ফানুস - পর্ব ৩০ - মৌরি মরিয়ম - ধারাবাহিক গল্প


          রাতে খাওয়ার পর নিকিতা কাজের মেয়েটার সঙ্গে বাড়তি খাবারগুলো গোছাচ্ছিল। প্রিয় ড্রয়িংরুমে টিভিতে খবর দেখছিল। হঠাৎ ডাইনিংরুমে একটা আওয়াজ হলো। প্রিয় দৌড়ে গিয়ে দেখল, নিকিতা অচেতন অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রিয় ওকে কোলে তুলে ঘরে নিয়ে গেল। বিছানায় শুইয়ে দিল। শ্বাস চলছে কি না পরীক্ষা করল। তারপর ফ্যানটা ফুল স্পিডে ছেড়ে দিল। কী হলো আবার এই মেয়ের? একটা হাত তার দুহাতের মধ্যে নিয়ে ঘষে দিল। পায়ের তালুতেও হাত দিয়ে ঘষে দিল। তারপর চোখেমুখে পানির ছিটা দিতেই চোখ খুলল নিকিতা। অস্পষ্ট স্বরে পানি খেতে চাইল। প্রিয় পানি ঢেলে তাকে ধরে উঠাল, তারপর পানি খাইয়ে দিল। খানিকটা পানি গ-স থেকে ছলকে বাইরে পড়ল। নিকিতার জামা কিছুটা ভিজে গেল। প্রিয় ওড়না দিয়ে চেপে চেপে মুছে দিল। তারপর আবার শুইয়ে দিল। প্রিয় নিকিতার মাথায় হাত রেখে বলল, ‘কী হয়েছে তোমার?

নিকিতা অস্পষ্ট স্বরে বলল, ‘কিছু না।

‘বেশি খারাপ লাগছে? ডাক্তার ডাকব?’

নিকিতা না-সূচক মাথা নেড়ে আগের মতোই অস্পষ্টভাবে বলল, ‘ঠিক হয়ে যাব।’

প্রিয় এবার নিকিতার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, ‘আচ্ছা এখন চুপচাপ শুয়ে থাকো। সকালে না হয় ডাক্তার ডেকে আনব।’

এমন সময় কাজের মেয়েটা দরজায় নক করল। প্রিয় বলল, কে? দরজা খোলা আছে, ভেতরে এসো।

মেয়েটা ভেতরে ঢুকে বলল, ‘ভাবির কী হইসে ভাইজান? আমারে লাগব?

‘কিছু হয় নি। তুমি যাও শুয়ে পড়ো।

‘আইচ্ছা।’

মেয়েটা দরজা লাগিয়ে চলে গেল। প্রিয় আবার নিকিতার দিকে তাকাল। চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। কী হয়েছে ওর কে জানে! কখনো ওর কোনো খোঁজখবর রাখে না সে। সত্যি বলতে নিকিতার তো কোনো দোষ নেই। অল্পবয়সে বিয়ে হলো। কত স্বপ্ন নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছিল। অথচ তার পর থেকে শুধু কষ্টই পেল। ঠিক যেমনটা পেয়েছে পেট্রা। তার জীবনের সঙ্গে যার জীবন জড়ায়, তার জীবনটাই তছনছ হয়ে যায়। কাউকে সুখী করার যোগ্যতা তার নেই। সে একটা অকালকুষ্মাণ্ড।

—————

শুদ্ধর ফাইনাল পরীক্ষা শেষ, তাই দাদার সঙ্গে কয়েকদিনের জন্য সাভার বেড়াতে গেছে। নিকিতা যায় নি। প্রথম দিন থেকেই প্রিয় তাকে অন্যঘরে শুতে বলেছে। প্রিয়কে রাগাতে চায় না বলে নিকিতা বিনা বাক্যব্যয়ে তা-ই করেছে। কিন্তু রাতে একফোঁটা ঘুম হয় না। এমন না যে প্রিয়র সঙ্গে ঘুমালে তার সেরকম কোনো লাভ আছে তবু এক বিছানায় ঘুমানোটাও অনেক, অন্তত চোখের সামনে তো থাকে। তাই বহু ভেবে এই অসুস্থতার নাটক করার পরিকল্পনা করেছে নিকিতা। চেহারায় অসুস্থ ভাব এনে পড়ে থাকলেও মনে মনে হাজার গোলাপের বাগানে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াচ্ছে সে। মনে মনে আউড়ে গেল, এক বিছানায় ঘুমাবে না! এখন তো নিজেই কোলে করে বিছানায় তুলেছ। পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে কেমন লাগছে জনাব?

—————

ডাক্তার নিকিতার কোনো অসুস্থতা খুঁজে পায় নি। বলছে শরীর দুর্বল। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করলে, রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে। ডাক্তার চলে যাওয়ার পর প্রিয় বিছানার পাশে বসে বলল, তুমি ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করো না?

নিকিতা শুয়ে ছিল। বলল, ‘করি তো।

‘তাহলে এই অবস্থা কেন?’

‘জানি না।’

মাথা নিচু করে বলল নিকিতা। প্রিয় উঠে গিয়ে অফিসের জন্য রেডি হতে হতে বলল, তোমার শ্বশুরকে জানাও যে তুমি অসুস্থ। ফিরে আসতে বলো।

‘বাবা এমনিতেই পরশু ফিরে আসবে। তা ছাড়া ডাক্তার তো বলেছে আমার কিছু হয় নি।

‘আচ্ছা, ঠিকাছে।

প্রিয় ঘড়ি পরতে গিয়ে টেবিলের ওপর নিকিতার বইখাতা দেখে জিজ্ঞেস করল, পড়াশোনা করে ঠিকমতো, নাকি সব গোল্লায় দিয়েছ?”

‘আমি একদম লক্ষ্মী মেয়ের মতো পড়াশোনা করি।’

‘তাহলে তো ভালোই। শোনো নিকিতা, আজ না বুঝলেও একদিন বুঝবে যে এই গ্র্যাজুয়েশনটা করে তোমার জন্য কত ভালো হয়েছে।’

‘দুনিয়ার প্যারা এসব পড়াশোনায়। তুমি যে কী ফাঁসানো ফাঁসিয়েছ আমাকে!

প্রিয় শব্দ করে হেসে দিল। বলল, তুমি নিজেই তো একটা প্যারা। পড়াশোনার চেয়েও অনেক বড় প্যারা। পড়াশোনা তোমার কাছে নস্যি।

নিকিতা মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে রইল। প্রিয় চুল আঁচড়াচ্ছিল। হঠাৎ নিকিতার পাশে বসে পড়ে বলল, আচ্ছা, ক্যাম্পাসে তোমার কোনো বন্ধু হয় নি?

‘হ্যাঁ, অনেক বন্ধুই তো হয়েছে, কেন?

‘আমি বলতে চাচ্ছি বিশেষ কোনো বন্ধু হয় নি? খুব কাছের হয়ে যায় নি কেউ?

‘হ্যাঁ, লিসা আর মায়া সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আমার সাথে ওদের অনেক যায়।

‘আহা, অবুঝের মতো কথা বলছ কেন? আমি জানতে চাইছি তোমার কোনো বয়ফ্রেন্ড হয় নি?

‘ছি ছি ছি, তুমি আমাকে কী মনে করো? আমি বিবাহিত হয়েও বয়ফ্রেন্ড বানাব?

‘আরে বাব্বা, সেন্টি খাচ্ছ কেন? তুমি যে সুন্দরী, তোমার পেছনে তো ছেলেদের লাইন লাগার কথা।’

‘লাইন আছে, লম্বা লাইন। কিন্তু আমি তাদের দিকে ফিরেও তাকাই। আমার সব সৌন্দর্য আমার স্বামীর জন্য।’

কিন্তু তোমার স্বামী তো তোমাকে অবহেলা করে, তার ওপর অল্পবয়স তোমার। তুমি যদি দু-একটা প্রেম করে সেটা দোষের কিছু হবে না। তোমার স্বামী তোমাকে সুখ দিচ্ছে না বলেই তো তুমি অন্য পুরুষ থেকে নিচ্ছ। এটা খুব স্বাভাবিক, নিকিতা।

নিকিতা প্রিয়র দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল, ‘শোনো, আমি কাঙালি না যে যার তার সাথে গিয়ে যৌবনের জ্বালা মেটাব। যদি সারা জীবন কুমারী হয়েও থাকতে হয় তা-ই থাকব, কুমারীত্ব নিয়েই মরব।’

‘বাপরে, তুমি তো মারাত্মক কথা জানো!’

‘তুমি বলতে পারলে আমি বলতে পারব না কেন? তোমার কাছে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই মানে এটা না যে যৌবনের জ্বালায় আমি তা চাই। আমি কি সস্তা নাকি? তোমাকে ভালোবাসি, তাই তোমাকে কাছে পেতে চাই। তুমি না নিলে ফেলে রাখবে, এভাবেই পড়ে থাকব আজীবন।

‘আচ্ছা ভাই, থামো। তোমরা মেয়েরা না বহুত ঝগড়াটে হও। গেলাম আমি।’

প্রিয় বেরিয়ে যাওয়ার পর নিকিতা বিছানায় উঠে বসল। আজ সে খুব খুশি। রাতে সে প্রিয়কে জড়িয়ে ধরেছিল। প্রিয় নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় নি। প্রিয় ঘুমিয়ে ছিল নাকি জেগে তা সে জানে না, তবে সে জেগে ছিল। জেগে জেগে নিঃশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়র বুকের ওঠানামা, প্রিয়র গায়ের গন্ধ, প্রিয়র স্পর্শ–সবকিছু অনুভব করেছে। এত ভালো কাউকে কী করে লাগতে পারে? প্রিয় রাগী, বদমেজাজি, উদ্ধত; কিন্তু ভেতরটা ভীষণ নরম। তাকে তো প্রিয় ভালোবাসে না কিন্তু সে অসুস্থ জেনে ঠিকই সেবা করল। অনেকক্ষণ মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। এমনটা পাওয়ার সৌভাগ্য তার কখনো হবে, তা সে স্বপ্নেও ভাবে নি। তার সঙ্গেই এমনটা করল, ইশ না জানি পেট্রা আপুকে কতটা যত্ন করত। তারা যখন একসঙ্গে ছিল, নিশ্চই খুব সুখী ছিল। আচ্ছা, প্রিয় তো পেট্রা আপুকে অনেক ভালোবাসত। নিশ্চয়ই ভীষণ আদরও করত। প্রিয় কি সত্যিই আদর করতে জানে! কীভাবে আদর করে সে? তার সবকিছুর মতো আদরটাও কি খুব আলাদা রকমের? এসব ভাবতে ভাবতে কেন জানি লজ্জা লাগল নিকিতার।

পেট্রা আপুর কথা মনে হতেই খেয়াল হলো, তিনি বলেছিলেন তার বাবাকে শ্বশুর সাহেব মেরেছেন। আবার প্রিয় বলেছিল, তার অবৈধ অস্ত্র ধরা পড়েছে। উনি কি তাহলে বড় কোনো ক্রিমিনাল? একটা ক্রিমিনালের বাড়িতে সে এত দিন ধরে আছে, যার কাছে মানুষের জীবনের কোনো দাম নেই। অবাধ্য হলে তাকেও যদি মেরে ফেলে? প্রিয় নিশ্চয়ই বাঁচাবে। আজকাল প্রিয়কে আর অত ভয় লাগে না। বরং অনেকটা ভরসা জন্মেছে ওর ওপর।

—————

সন্ধ্যায় প্রিয় অফিস থেকে ফেরার সময় পেট্রার অফিসের সামনে গেল। তবে কাছে গেল না। দূর থেকে তাকিয়ে রইল। পেট্রা যতই যোগাযোগ করতে নিষেধ করুক, পেট্রাকে একদম না দেখে সে থাকতে পারে না। ট্টো বেরিয়ে চলে যাওয়া পর্যন্ত দেখল। তারপর গাড়িতে উঠে বাসার উদ্দেশে রওনা হতেই নিকিতা ফোন করল, আমার জন্য পিজ্জা নিয়ে আসবে? খুব খেতে ইচ্ছা করছে।’

‘আমাকে কি ডেলিভারি বয় মনে হয়? খেতে ইচ্ছা করলে অনলাইন অর্ডার করে খাও।

‘এমন করো কেন? সারা দিন কিছু খেতে পারি নি। এখন পিজ্জা খেতে ইচ্ছা করছে।

‘আমি পারব না।’

এ কথা বলেই ফট করে ফোন কেটে দিল প্রিয়। তারপর রেস্টুরেন্টগুলোর সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মনে পড়ল ডাক্তার বলেছে নিকিতা ঠিকমতো খায় না বলে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সারা দিন না খেয়ে রাত্রিবেলা পিজা খেতে চাওয়ার মানে কী? একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামিয়ে পিজ্জা নিল। এই মেয়েগুলো শুধু পারে ভেজাল করতে। তাও ভালো আগের মতো মাথায় ভূত চাপে না। উল্টোপাল্টা কিছু করে না। হুটহাট গায়ের ওপর হামলে পড়ে না। অনেক শুধরে গেছে, ম্যাচিওরিটি এসেছে ওর মধ্যে। এ রকম হয়ে থাকলেই ভালো। প্রথম প্রথম সে চেয়েছে নিকিতা চলে যাক। এখন আর চায় না। নিকিতা চলে গেলে বাবা আবার কোন ফন্দি আঁটবে কে জানে! ব্ল্যাকমেল করার অস্ত্রের তো অভাব নেই। এর চেয়ে নিকিতাই থাক। এত দিনে আয়ত্বে এসেছে মেয়েটা। অন্য কেউ এলে তাকে এমন আয়ত্বে রাখা না-ও যেতে পারে। ও ইদানীং ইচ্ছা করেই নিকিতার সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশে। ঝামেলা যত এড়িয়ে চলা যায়, ততই ভালো।

—————

প্রিয়াঙ্কা বলল, ‘পেট্রা, তোর পায়ে পড়ি, এত দূরে যাস না। তোকে আর রায়ানকে ছাড়া আমি থাকব কীভাবে?

পেট্রা প্রিয়াঙ্কার একটা হাত নিজের দুহাতের মধ্যে নিয়ে বলল, ‘তোর স্বামী আছে, বাচ্চা আছে, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর-ননদ সবাই আছে। তুই একা কোথায়? আর আমরা দূরে যাচ্ছি বলেই তো পর হয়ে যাচ্ছি না। আমরা আসব, তোরা যাবি। মালয়েশিয়া খুব দূর তো না।’

‘কদিন আগেও তুই প্রিয়দার জন্য কাঁদতি। আর আজ তুই সব ছেড়ে চলে যাচ্ছিস কেন?’

‘আমি এখনো কাদি, প্রিয়াঙ্কা। প্রিয়কে আমি আজও ততটাই ভালোবাসি। কিন্তু আমি ওর এই তছনছ হয়ে যাওয়া জীবন দেখতে পারি না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিয়ে করব না, সেটা একটা অন্য বিষয়। প্রিয় বিয়ে না করলে আমার কিছু বলার ছিল না। কিন্তু প্রিয় তো বিয়ে করে ফেলেছে। আর মেয়েটা ওকে পাগলের মতো ভালোবাসে। নিকিতার চোখে আমি যে ভালোবাসা দেখেছি, তা তুই না দেখলে বুঝবি না। ওর সাথে প্রিয় ভালো থাকবে।

‘ওহ! প্রিয়দার জীবন তছনছ হয়েছে আর তোরটা খুব ভালো আছে?

‘আমার কথা বাদ দে। আমি সব পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি, যেটা প্রিয় পারে না। আমি প্রিয়কে না দেখে, যোগাযোগ না করে সারা জীবন থাকতে পারব। কিন্তু প্রিয় পারছে না। ওকে আমি আমার সামনে আসতে নিষেধ করেছি। ফোনকল, মেসেজ দিতেও নিষেধ করেছি। তাই ও কী করে জানিস? অফিসের সামনে, বাসার সামনে এসে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে যায়।

‘তুই কী করে জানলি?

‘কয়েক দিন আমি নিজেই দেখে না-দেখার ভান করেছি, ও লুকিয়ে থাকায় সুবিধা হয়েছে। কয়েক দিন রায়ান দেখেছে, অফিসের দারোয়ান দেখেছে।’

‘তাতে সমস্যা কী? এত দিনের ভালোবাসা এত সহজে ভোলা যায় নাকি?’

‘ভুলতে কেউ বলে নি। কিন্তু স্বাভাবিক লাইফ লিড তো করবে! তা ও করে না। ও কষ্ট পুষে রেখেছে। এভাবে কি সারা জীবন কাটাবে? আমার থেকে দূরে থাকলেই একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে। তা ছাড়া দূরে গেলে আমার নিজের জন্যও বাঁচাটা সহজ হবে। আজও ওকে দেখলে প্রথম প্রেমের মতোই হৃৎপিণ্ড কেঁপে ওঠে।

‘পেট্রা, ভুল করছিস তুই।

‘তুই বুঝবি না, প্রিয়াঙ্কা।

‘আচ্ছা, তোদের মধ্যে কী এমন হলো যে তুই এত ভালোবাসা সত্ত্বেও প্রিয়দাকে আর চাস না?’।

‘সব কথা বলা যায় না, প্রিয়াঙ্কা।’

প্রিয়াঙ্কা অবাক হয়ে বলল, ‘আমাকেও বলা যায় না?

পেট্রা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ‘কিছু কথা থাকে প্রিয়াঙ্কা, যা নিজেকেও বলতে ইচ্ছা করে না।
·
·
·
চলবে...................................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp