অপরাহ্নের নিষিদ্ধ অনুভূতি - পর্ব ১৯ - ইসরাত তন্বী - ধারাবাহিক গল্প


          আগামীকাল বৃহস্পতিবারে বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে একটা দিন ফিক্সড করার কথা চললেও হঠাৎ করেই রৌহিশ বিয়ের দিন এগিয়েছে। মুখ নিঃসৃত জবানে পরিবর্তন এনেছে। কারণ সকলের নিকট অজানা। জিজ্ঞাসা করার দুঃসাহস ও কেউ করেনি। নিউজটা শুনে পর্যন্ত তন্ময়ী মনের মাঝে ভীষণ অস্থিরতা অনুভব করছে। একদণ্ড শান্তি মিলছে না কোথাও।‌ সবচেয়ে বেশি অবাক করে দিচ্ছে বাবা নামক মানুষটা। অপরপক্ষের হ্যাঁ তে হ্যাঁ মেলাচ্ছেন, না তে না মেলাচ্ছেন। কিন্তু কেন? কিচ্ছু ভালো লাগছেনা মেয়েটার। মন চাইছে এক্ষুনি এই জীবনের সমীকরণ মিলিয়ে দিতে। কিন্তু অদৃশ্য একটা মায়া সেটাতেও বাঁধা দিচ্ছে।

তন্ময়ী হসপিটাল থেকে বাসায় ফিরেছে আধাঘণ্টা হতে চলল। বিছানার একপাশে দুহাতে চুল খামচে মাথা নিচু করে বসে আছে। পা দুটো আলগোছে ফ্লোর স্পর্শ করে আছে। রাত্রির শেষ প্রহর। ঘড়ির কাঁটা টিকটিক শব্দ তুলে ঘুরে চলেছে। অবস্থান তিনের ঘরে। আজ শব্দটা একটু বেশিই জোরে শোনাচ্ছে। ভীষণ বিরক্তিকর। আজকের রাতটাই তন্ময়ীর জীবনের শেষ সুন্দর রাত। এর পর থেকে হয়তো জীবনটা বিষাক্ত হয়ে উঠবে। হারিয়ে যাবে নিষ্পাপ সত্তাটা। সত্যিই কি তাই? উত্তর জানা নেই মেয়েটার। তবে ও উপলব্ধি করতে পারছে কিছু একটা ঠিক হচ্ছে না ওর সাথে। কিন্তু কীভাবে যেন হাত পা বাঁধা পড়ে গেছে। চাইলেও আর না বলা সম্ভব নয়। কেন অসম্ভব সেটাও জানা নেই তন্ময়ীর। আপাতত মস্তিষ্কে না ব্যতীত আর কোনো শব্দের আনাগোনা নেই। পাগল হলো নাকি মেয়েটা?

তন্ময়ী যখন ভাবনার সায়রের অগাধ গভীরতায় নিজেকে খুইয়েছে ঠিক তখনই লোড শেডিং হলো। ঘরে টিম টিম করে জ্বলতে থাকা ড্রিম লাইটটা নিভে গেল। অন্ধকারের অতল গহ্বরে তলিয়ে গেল ঘরটা। তবুও তন্ময়ীর মাঝে কোনো হেলদোল দেখা গেল না। সেভাবেই ঠাঁয় বসে আছে।‌ কেবল শোনা যাচ্ছে ফুঁপিয়ে কান্নার মৃদু করুণ শব্দ। যেন কোনো অশরীরী নিজের সবটা হারিয়ে কাঁদছে। হৃদয়বিদারক কান্নার সুরে প্রকৃতি যখন মুর্ছা যাওয়ার উপক্রম ঠিক সেই মুহূর্তে শোনা গেল একটা নারী কণ্ঠস্বর,

"শত্রুপক্ষের সাথে সম্পর্ক গড়তে চাইছিস এলিসিয়া?"

এমন সম্বোধনে থেমে গেল কান্নার আওয়াজ। আর কোনো শব্দের আনাগোনা নেই। সুনসান নীরবতায় মোড়ানো ঘরের চারপাশের পরিবেশ। আস্তে ধীরে রক্তাভ লোচন জোড়া তুলে সামনে তাকাল তন্ময়ী। অথচ কোথাও কেউ নেই। অমনিই ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেল। যদিও তীব্র তমসার দরুন কিছুই দেখার উপায় নেই। আজ আর ভয় পেল না মেয়েটা। অকস্মাৎ সাহস যেন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল। চঞ্চল হাতে চোখ দুটো মুছে নিলো। কিছু মিনিটের ব্যবধানে নিজেকে সামলিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ল,

"কে?"

"তোর শুভাকাঙ্ক্ষী।" তৎক্ষণাৎ বেনামি হাওয়ায় ভেসে এলো কর্কশ কণ্ঠের জবাব।

"সামনে আসুন। আর কতো লুকোচুরি খেলবেন?"

"সঠিকসময়ে সাক্ষাৎ হবে আমাদের।"

"এলিসিয়া কে? এই সম্বোধনের কারণ?"

প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে মৃদু হাসির শব্দ শোনা গেল। তন্ময়ীর কপালের ভাঁজ বাড়ল। আবারও জিজ্ঞাসা করল, "আপনি মানুষ নন। অ্যাম আই রাইট?"

"অভিশপ্ত অর্ধমানব আমি।"

তময়ী ঠিক বুঝল না। ভ্রু কুঁচকে বলল, "সরি?"

"আর একটা সপ্তাহের অপেক্ষা। ভুল করছিস এলিসিয়া। নিজের বোকামোতে পস্তাতে হবে তোকে। তোর বিনাশ তোর ভালোবাসার হাত ধরেই হবে‌।"

কথাটা বড়ো অদ্ভুত ঠেকল বৈকি। তন্ময়ী পাল্টা প্রশ্ন করতে নিবে তৎক্ষণাৎ ঝংকার তুলে ওর ফোনটা বেজে উঠল। বেজায় বিরক্ত হলো ও। অনিচ্ছা নিয়ে প্যান্টের পকেট হাতড়ে ফোনটা হাতে নিলো। স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে মিরার মায়ের নাম্বারটা। এতো রাতে ওনার ফোনকল পেতেই বুকটা ভীত হলো‌। মিরা ঠিক আছে তো? একরাশ শঙ্কা নিয়ে দ্রুত রিসিভ করল। ওপাশ থেকে শোনা গেল মিরার মায়ের চিন্তিত গলা,

"তনুমা মিরু কি তোমার কাছে আছে? হসপিটাল থেকে এখনো যে ফিরল না। ফোনটাও বন্ধ দেখাচ্ছে।"

তন্ময়ীর মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল। তবে কি ওর ধারণাই সঠিক ছিল? মেয়েটাকে তখন একদম একা ছাড়া উচিৎ হয়নি। অন্যসময় তন্ময়ী জেদ করে তাহলে তখন কেন করল না? আবার এইসব ঝামেলাতে একটাবার ফোন দিতেও ভুলে গেছে। নিজের উপর ভীষণ রাগ হলো ওর। নিজেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন মনে হলো। আন্টিকে কী জবাব দিবে এখন? সত্যটা বললে মানুষটাকে সামলানো দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে। একটু ভেবে মিথ্যার আশ্রয় নিলো,

"আন্টি ও আমার সাথে বাসাতেই আছে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। আর ওর ফোনটাতে চার্জ ও নেই।"

ওর কথাতে মিরার মা আটকে রাখা শ্বাসটুকু ছাড়ল। গলাটা এবার কিছুটা স্বাভাবিক শোনাল, "দেখেছ মাথা মোটার কাজটা? আমাকে একটাবার তোমার ফোন থেকে কল দিয়ে বলবে তো। এদিকে আমি চিন্তাতে এক দন্ড ঠিকভাবে শ্বাস ও নিতে পারছি না।"

"টেনশন করো না আন্টি। অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো। আমার বিয়ে খেয়ে একেবারে বাসায় যাবে মিরু। তুমিও আসবে কিন্তু আগামীকাল।"

"হ্যাঁ, যাব তনুমা। ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছে আমার। আচ্ছা রাখি। আল্লাহ হাফেজ।"

"আল্লাহ হাফেজ।"

কলটা টুং টুং শব্দ তুলে কেটে গেল। মুহুর্তেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করল তন্ময়ী। সব‌কিছুর পিছনে একজনের হাত আছে বলেই মনে হলো। বিড়বিড় করে ঘৃণার সহিত নামটা আওড়াল, 

"ডুবইস রৌহিশ রৌনক।"

পরপরই সেই ছায়ামূর্তির কথা স্মরণ হলো। ডাকল,
"শুনছেন? আছেন আপনি?

না, আর কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না। তন্ময়ী উঠে দাঁড়াল। তৎক্ষণাৎ ঘরের লাইট গুলো জ্বলে উঠল। বিষয়টা ভাববার হলেও ভাবল না তন্ময়ী। মন মস্তিষ্কে চলছে অন্যকিছু। ফোনটা হাতে তুলে গটগট করে হেঁটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। গন্তব্যস্থল ডুবইস প্যালেস।

—————

"তোর মাথায় কী চলছে বল তো?"

তিয়াশের করা প্রশ্নেও অপরপক্ষের মাঝে কোনো হেলদোল দেখা গেল না। ডুবইস প্যালেসের সামনে সুবিশাল বাগানেই পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে তিনজন। রায়ান বরাবরের মতোই নীরব দর্শক। রৌহিশ নির্বিকার। দৃষ্টি নিবদ্ধ মেইন গেইটের দিকে। মুখটা যেন একটু বেশিই গম্ভীর। শাণিত চোয়াল আরও বেশি তীক্ষ্ণ দেখাচ্ছে। তিয়াশ বুঝি চুপ থাকার ছেলে? পেটের মধ্যে ভুটভাট করতে থাকা প্রশ্নগুলো আবারও জিজ্ঞাসা করল,

"তোর মতো একজন ছেলে জোর করে বিয়ে করছে? কী আশ্চর্য! এটা তোর সাথে যায় না। তুই ভ্যাম্পায়ার প্রিন্স। সহস্র বছরের সবার থেকে অধিক শক্তিশালী। তুই চাইলে অমন শত শত তন্ময়ী তোর প্রেমে পড়তে বাধ্য।"

"কাবাডি খেলতে।"

প্রথম প্রশ্নটার ত্যাড়া জবাব দিয়েই চুপ রইল রৌহিশ। এমন ভাব যেন পরের কোনো কথাই শোনেনি। তিয়াশ বেজায় বিরক্ত হলো। দামড়া ছেলের এইসব কাজে ওর বিরক্তির শেষ নেই। বিগত পাঁচ ছয় ঘণ্টা ধরে খুঁচিয়েই চলেছে তবুও যদি মুখ দিয়ে একটা কথা বের করতে পারে। না, এই ছেলেকে ওই ধানিলঙ্কা ছাড়া আর কেউ ঠিক করতে পারবে না। বিয়ের ভুত যখন মাথায় উঠেছে, তখন করুক বিয়ে। একমাস ওই মেয়ের সাথে সংসার করলেই বিয়ের শখ মিটে যাবে। ওই জানালা দিয়ে পালাবে হুঁ। তিয়াশের কথা বাসি হলেও ফলে। বুক ফুলিয়ে এমনভাবে ভাব নিলো যেন ওর ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হয়ে গেছে।

"তোর মতোই বস্তাপচা ভাবনা তোর।"

রৌহিশের এমন কথায় তিয়াশের কপালে ভাঁজ পড়ল। অধর নাড়িয়ে কিছু বলতে চাইল কিন্তু রায়ানের খুছানোর দরুন মুখ দিয়ে একটা শব্দও বের করতে পারল না। ওর দিকে তাকাল, "তোমার আবার কী হলো বাছা? তুমিও বিয়ে করবে নাকি? করলে বলো একটা মেয়ে দেখি। তোমাদের বাসর ঘরের দারোয়ান আমি হবো। কোনো ডিস্টার্ব হবে না।"

"আরে না স্যার, সামনে তাকিয়ে দেখুন।"

তিয়াশ, রায়ানের ইশারায় গেইটের দিকে তাকাল। রাগান্বিত তন্ময়ীকে দেখতেই চোখ দুটো ছোট ছোট হয়ে এলো। মেয়েটা অদম্য পদযুগলে হেটে এসে ঠিক রৌহিসের মুখোমুখি, চোখে চোখ রেখে দাঁড়াল। দৃষ্টিতে বহ্নিশিখা দৃশ্যমান। যেন অগ্নি স্ফুলিঙ্গ ঝরছে। গার্ডগুলো মাথা নুইয়ে আছে। তন্ময়ীকে দেখে কোনো কথা ছাড়াই সম্মানের সাথে বাসার ভেতরে প্রবেশ করতে দিয়েছে। তখন থেকেই মাথা নিচু করে আছে সকলে। প্রিন্সের আদেশ। না মানলে প্রাণ পাখিটা আকাশের উদ্দেশ্যে উড়াল দিবে। তন্ময়ী ঝাঁঝালো কন্ঠস্বরে প্রশ্ন ছুঁড়ল,

"আমার মিরু কোথায় মিস্টার ডুবইস রৌহিশ রৌনক?"

মিরা নামটা শ্রবণেন্দ্রিয়ে পৌঁছাতেই রায়ানের মাঝে ঈষৎ পরিবর্তন দেখা গেল। স্যারের বিয়ের বিষয়টা নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। যার দরুন আজ আর মেয়েটার খোঁজ নেওয়া হয়ে ওঠেনি। মেয়েটা ঠিক আছে তো? বুকের মধ্যিখানে অস্থিরতা অনুভব করল রায়ান। 

"আমার পকেটে।"

রৌহিশের গুরুগম্ভীর কণ্ঠস্বর। তন্ময়ীর রাগ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এটা কথাটাই যথেষ্ট ছিল। ঠিক আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে উত্তরটা। 

"ওকে কিডন্যাপ করে কোথায় রেখেছেন? আপনাকে ভালোবাসার অপরাধে শাস্তি দিচ্ছেন নিষ্পাপ মেয়েটাকে? এমন কিছু হলে জানে মেরে দিবো একদম।"

"তোমার হাত এখনো ওতোটাও লম্বা হয়নি মিস তন্ময়ী।"

এই পর্যায়ে রাগ সামলাতে অপারগ মেয়েটা। তেড়ে এসে রৌহিশের গাল বরাবর হাত তুলতেই বজ্রমুঠিতে আটকে গেল তা। পরপরই ঘুরে পিঠের পিছনে চলে গেল। হাতটা মুচড়ে পিঠের সাথে চেপে ধরে কান বরাবর অধর এগিয়ে হিসহিসিয়ে উঠল রৌহিশ,

"উঁহু, বেইবি এমন দুঃসাহস করার চেষ্টা ভুলেও দ্বিতীয়বার করো না। তোমার জন্য ভালো হবে না। এখন সোজা হসপিটালে যাবে। আগামীকাল কবুল বলার আগ মুহূর্তে তোমার সামনে উপস্থিত থাকবে ওই মেয়ে। নাও গেট লস্ট। টাইম ইজ টু মিনিটস।"

মুখের কথাতে সমাপ্তি টেনেই ছেড়ে দিল তন্ময়ীকে। তীব্র অপমানে মুখমণ্ডল থমথমে হয়ে উঠল ওর। মুখটা একটু এগিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, 

"আই হেইট ইউ বিচ। এর শেষ আমি দেখে ছাড়ব।"

আর এক সেকেন্ড ও দাঁড়াল না। যেভাবে এসেছিল ঠিক সেভাবেই চলে গেল তন্ময়ী। রায়ানের মুখটা বড্ড ফ্যাকাসে। চোখদুটোর চাহনিতে হিংস্রতা, অসহায়ত্ব মিলেমিশে একাকার হয়েছে। কিছু বিষাক্ত সত্য, সম্পূর্ণ নিজেকে হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণায় বারংবার পিষ্ট হচ্ছে বুকটা। বিষের মতো বিঁধছে গলায়। তিয়াশ মলিন মুখে রায়ানের দিকেই তাকিয়ে আছে। কীই বা বলবে! নীরবে কাঁধ চাপড়ে দিলো। তৎক্ষণাৎ শোনা গেল রৌহিশের শীতল গলার আওয়াজ,

"কাউকে ভালোবাসলে তাকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করতে হয়। যদি রক্ষা করার সামর্থ্য না থাকে তাহলে সেই ভালোবাসা মূল্যহীন রায়ান।"

—————

রাত প্রায় শেষের পথে।‌ অথচ নিশাচর প্রাণী গুলো জেগে জেগে নতুন ছক কষতে ব্যস্ত। জ্যাইন নিজের রুমের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। শরীরে জড়ানো একটা টিশার্ট এবং থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট।ফর্সা শরীরের অর্ধেক উন্মুক্ত। টিশার্টের উপর দিয়ে মাসলস ফুলে ফেঁপে উঠেছে। নিবিড় পরিবেশ। গাছের ফাঁক ফোকড় দিয়ে দূরাকাশের নক্ষত্রের মেলা দৃশ্যমান। সেদিকেই দৃষ্টি নিবিষ্ট ওর। ক্ষণে ক্ষণে শরীর জুড়ে শিহরণ খেলে যাচ্ছে ঝিরিঝিরি ঠান্ডা পবন। পাশে অবশ্য রাইমা হান্টস আছে। দুজনের মাঝেই নীরবতা বিরাজমান। রাইমা হান্টস নিজের সুমিষ্ট কণ্ঠধ্বনি দিয়ে ভেঙে দিলেন সকল নিস্তব্ধতা।

"এই বিয়ে হলে রোজ মানসিকভাবে ভেঙে পড়বে বাবু। আসছে ব্লাডমুন ওর জীবনে সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট। ও সকল ক্ষমতা পেতে চলেছে এই ব্লাডমুনে। কিন্তু এই নিস্তেজ শরীরে ওই যন্ত্রণা সইতে পারবে না আমার মেয়েট।"

"ফার্স্ট ওয়াইফ হতে না পারলে সেকেন্ড ওয়াইফ হবে।"

ওই নীলাভ অম্বরে দৃষ্টি স্থির রেখেই প্রত্যুত্তর করল জ্যাইন। কন্ঠস্বর শীতল বজ্রগম্ভীর। ছেলের কথাতে তব্দা খেয়ে গেলেন রাইমা হান্টস। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন। অবিশ্বাস্য কণ্ঠে বললেন, "বাবু! এইসব কী বলছ তুমি?"

"তুমিও তো বাবার সেকেন্ড ওয়াইফ। কিন্তু ভালো তো ঠিকই বাসো এখন।"

"আমার কথা আলাদা বাবু। তোমার কাছে ভালোবাসা খেলনা মনে হয়?"

"উঁহু, লাভ মিনস রুম ডেইট।"

ছেলের এমন ঠোঁটকাটা জবাব শুনে রাইমা হান্টস কথাটা বলতেও ভুলে গেলেন যেন। বুঝলেন ছেলের মুড ঠিক নেই। সুরসুর করে কেটে পড়লেন। নাহলে পাছে যদি আরও লজ্জায় পড়তে হয়। 
·
·
·
চলবে.....................................................................................

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp