমাকে ছাড়া থেকে আরও ভালোভাবে বুঝেছি আমি আসলে তোমাকে কতটা ভালোবাসি। পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তোমার জন্য। একটা রাত ঘুমাতে পারি নি, খেতে পারি নি। তোমাকে ছাড়া আমি মরে যাব। প্লিজ মাফ করো।’

প্রিয় যেন সেসব শুনেও শুনল না। পত্রিকা নিয়ে বসল। নিকিতা প্রিয়র পাশে বসে তার হাত ধরে বলল, আমি পেট্রা আপুর চিঠিসহ সব জিনিস সরিয়ে রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম পরের দিন সুযোগ বুঝে পুড়িয়ে দেব। তার আগেই তুমি বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে। কিছু বলারও সুযোগ পেলাম না।

প্রিয় বিস্ময়ে হতবাক। নিকিতা কি সত্যি বলছে? প্রিয়র ভয় হতে লাগল। এসব যদি সত্যিই অক্ষত থাকে আর তা নিয়ে যদি নিকিতা এখন তাকে ব্ল্যাকমেইল করে! নিকিতা আবার বলল, বাবা বলেছেন তুমি নাকি প্রায়ই এমন করো, বাবা যেভাবেই হোক তোমাকে ফিরিয়ে আনবেন। ছোট একটা আশা মনে নিয়ে আমি সব যত্ন করে রেখে দিয়েছি। আমি এক্ষুনি সব ফেরত দিয়ে দেব। একটা জিনিসও আমি নষ্ট করি নি। তুমি শুধু আমাকে মাফ করে দাও প্লিজ।

‘কোথায় রেখেছ ওগুলো? এক্ষুনি ফেরত দাও।’

যেখানে যেটা ছিল আবার সেখানে সেটা রেখে দিয়েছি। শুধু ল্যাপটপ, মোবাইলের জিনিসগুলো দিতে পারব না। ওগুলো ডিলিট করার আগে কোথাও রাখি নি। মাফ করে দাও আমাকে প্লিজ।

প্রিয় নিকিতার হাত ছাড়িয়ে দিয়ে চাবি বের করল, তারপর ওয়ারড্রবের ড্রয়ার খুলল। প্রত্যেকটা ড্রয়ার খুলে সব ঠিকমতো আছে দেখতে পেয়ে অদ্ভুত একটা আনন্দ হলো। চোখে জল এসে গেল। এই আনন্দের অনুভূতি ভীষণ অদ্ভুত। সমস্ত শরীর কাঁপতে লাগল, অসাড় হয়ে এল হাত-পা, চোখ দুটো বুজে এল। নিকিতা এখনো পাগলের মতো কাঁদছে। প্রিয়র পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে ওর হাতের বাহু ধরে বলল, বলো না মাফ করেছো তো? কিছু নষ্ট করি নি, একটা চিঠিও না।

প্রিয় নিকিতাকে দুহাতে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘থ্যাংক ইউ নিকিতা। থ্যাংকস আ লট।

নিকিতা অবাক। এটা কী হলো? প্রিয় নিজে তাকে জড়িয়ে ধরেছে। প্রিয়র বুকে মাথা রেখে সে কাঁদতেও ভুলে গেল।

—————

ফিরে এসেছে এই খবরটা দেওয়ার জন্য পেট্রাকে ফোন করবে ভেবেও করল না প্রিয়। ফোন করে কী-ইবা হবে, কয়েকটা নীতিবাক্য শুনিয়ে দেবে। তখন মেজাজ ভীষণ খারাপ হবে। যোগাযোগ রাখবে না বলেই তো ফোন নম্বর বদলেছে। প্রিয় চেষ্টা করলে নতুন নম্বর জোগাড় করতে পারবে কিন্তু সেটা করলে মেয়েটা রেগে যাবে। পেট্রার বাবার মৃত্যুর পর থেকেই সে অনেক দূরের মানুষ হয়ে গেছে। কোনোকিছু দিয়েই তাকে গলানো সম্ভব হয় না। কিন্তু এই মৃত্যুর পেছনে প্রিয়র তো কোনো হাত নেই, এটা পেট্রা বোঝে না কেন? তার বাবার শাস্তি তাকে কেন দিচ্ছে? পেট্রা যদি প্রিয়কে না বোঝে তাহলে পৃথিবীর কেউ বুঝবে না। সে-ই তো ছিল প্রিয়র জীবনের সবকিছু বোঝার মানুষ।

নিকিতা প্রিয়র দিকে তাকিয়ে দেখতে পেল, প্রিয় একদৃষ্টিতে তাকিয়ে কী যেন ভাবছে। ইশ কত দিন পর আবার প্রিয় তার চোখের সামনে। একই বিছানায়। শুদ্ধকে সরিয়ে এপাশে এনে প্রিয়র পাশে গিয়ে শুতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু সাহস হচ্ছে না। আজ প্রিয় নিজে তাকে বুকে টেনে নিয়েছে। কিছুক্ষণের জন্য হলেও এত বছর পর আজ প্রিয়র বুকে জায়গা পেয়েছে। সে। এরচেয়ে সুখের বিষয় আর কী হতে পারে? প্রিয় যে ভালোবাসা থেকে জড়িয়ে ধরে নি তা সে জানে। খুশিতে আত্মহারা হয়ে ধরেছে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ছিল এটা। কিন্তু তার জন্য ছিল স্বর্গীয় অনুভূতি। প্রচণ্ড আবেগময় একটা মুহূর্ত। আজ আর কোনো অকাজ করে প্রিয়র বকা শুনতে চায় না সে। আজ সেই স্বর্গীয় অনুভূতি বুকে আঁকড়ে থাকতে চায়। এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যেন ঘুমিয়ে পড়ল।

—————

সারা দিন বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগে না প্রিয়র। আবার নতুন চাকরির চেষ্টা করতে লাগল। কয়েক মাসের মধ্যে পেয়েও গেল। নিকিতারও কিছুটা মাথা ঠান্ডা হয়েছে। এখন আর উল্টোপাল্টা কোনো কাজ করে না। প্রথম প্রথম নিকিতার সঙ্গে কথা বলত না শুদ্ধ। কিন্তু যখন জানতে পেরেছে নিকিতা তার মায়ের কোনো জিনিস নষ্ট করে নি, ফেরত দিয়ে দিয়েছে, তখন থেকে আবার সব ঠিক। তবে শুদ্ধ এখন আর তাকে ‘মা’ বলে ডাকে না, ‘আন্টি ডাকে।

—————

পেট্রা অফিস থেকে ফিরে রান্নাবান্না করে রায়ানের ঘরে ঢুকল। একটা জরুরি বিষয়ে আলোচনা করা দরকার। ছেলেটা এতক্ষণ বাসায় ছিল না, কিছুক্ষণ আগেই ফিরেছে। ঘরে ঢুকে দেখল রায়ান বাথরুমে গেছে। বিছানাটা একদম অগোছালো করে রেখেছে। পেট্রা বিছানাটা গুছিয়ে দিল। বিছানা গোছাতে গিয়ে সে একটা কানের দুল খুঁজে পেল। কানের দুলটা হাতে নিয়ে তাকিয়ে রইল সেটার দিকে। তাহলে কি…? রায়ান তো এখন বড় হয়েছে, এসব খুব অস্বাভাবিক কিছু না। মনে মনে হাসল পেট্রা, ভাইটা এত বড় হয়ে গেছে অথচ সে টেরই পায় নি এতদিন! রায়ান বের হওয়ার আগেই পেট্রা কানের দুলটা নিয়ে চলে গেল।

রাতে খাওয়ার সময় পেট্রা বিষয়টা তুলল।

‘রায়ান, তোর সাথে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিল।

‘হ্যাঁ, বল।’

একটা ভালো খবর আছে।’

‘তোর প্রোমোশনটা হয়ে গেছে দি?

‘না, সেটা হয়তো হতো। কিন্তু এখন একটা ভিন্ন ব্যাপার হয়েছে। আমি মালয়েশিয়াতে একটা চাকরির চেষ্টা করেছিলাম। সেটা হয়ে গেছে।

‘দি, তুই চলে যাবি আমাকে রেখে?

‘তোকে রেখে যাব কেন? তুইও আমার সাথে যাবি। ওখানকার মেডিকেলে ভর্তি হবি।’

‘যদি চান্স না পাই!’

‘তুই পাবি আমি জানি। এখনো কয়েকমাস সময় আছে, এখন থেকেই ঘাটাঘাটি শুরু করে দে। কোন মেডিকেল কলেজ ভালো খোঁজ লাগা। আচ্ছা আমিই খোঁজ নেব। আর তোর ভিসার ব্যবস্থাও আমি করছি দাঁড়া।

তারপর হঠাৎ কানের দুলটার কথা মনে হতেই বলল, ‘তুই কি কোনো কারণে দেশ ছেড়ে যেতে চাচ্ছিস না? না চাইলে তুই প্রিয়াঙ্কার কাছে। থাকতে পারিস। আমি একা যাব। ওখানে আমার ইনকাম আরও বাড়বে। আরও ভালো থাকতে পারব আমরা সবাই।

‘না দি, এমন কিছু না। তুই যেখানে থাকবি আমিও সেখানেই থাকব। তোকে কখনো একা থাকতে দেব না। কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায়।

‘কী সমস্যা?

রায়ান আমতা আমতা করতে লাগল। পেট্রা বলল, ‘গার্লফ্রেন্ড?

রায়ান হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল। পেট্রা বলল, এত সংকোচ করছিস কেন? আমি-প্রিয়াঙ্কা দুজনই স্কুলে থাকতে প্রেম করেছি। তুই তো বেশ বড় হয়েই করেছিস।

‘সেজন্য সংকোচ করছি না। আসলে…’

পেট্রাকে চিন্তিত দেখাল। জিজ্ঞেস করল, ‘আসলে কী?

‘ও মুসলিম!

‘সর্বনাশ! আমাকে দেখেও শিক্ষা হয় নি তোর?

রায়ান মাথা নিচু করে রইল। পেট্রা বলল, ‘সিরিয়াস রিলেশনশিপ? বিয়ে করবি ওকে?

‘হ্যাঁ।’

‘দেখ, আমাদের তো কোনো সমস্যা নেই। বাবা-মা থাকলে হয়তো মানত না। তবে আমাদের দুই বোনের কোনো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু মেয়ের পরিবার?

‘কোনোদিনও মানবে না। অনেক কনজারভেটিভ ফ্যামিলি।

পেট্রা চিন্তায় পড়ে গেল। বলল, তাহলে কীভাবে বিয়ে করবি? প্ল্যান কী তোদের?

‘ও বাসায় মানাতে চাইবে, না মানলে একাই চলে আসবে, এরকমই প্ল্যান ছিল।

‘মেয়ে কতটুকু?

‘কলেজে পড়ে, ফার্স্ট ইয়ার। মেয়েটাকে তুই চিনিস।

‘আচ্ছা! কে?

‘আনিসা।

‘আনিসা? ও না তোর সাথেই পড়ে? তোর সব বন্ধুরা যখন বাসায় আসত, তখন আনিসাও তো আসত।

রায়ান মাথা চুলকে খানিকটা ভয়ে ভয়ে বলল, ‘হ্যাঁ, বাসায় আনার জন্য মিথ্যা বলেছিলাম। আসলে আমার জুনিয়র।

পেট্রা হেসে দিল। বলল, ‘আচ্ছা, অসুবিধা নাই। তোরা এখনো ছোট, নিজেদের মতো পড়াশোনা করতে থাক। বিয়ের এখনো বহু দেরি।

‘হ্যাঁ, তা তো অবশ্যই। কিন্তু দি, যদি পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই জোর করে আনিসাকে বিয়ে দিতে চায়?

‘আনিসা তখন আমাদের জানাবে, আমরা একটা ব্যবস্থা নেব।’

কিন্তু দেশে না থাকলে হুট করে এটা কীভাবে সম্ভব?

‘তুই ভাবছিস কেন? আমরা না থাকলেও প্রিয়াঙ্কা থাকবে, প্রিয়াঙ্কার বর থাকবে। ওরা হেল্প করবে।’

রায়ান এবার হুট করেই বলল, ‘দি, তুই কি প্রিয়দাকে তোর জীবন থেকে একেবারেই মুছে ফেলতে চাস? সেজন্যই পালাচ্ছিস?

পেট্রা রায়ানের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ চাই। আমি যতদিন ওর ত্রিসীমানায় থাকব ততদিন ও বাঁচতে পারবে না। আমি তার হাতের নাগালের বাইরে গেলে হয়তো সে আমার মধ্য থেকে বের হতে পারবে।

রায়ান অসহায়ের মতো তাকিয়ে রইল। পেট্রা হেসে কথা ঘুরিয়ে ফেলল। খাওয়া শেষ করে টেবিল থেকে ওঠার সময় কানের দুলটা রায়ানের সামনে রেখে বলল, এটা বোধহয় আনিসার, ওকে দিয়ে দিস।

রায়ান এবার ঘাবড়ে গেল। পেট্রা উঠে বেসিনে হাত ধুতে লাগল। তার খুব হাসি পাচ্ছিল। কারণ রায়ানের চেহারাটা এখন দেখার মতো হয়েছে!
·
·
·
চলবে...................................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp