ওই ঘটনার পর প্রিয় অনেক বদলে গেছে। বিয়ের প্রথম দিকে যেমন ছিল, অবস্থা এখন তার চেয়েও খারাপ? শুদ্ধ ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলে না। নিজের কাজ নিজে করে, নিজের জিনিস নিজে খুঁজে নেয়। নিকিতা কিছু জিজ্ঞেস করলে স্বাভাবিকভাবে উত্তর দেয়, যেন কিছুই হয় নি। সেদিন নিকিতা অ্যাসাইনমেন্ট করায় হেল্প চাইলে বলল, ‘নীলক্ষেতে এসব অ্যাসাইনমেন্ট বিক্রি করে। টপিক না মিললেও বললে করে দেয়। ওখান থেকে করাও, টাকা যা লাগে নিয়ে যেয়ো।’ অথচ আগে পুরো অ্যাসাইনমেন্টই নিজে করে দিত। প্রেজেন্টেশন থাকলে সব রেডি করে বুঝিয়ে দিত। আর সেই প্রিয় আজ এই কথা বলল! মানুষটা হাসতেও ভুলে গেছে। হাসির সিনেমা দেখলেও হাসে না এখন। সুন্দর একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। ছুটির দিনগুলোতে রান্না শেখাত, ঘুরতে নিয়ে যেত। সময় পেলেই এটা-ওটা নিয়ে গল্প করত। কতটা কাছাকাছি চলে গিয়েছিল! একটামাত্র ভুল সব তছনছ করে প্রিয়কে হাজার মাইল দূরে নিয়ে গেছে। আজকাল প্রিয় বাসায়ই থাকে না। ছুটির দিনগুলোতে সকালবেলা শুদ্ধকে নিয়ে বাইরে চলে যায়, অনেক রাতে ফেরে। সব হাসি হারিয়ে গেছে। কোনো কিছুতে আজকাল খুব রেগেও যায় না। প্রিয়র এই অবস্থা দেখে। প্রচণ্ড কষ্ট হয় নিকিতার।
—————
পেট্রা বালিশে হেলান দিয়ে এক পা ছড়িয়ে বসে আছে নিজের বিছানায়। স্মরণ ও স্মরণের মা সামনেই বসে আছে। এর চেয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি আর কী হতে পারে? সপ্তাহখানেক আগে অফিসের এক কন্ট্রাকশন বিল্ডিংয়ে গিয়েছিল। অনাকাঙ্ক্ষিত এক দুর্ঘটনার মাঝে পড়ে পা ভেঙে গেছে তার। অনেক বড় ক্ষতি হতে পারত কিন্তু ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছে। অফিস অবশ্য চিকিৎসার সব খরচ বহন করছে এবং সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত পেইড ছুটি দিয়েছে। প্লাস্টার করা পা নিয়ে দিনরাত সে এখন বাসায় বসে থাকে। স্মরণ প্রতিদিন তাকে ফোন করে। আজ সকালেও ফোন করেছিল। হুট করেই বলল তাকে দেখতে আসতে চায়। এভাবে কেউ বাসায় আসতে চাইলে কি নিষেধ করা যায়? ঠিকানা দিল, আসতে বলল। কিন্তু এই পাগল ছেলে সাথে করে তার মাকে নিয়ে এসেছে।
পেট্রাকে দেখে, কথাবার্তা বলে তারা ড্রয়িংরুমে গিয়ে বসল। পেট্রা ভাবতে লাগল, স্মরণ ওর মাকে কেন নিয়ে এল? তাকে দেখাতে? তার অনুমতি ছাড়াই!
—————
রাতে শুদ্ধ ঘুমের ভান করে পড়ে ছিল। উদ্দেশ্য আন্টি ও বাবা ঘুমালে, বাবার ফোন নিয়ে অন্য রুমে গিয়ে মাকে কল করবে। হঠাৎ টের পেল, নিকিতা আন্টি ফিসফিস করে বাবাকে বলছে, তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ?
একটা কথা বলতাম।’
বাবা বলল, বলল।
‘শুদ্ধ তো এখন বড় হচ্ছে। ওকে একটা আলাদা ঘর দেওয়া উচিত না?
কোনো প্রয়োজন নেই। আমার ছেলে আমার সাথেই ঘুমাবে। ও আমাকে ছেড়ে ঘুমাতে পারে না।
‘হ্যাঁ, তা ঠিক, কিন্তু ও তো বড় হচ্ছে। একা ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে তো। কত দিন আমাদের সাথে ঘুমাবে? তা ছাড়া বিছানায় জায়গাও হচ্ছে না।
‘জায়গা না হলে বিছানা চেঞ্জ করব। বড় খাট বানাব। আর তাতেও না হলে তুমি পাশের ঘরে চলে যেতে পারো। চাইলে ঘরটা নিজের মতো করে সাজিয়েও নিতে পারো।
‘আসলে…’
বাবা আন্টিকে কথাটা শেষ করতে দিল না। বাধা দিয়ে বলল, এ নিয়ে আর একটাও কথা না। আমি চাই না এসব কথা শুদ্ধর কানে যাক।
‘শুদ্ধ তো ঘুমিয়ে আছে।
‘তোমাকে কী বলেছি, তুমি বোঝো নি?
এরপর আন্টি চুপ হয়ে গেল। ঘুম আসছে না শুদ্ধর। ঘুরেফিরে ওর মাথায় একটাই প্রশ্ন জেগে উঠছে। আন্টি কেন তাকে আলাদা ঘর দিতে চায়? একদিন আন্টি তাকেও বলেছিল আলাদা ঘরের কথা। কিন্তু কেন?
—————
পেট্রার জীবনে এমন বোরিং সময় আর কখনো আসে নি। ভাঙা পা নিয়ে কিছু করার নেই। সারাক্ষণ বসে থাকো। একটা বই পড়ছিল। শিখা ঘরে ঢুকে বলল, ‘পেট্রা, তোর কি কোনো আক্কেল নাই? এই বয়সেও না হলে আর কবে হবে?
পেট্রা বইটা রেখে অবাক হয়ে বলল, ‘কী ব্যাপার, মা? এত রেগে আছ কেন?
‘বিয়ে হচ্ছে না বলে কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোর?’
‘মা প্লিজ, যা বলার সরাসরি বলো, কী করেছি আমি?
‘ওই যে তোর কলিগ ছেলেটা, কী যেন নাম?
‘স্মরণ।
‘হ্যাঁ, ওর মা বিয়ের প্রস্তাব দিতে এসেছিল। প্রিয়াঙ্কার জামাই বাসায় ছিল বলে কাল এবং আজ এতক্ষণ চুপ করে ছিলাম। তুই আবার একটা মুসলিম ছেলে ধরেছিস! নিজের ধর্মের কোনো ছেলে তোর চোখে পড়ে না? একবার ধাক্কা খেয়ে তার শিক্ষা হয় নি? তুই আবার সেই একই ভুল করলি কীভাবে? একবারও ভাবলি না আত্মীয়স্বজনের কাছে মুখ দেখাব কীভাবে?
মা একনিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে যাচ্ছিল। পেট্রাকে কিছু বলার সুযোগই দিচ্ছে না। আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল। পেট্রা মাকে থামিয়ে বলল, ‘মা, তুমি নিজেই বলে যাচ্ছ। আমাকে সুযোগ তো দেবে!
‘কী সুযোগ দেব? একবার তুই আমার মুখ পুড়িয়েছিস। আবার এমন কিছু করবি, আমি ভাবতেও পারি নি। এসবের আগে আমি মরলাম না কেন?
‘মা, প্লিজ, আমার কথা শোনো। ওর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
‘নেই মানে? না থাকলে কি ওরা বিয়ের প্রস্তাব দিত?
‘তা আমি জানি না। স্মরণ আমাকে প্রপোজ করেছিল, আমি মানা করে দিয়েছি। তারপরও কেন প্রপোজাল নিয়ে এসেছে, আমি তা জানি না। যাই হোক, তোমার কাছে যখন প্রস্তাব দিয়েছে তুমি মানা করে দাও।’
‘সত্যি সম্পর্ক নেই?
‘না রে বাবা নেই। কোনো সম্পর্ক নেই। স্মরণ কেন, কারও সাথে নতুন করে কোনো সম্পর্কে যাওয়া আমার পক্ষে আর সম্ভব না। কোনো
অনুভূতি কাজ করে না আমার।
প্রথমে যখন বিয়ের প্রস্তাব দিল, আমি তো খুশিমনে রাজি হয়ে গেলাম। কত মেহমানদারি করলাম! পরে শুনি ওরা মুসলিম। ইশ, তোর ওপর যে কী রাগ উঠেছিল পেট্রা, মন চাচ্ছিল তোকে খুন করি।
‘রাজি হয়েছ মানে? পরে মুসলিম জানার পর মানা করে দাও নি?
‘মাত্রই হ্যাঁ বললাম, আবার এখনই না বলি কীভাবে?
‘আমার সাথে তো খুব পারো, বাইরের মানুষের সাথে পারবে না কেন?
‘তুই আমার পেটের মেয়ে, পেট্রা। তোর সাথে তো পারবই।
‘সবার সাথে পারতে হবে। যেটা সত্যি, সেটাই বলে দাও। বলো যে তুমি ভেবেছিলে ওরাও খ্রিষ্টান।
মা কাঁচুমাচু হয়ে বসে রইল। পেট্রা বলল, তুমি বলতে না পারলে রায়ানকে দিয়ে বলাও। ও এসব ব্যাপারে ওস্তাদ। ভাই আমার অনেক বড় হয়েছে।
‘ইশ, আমাদের ধর্মের কেউ যদি তোকে এমন করে পছন্দ করত!’
‘উফ মা, প্লিজ থামো তো।’
‘আচ্ছা, থামলাম। শোন, রায়ানের কথা ওঠায় মনে পড়ল, কদিন ধরেই বলব ভাবছিলাম কিন্তু তোকে একা পাচ্ছিলাম না। তুই বাসায় ফেরার আগেই তো রায়ান ফিরে আসে।
‘কী কথা? বলো।’
‘এই যে তুই রায়ানকে মেডিকেলের জন্য কোচিং করাচ্ছিস, মেডিকেলে পড়ার এত খরচ কোত্থেকে দিবি, শুনি? তার ওপর যদি চান্স
পায়? প্রাইভেটে তো আর পড়াতে পারবি না, ওদিকে তুই তো ওকে আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখাচ্ছিস!”
‘মা, এসব নিয়ে তুমি ভেবো না তো। আমি যেভাবে হোক, ম্যানেজ করব।’
‘কীভাবে?
‘অফিস আমার কাজে এবং ব্যবহারে খুব সন্তুষ্ট। আমার প্রমোশনের কথা চলছে। হয়ে গেলে আমার স্যালারি অনেক বেড়ে যাবে। প্রাইভেটে পড়ানো লাগলে অফিস থেকে লোন নেব। লাগলে সাভারের বাড়ি, জমি সব বিক্রি করে দেব।’
‘তুই পাগল হয়েছিস! তোর বাবার বানানো বাড়ি। এত কষ্টে কেনা জায়গাজমি সব হাতছাড়া করব?
‘দুই রুমের একটা একতলা বাড়ি। ওটার এমন কোনো দাম উঠবেও। বাড়ি তুমি রেখে দিয়ো। জমি বিক্রি করলেই হবে। আর এসব হাতছাড়া হয়েও রায়ান যদি ডাক্তার হতে পারে, তাহলে বাবাই সবচেয়ে বেশি খুশি হবে, মা।’
‘ঠিকাছে, যেটা ভালো হয় কর।
মায়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই পেট্রার একটা কল এল। মা উঠে চলে গেলেন। পেট্রা কলটা না ধরে অবাক হয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ, কলটা প্রিয়র বাবার নম্বর থেকে এসেছে। কিন্তু তিনি কেন এখন পেট্রাকে ফোন করবেন? তা ছাড়া ও তো নম্বর বদলেছে। নতুন নম্বর তিনি কোথায় পেলেন? পরক্ষণেই খেয়াল হলো, এটা তো তার নতুন নম্বর না। এটা ওর অফিশিয়াল নম্বর। সঙ্গে সঙ্গেই মনে পড়ে গেল, নিজের নম্বর অনেক সময় বন্ধ থাকলেও এটা কখনো বন্ধ থাকে না। তাই সে ক্রিসমাসের দিন শুদ্ধকে এই নম্বরটাই লিখে দিয়েছিল। শুদ্ধ! এতক্ষণে কলটা কেটে গেল। সঙ্গে সঙ্গে পেট্রা কলব্যাক করল। সে হ্যালো বলার আগেই শুদ্ধর গলা শোনা গেল, ‘মা…’
পেট্রার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল। কান্না পেল। বলল, আমার বাবা কেমন আছ বাবা তুমি?
‘ভালো আছি, মা। তুমি কেমন আছ?
‘ভালো, এখন আরও ভালো। আমার বাবা ফোন করেছে যে আমাকে। কিন্তু বাবা, দাদার ফোন কী বলে এনেছ?
‘কিছু বলে আনি নি, মা। চুরি করে এনেছি।
‘ওহ গড! দাদা টের পেয়ে যাবে না তো? তুমি কোথায়?
‘আমি ছাদের গার্ডেনে লুকিয়ে কথা বলছি।
‘এত রাতে ছাদে ভয় করছে না তোমার?
‘না, আমার একটুও ভয় করে না, মা। তোমার সাথে কথা বলার জন্য আমি ভূতের বাড়িতেও যেতে পারব।
এ কথা শুনে পেট্রার চোখে জল এল। এতটুকু একটা বাচ্চা স্বাভাবিক সব অনুভূতির বাইরে। প্রচণ্ড অসহায় লাগল। কী করবে সে? শুদ্ধ বলল, ‘মা, একটা কথা জানতে চাই।’
‘বলো না বাবা কী জানতে চাও?
‘আচ্ছা মা, আমি কি অনেক বড় হয়ে গেছি?
‘নাহ তো বাবা। এই তো সেদিন তুমি জন্মালে। তুমি তো আমার ছোট্ট বাবা।
‘আমি কি এখন আর বাবার সাথে ঘুমানোর মতো ছোট নেই?
পেট্রার মনে সন্দেহ হলো। ছেলেটা এসব কেন বলছে? তাই জিজ্ঞেস করল, ‘কেন এ কথা বলছ, বাবা?
‘নিকিতা আন্টি বাবাকে বলছিল আমাকে অন্য একটা রুমে দিতে। আমার নিজের রুম।
পেট্রা চমকে উঠল! তারপর জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি জানলে কীভাবে?
‘কাল রাতে আন্টি বাবাকে বলছিল।
‘তোমার সামনেই বলছিল?
‘না, আমি ঘুমের ভান করে ছিলাম। ভেবেছিলাম আন্টি-বাবা ঘুমালে বাবার ফোন চুরি করে তোমাকে ফোন করব।’
‘বাবা চুরি শব্দটা কখনো আর বলবে না। এই যে তুমি দাদার ফোন এনেছ, বাবার ফোন আনো–এসব তো তুমি আমার সাথে কথা বলেই আবার যার যার জায়গায় রেখে দাও। এটাকে বলে গোপনে বা লুকিয়ে নেওয়া। লুকিয়ে নিয়ে আর ফেরত না দেওয়াকে বলে চুরি। চুরি খুব খারাপ বাবা। চুরি কখনো করবে না, এই শব্দটা বলবেও না।
‘ঠিকাছে মা, তুমি যা বলবে, আমি তা-ই করব।’
‘এই তো আমার লক্ষ্মী বাবা।
‘আচ্ছা মা, এবার বলো না বড় হলে কি আর বাবার সাথে ঘুমানো যায় না? আমি কি সত্যিই বড় হয়ে গেছি? আমার কি নিজের অন্য রুমে চলে যাওয়া উচিত?
এ ব্যাপারে বাবা যে সিদ্ধান্ত নেবে, তুমি সেটা মেনে নেবে, আচ্ছা?
‘বাবা বলেছে বড় দেখে বিছানা বানাবে, যাতে জায়গার সমস্যা না হয়। তারপরও সমস্যা হলে আন্টিকে অন্য রুমে যেতে বলেছে।
‘আচ্ছা বাবা, দেখো কী হয়। বাবা যা করতে বলবে, সেটাই করবে। এসব নিয়ে আর ভেবো না। একটা কথা মনে রাখবে, বাবা সব সময় তোমার ভালো চায়। বাবা যেটা করতে বলবে, সেটা তোমার ভালোর জন্যই বলবে।
‘আচ্ছা।’
পেট্রা চিন্তায় পড়ে গেল। ছেলেটা কীসের মধ্যে বড় হচ্ছে? তার ছেলেটা অন্য আর দশটা ছেলের মতো বড় হতে পারছে না। নিকিতা ওকে আপন ভাবতে পারছে না। ছেলে যে নিকিতাকে খুব আপন ভাবে, তা-ও তো না। বেচারি মেয়েটা পরের ছেলেকে পালছে কিন্তু মা ডাক শুনছে না, এটাও কম কষ্টের না। এসব ভেবে পেট্রা বলল, ‘আমি তোমার বাবার কে হই, বলো তো?
‘ওয়াইফ।
‘তুমি আমাকে কী বলে ডাকো?
‘মা।’
‘নিকিতা আন্টি তোমার বাবার কে হয়?
‘ওয়াইফ।’
‘তাকে তুমি কী বলে ডাকো?
‘নিকিতা আন্টি।’
‘কেন, আন্টি কেন ডাকো? মা বলে ডাকো না কেন?’
‘সে তো আন্টিই হয়। আমি কি তার পেট থেকে হয়েছি? আমি তো তোমার পেট থেকে হয়েছি। তাই তোমাকে মা ডাকি।
‘পেট থেকে হলেও যেমন মা ডাকতে হয়, না হলেও ডাকতে হয় যদি সেই মানুষটা বাবার ওয়াইফ হয়। এটাই নিয়ম, বাবা।
‘সত্যি! আমি আগে জানতাম না। সবাই আমাকে বলেছে, এটা তোমার নতুন মা। তার জন্যই তো রাগ করে মা ডাকি নি। নতুন মা। আবার কেমন কথা! তুমিই বলো, মা? কেউ তো আর বলে নি বাবার ওয়াইফকেও মা ডাকতে হয়।’
‘ঠিকই তো। না বললে তুমি বুঝবে কীভাবে?
‘আমাকে বললেই আমি সব বুঝি।’
‘আচ্ছা বাবা, নিকিতা তোমাকে আদর করে না?
‘হ্যাঁ, অনেক আদর করে। আমাকে খাইয়ে দেয়। তোমার মতো গল্পও শোনায়। ঘুমানোর সময় মাথায় হাতও বুলিয়ে দেয়।
‘বাহ, তাহলে তো আমার মতোই।
‘নাহ, তুমি বেস্ট।
‘আচ্ছা বুঝলাম। কিন্তু নিকিতা আন্টিও তো ভালো, তাই না?
‘হ্যাঁ।
‘তাহলে আজ থেকে তুমি ওকে কী বলে ডাকবে?
‘মা ডাকব। কিন্তু ভুলে যদি আন্টি ডেকে ফেলি?
‘প্রথম প্রথম এমন হতে পারে। কিন্তু মা বলতে বলতে অভ্যাস হয়ে যাবে।’
‘আচ্ছা মা।
‘এখন নিচে চলে যাও, বাবা। কল হিস্ট্রি থেকে আমার নম্বর ডিলেট করে দাও।
‘ওকে মা।’
‘আই লাভ ইউ, বাবা।’
‘আই লাভ ইউ, মা।
·
·
·
চলবে....................................................................................